আজ মঙ্গলবার দেশের উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ প্রচীন আমলের গরুর হাট অবস্থিত জয়পুরহাটের পাঁচবিবি প্রাণকেন্দ্রে। সপ্তাহের মঙ্গলবার এ হাটে গরু,মহিষ, ঘোড়া ও ছাগল কেনাবেচা হয়। এসব গবাদি পশু ক্রয়-বিক্রয় করতে দেশের প্রায় প্রতিটি জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা আসে। কোটি কোটি টাকার বেঁচাকেনা হলেও হাটের জায়গা তুলনামুলকভাবে কম এবং প্রায় স্থানে ময়লা-আবর্জনার স্তপ।ব্যসায়ীদের অভিমত সরকার প্রতিবছর এ হাট থেকে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব পায় সুতরাং জায়গা একটু বাড়ালে সবার জন্য ভালো হয়।
গরু ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান নাটোর থেকে পাঁচবিবি হাটে কোরবানির গরু কিনতে এসেছেন। দু’জন লোকও সঙ্গে নিয়ে হাটের মধ্যে ঘুরছেন গরু দেখছেন এবং দাম হাঁকছেন। কয়টা গরু কিনলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২ ট্রাকের ১৬ টা গরু কিনেছি আরো ৮ টা গরু কিনার জন্য দামদর করছি। তিনি বলেন, হাটে অনেক গরু উঠেছে ক্রেতা-বিক্রেতায়ও বেশ কিন্ত পশুর তুলনায় হাটের জায়গা অনেক ছোট।
আফাজ উদ্দিন নামের বৃদ্ধ গরু ব্যবসায়ী বলেন,দেশ স্বাধীনের পর থেকেই আমার বাবা, দাদার সঙ্গে পাঁচবিবি হাটে আসি। আগের তুলনায় হাটে এখন অনেক গরু মহিষ বেঁচাকেনা হলেও হাটের জায়গা কিন্ত বৃদ্ধি হয়নি।
নরসিংদী থেকে একরামুল হক বাবু এসেছেন কোরবানির জন্য গরু কিনতে। তিনি বলেন,সীমান্তের এ হাটে এসেছি ভারতীয় গরু কিনতে কিন্ত হাটে ভারতীয় গরু নেই। দেশীয় খামারের উৎপাদিত ২ ট্রাক গরু কিনলাম তবে হাটের জায়গা আকারে কম। তিনি আরো বলেন, প্রায় ৩০ বছর যাবৎ এই হাটে গরু কিনতে আসছি আজ পর্যন্ত কোন পকেট মার বা ছিনতাইকারীর কবলে পড়িনি।আইন-শৃংখলার অবস্থা ভালো এবং অন্য হাটের চেয়ে গরু প্রতি ছাপায় ৫০ টাকা কম নেয়। হাটের জায়গা বাড়ানোর জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
এদিকে এ উপজেলায় ৬৩ হাজার ৫৮১ টি গবাদিপশু কোরবানীর জন্য প্রস্তুুত করেছে স্থানীয় খামারিরা। উপজেলায় বাণিজ্যিক কোন খামার না থাকলেও ৮টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ১ হাজার ৪৫০টি পারিবারিক খামারে এসব পশু কোরবানীর জন্য প্রস্তুুত করা হয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের হিসাব মতে এবার উপজেলায় কোরবানীর পশুর চাহিদা ৩৩ হাজার হলেও চাহিদার চেয়ে প্রস্তুুত আছে ৪০ হাজার বেশি পশু।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে,কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর মধ্যে ষাঁড় ৫ হাজার ৮২৪টি, বলদ ৩ হাজার ৪৩৪টি, গাভি ৪ হাজার ৩৫টি, মহিষ ১০৫টি, ছাগল ৪০ হাজার ২৬৩টি, ভেড়া ৯ হাজার ৯২০টি সহ মোট ৬৩ হাজার ৫৮১ টি গবাদিপশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। উপজেলায় পশুর চাহিদা ৩৩ হাজার হলেও, ৪০হাজার ৫৮১টি পশু বেশি রয়েছে। যা উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় কোরবানির পশুর চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখবে।
অপরদিকে এসব পশু বিক্রয়ের জন্য ২৭টি অনলাইন মাধ্যম ও পশুরহাট পাঁচবিবি জয়পুরহাট নামে একটি সরকারী ওয়েবসাইট রয়েছে। যেখানে মূল্যসহ প্রতিদিন এসব পশুর ছবিসহ বিবরণ ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে আপলোড করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী পশুর হাট পাঁচবিবি গো-হাটায় কোরবানীর পশু কেনা-বেচা শুরু হয়েছে।
এদিকে গো-খাদ্যের দাম অস্বাভাবিক ভাবে কেজি প্রতি ২০/৩০ টাকা বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন উপজেলার খামারি ও কৃষকরা। বেশি দামে খাদ্য খাওয়ায়ে বাজারে পশুর ভালো দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
পাঁচবিবি থানার অফিসার ইনচার্জ পলাশ চন্দ্র দেব বলেন,ব্যবসায়ীদের সার্বিক নিরাপত্তার পাশাপাশি অনেক পরিবারের আয়ের উৎস এজন্য ঝামেলা এড়াতে পুলিশ সর্তকতাবস্থায় থাকে। বিশেষ করে পকেটমার,মলমপার্টি,ছিনতাইকারী দ্বারা ব্যবসায়ীদের টাকা খোয়া না যায় পুলিশ এবিষয়ে আরো বেশী সজাগ থাকে।