টাঙ্গাইলের মধুপুরের দোখলা-শিরিস্টাল-গোলাকার ও দরিপাড়ার রাস্তাটির বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে। এতে যানবাহন সহ সাধারণ যাত্রীদের চলাচলের বিঘ্ন ঘটেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভ্যান রিক্সা তো দূরের কথা পায়ে হেঁটে চলায় দূস্কর হয়ে পড়েছে মধুপুর-দোখলা-শিরিস্টাল-গোলাকার ও দরিপাড়ার কাঁচা রাস্তাটি। বিশালাকারের খানাখন্দ আর পিচ্ছিল লাল মাটি রাস্তাটিকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। ফলে আড়াই কিলোমিটারের দুর্ভোগ এড়াতে বাধ্য হয়ে ৯ কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করছে মানুষ। রাস্তাটি খারাপ থাকায় বর্ষার দিনে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী সহ সকল জনসাধারণের চলাচলের জন্য বর্তমানে রাস্তাটি মরণ ফাঁদে পরিনত হয়েছে। প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। রাস্তাটি দ্রুুত পাকাকরণের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবসী।
জানাযায়, মধুপুরের অরণ্য বেষ্টিত ইউনিয়নগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো গোলাকার ইউনিয়ন। বৃহদাকারের ইউনিয়নটি বিভাজন করে ছয় বছর আগে সরকার ফুলবাগচালা নামে আরেকটি ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করে। এই দুটি ইউনিয়নের সঙ্গে মধুপুর উপজেলা শহর ও ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-জামালপুর মহাসড়কের সংযোগ সড়কটি হলো মধুপুর-দোখলা-হাগুড়াকুড়ী-শিরিস্টাল-গোলাকার ও দরিপাড়া রাস্তা। শুধু তাই নয়, এ রাস্তা ধরেই দরিপাড়া হয়ে জামালপুর জেলা শহরে সরাসরি প্রবেশের একমাত্র রাস্তা এটি। দুটি ইউনিয়ন ও তার আশপাশের অঞ্চলের মানুষের উৎপাদিত কৃষিপণ্যসহ অন্যান্য মালামাল আনা-নেওয়া করতে হয় এ রাস্তা ব্যবহার করেই।
জনগুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তাটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর পাকা করণ কার্যক্রম শুরু করেছে। এখনো আড়াই কিলোমিটার রাস্তার নির্মাণকাজ বাকী রয়েছে। সেই অংশটি বর্ষা মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের এ অঞ্চলটি পাহাড়ী হলেও ফল-ফসলে সমৃদ্ধ। কৃষকের উৎপাদিত ধান, কলা, আনারসসহ বিভিন্ন ফসল বাজারে নেওয়া এবং চলাচলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তাটি পাকা করা অত্যন্ত জরুরী। মধুপুর-গোলাকার সড়কের মাঝির মোড়ের পাকা সড়কের শেষাংশ থেকে ইছামতি পর্যন্ত পাকা হলে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ দূর হবে।’
শিরস্টাল গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন ও মজিবর রহমান বলেন, ‘আমাদের ভোগান্তি বহুদিনের। এ ভোগান্তি দূর করার জন্য শোলাকুড়ী ও ফুলবাগচালা ইউপির চেয়ারম্যানেরা উদ্যোগ নিয়েছেন বলে চানা গেছে। তবে এখনো কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান হয়নি।
কৃষক নূরুল ইসলাম জানান, শুকনা মৌসুমে মাঝিরমোড় থেকে ইছামতি পর্যন্ত রাস্তায় কষ্ট নিয়ে চলাচল করা গেলেও বর্ষায় আর সম্ভব হয় না। দুর্ভোগ এড়াতে ৯ কিলোমিটার ঘুরে পণ্য পরিবহন করতে হয়।
পথচারী আজাহার আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় সরকার বিভাগ, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়সহ বিভিন্ন কল্যাণমুখী প্রতিষ্ঠান থাকার পরও রাস্তার এমন অবস্থা সত্যিই দুঃখজনক। সড়কটির দ্রুুত উন্নয়ন হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সুনাম বাড়বে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর মধুপুর উপজেলা প্রকৌশলী জয়নাল আবেদীন সাগর জানান, ফুলবাগচালা ও গোলাকার ইউনিয়নের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে মধুপুর-গোলাকার সড়কের শেষাংশ পাকা করণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই টেন্ডার আরবান করে ঠিকাদার নির্বাচন করা হয়েছে। শিগগিরই নির্মাণকাজ শুরু করা হবে।