জেলার পূর্বধলায় পাকা রাস্তার পিচ আর ইট, বালু উঠেছে কয়েক বছর আগেই। প্রায় দশ বছর ধরে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী। রাস্তার মাঝে মাঝেই খানাখন্দ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন পথচারীরা। ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা থাকলেও কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি।
অবশেষে নিজ উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমে সড়কটি মেরামত করছেন উজ্জ্বল বাবুর্চি নামের এক ভ্যানচালক। তিনি পূর্বধলা উপজেলার আগিয়া ইউনিয়নের পূর্ব বুধী গ্রামের বাসিন্দা।
৭ জুন সকাল থেকে তিনি একাই ভ্যান নিয়ে রাস্তা মেরামত কাজ শুরু করেন। শুক্রবার (১০ জুন) সকাল সাড়ে দশটার দিকে পূর্বধলা স্টেশন রোডের মধ্যে বড় বড় গর্তগুলো ইট দিয়ে ভরাট করতে দেখা যায় তাকে। ভাঙাচোরা এ রাস্তা নিয়ে এলাকার দুর্দশার সীমা নেই। ভাঙ্গা রাস্তার বড় বড় গর্তগুলো ভরাট করতে উপজেলা পরিষদ এবং অন্যান্য স্থান থেকে পরিত্যাক্ত সরকারি ইট ভ্যানে করে এনে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে রাস্তাটিতে চলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা করছেন ওই ভ্যানচালক।
ভ্যানচালক উজ্জ্বল বাবুর্চি বলেন, পূর্বধলা উপজেলার মানুষের একমাত্র রাস্তা এটি। এর একদিকে পূর্বধলা বাজার অন্যদিকে হাসপাতাল ও উপজেলা পরিষদ এবং স্টেশন বাজার অবস্থিত। রাস্তাটিতে বড় বড় গর্তগুলোর জন্য রিকশা, ভ্যান, অটোরিকশাসহ অন্যান্য গাড়ি চলাচলে অসুবিধা হয়। তারপর আবার কয়েক জায়গায় ভাঙাচোরা ও গর্ত হয়ে চলাচলের অনুপযোগী প্রায়।
তিনি বলেন, কিছুদিন আগে রাস্তায় কাজ করলেও অল্পসময়েই রাস্তা ভেঙে যায়। বিভিন্ন এলাকার যোগাযোগ এ সড়কের সঙ্গে। ভাঙাচোরা এ রাস্তা নিয়ে আমাদের দুর্দশার সীমা ছিল না। বড় বড় গর্তগুলো মেরামতের চেষ্টার মধ্য দিয়ে আপাতত যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি।
বেতনের কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, মানুষের কষ্টের কথা চিন্তা করেই মূলত এ কাজটি করা, এতে মানুষের কাছে দোয়া কামনা করেন তিনি।
এ সময় পথচারী শফিকুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন আগে ভাঙা রাস্তায় ইট-বালু দিয়ে রোলার করা হয়। চলাচলের উপযোগী করা হয়। কিন্তু ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানি আটকে অল্প সময়ের মধ্যেই পিচ উঠে রাস্তা নষ্ট হয়ে যায়। সরকারি দপ্তর কবে মেরামত করবে সে আশায় বসে থাকলে এলাকার মানুষের কষ্ট কমবে না। কিন্তু রাস্তাগুলো মেরামত করা খুবই জরুরি।
রাস্তা মেরামত দেখতে আসা মো. এমদাদুল ইসলাম বলেন, এ শুভ উদ্যোগ এলাকার মানুষের কষ্ট কমানোর পাশাপাশি অন্য মানুষদেরও ভালো কাজে উদ্বুদ্ধ করবে। জনপ্রতিনিধিদের তার কাছ থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।
রাস্তা মেরামতের বিষয়টি সাধুবাদ জানিয়ে এলজিইডি পূর্বধলা উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাদিকুল জাহান রিদান বলেন, স্বেচ্ছাশ্রমের বিষয়টা আমার জানা ছিল না, এলজিইডির রাস্তাগুলো বড় ধরনের ভাঙাচোরা ছাড়া মেরামত করা যায় না। পূর্বধলা সদরের সড়কগুলির যে বেহালদশা সে ব্যাপারে অবগত আছি। রাস্তাগুলোর প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে, আগামী অর্থবছরে পাস হলে টেন্ডার হবে এবং কাজ শুরু হবে। সেক্ষেত্রে মেরামতের কাজ সমাপ্ত হলে জনদুর্ভোগ কেটে যাবে। স্থানীয় মানুষদের এভাবে এগিয়ে আসা খুব জরুরি।