ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের গোহাইলবাড়ী গ্রামের জোড়া খুনের ঘটনার রেশ এখনো কাটেনি। আসামী পক্ষ আত্মগোপনে থাকার সুযোগে এখনো তাদের ঘর-বাড়িতে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও চুরির ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। মামলায় বা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয় এমন অনেক নিরীহ মানুষও হামলা-লুটপাটের শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) দুপুরে স্থানীয় সাতৈর বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বিপুল সংখ্যক এলাকাবাসী।
ঘোষপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামীলীগের কোষাধ্যক্ষ মো. ফারুক হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে ঘোষপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ রাজা, মো. সিদ্দিকুর রহমান, এজাজুল করিম মিন্টু, মো. ওয়াজেদ আলী, মোস্তাফিজুর রহমানসহ ক্ষতিগ্রস্থ আরো অনেকে বক্তব্য রাখেন।
মানববন্ধনে সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন বলেন, ঘটনার দিন অর্থাৎ গত ৩ মে ঈদের দিন আমি আমার এলাকা মাকরাইলে ঈদের নামাজ পড়ছিলাম। পরক্ষণেই শুনতে পাই ঈদের নামাজ পড়া নিয়ে গোহাইলবাড়ীতে দুই পক্ষের মারামারিতে দুইজন খুন হয়েছেন। এ হত্যাকান্ডে মুষ্টিমেয় কিছু ব্যক্তি অংশ নিলেও পরবর্তীতে আমাকে কোপের ও প্রধান আসামি করে ৮১ জনের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। ভাংচুর, লুটপাট অগ্নি সংযোগ করা হয়েছে গোহাইলবাড়ী সহ আশপাশের চার গ্রামের প্রায় এক/দেড় শতাধিক বসত বাড়িতে। যা এখনো অব্যাহত আছে।
হত্যাকান্ড ও পরবর্তী ভাংচুর লুটপাটে জড়িত প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার ও নিরাপরাধ ব্যাক্তিদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবী জানিয়ে ফারুক হোসেন আরো বলেন, যারা হত্যার শিকার হয়েছেন তাদের আপনজনদের এড়িয়ে মামলার বাদী হয়েছেন মোস্তফা জামান সিদ্দিকী নামে এক রাজনৈতিক নেতা। তিনি এই ঘটনাটিকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করছেন। হত্যায় জড়িত নন তবে বাদীর রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিপক্ষ এমন অনেক মানুষকে মামলার আসামি এবং মামলার বাইরের আরো অসংখ্য মানুষের ঘরবাড়ি লুট করা হয়েছে। আসামি বানানোর ভয় দেখিয়ে করা হয়েছে অর্থ বাণিজ্য। হামলা, লুটপাট এখনো চলছে। ঘটনার পর যে সব নিরাপদ ব্যক্তিরা প্রাণভয়ে এলাকা ছেড়েছিলেন তাদের ঘর-বাড়ি লুট করা হলেও এখন আবার নতুন করে বাদীপক্ষকে ম্যানেজ না করে এলাকায় ঢুকতে পারছেন না। বাদীর কথা না মানলেই চলছে হামলা, মারধর। আইনকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দিয়ে এমন অরাজক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনের প্রতি জোরদাবী জানান ফারুক হোসেন।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর ইনডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনে দেখলাম সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিনের সাক্ষাৎকার। তিনি বলেন, ৩০ থেকে ৩৫ জনের একদল লোক এহেন জঘন্য অপরাধ ঘটিয়েছে। কিন্তু এজাহারে ৮১ জনের নামের তালিকা দিয়ে এলাকায় অশান্তি বাড়ানো হয়েছে। এতে নিরাপরাধ লোক, শান্তিপ্রিয় লোক হয়রানীর শিকার হচ্ছে। সাধারণ মানুষ হয়েও আসামি বাণিজ্য করছেন কেউ কেউ। এতে করে ক্ষোভ তীব্রতর হচ্ছে অতিষ্ঠ এলাকাবাসীর মনে।