সিলেটের ওসমানীনগর থানার রাউতখাই গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী ও ম্যানচেস্টার যুবলীগের সহ-সভাপতি কামাল আহমেদের সম্পত্তি দখলের পাঁয়তারার অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী। শনিবার সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মো. কামাল আহমদ লিখিত বক্তব্যে দাবি করেন, আমি একজন যুক্তরাজ্য প্রবাসী ও ম্যানচেস্টার যুবলীগের সহ-সভাপতি। একটি ভূমিখেকো ও চাঁদাবাজচক্র উত্তরাধিকারী সূত্রে প্রাপ্ত আমার ভূমি জোরপূর্বক দখল করতে উঠেপড়ে লেগেছে। ওই চক্র একাধিকার আমার ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। মাননীয় আদালতের স্থিতাবস্থা থাকার পরও তারা আমার ভূমিতে অনধিকার প্রবেশ করে বাসাবাড়ির আসবাবপত্র ভাংচুর করে ব্যাপক ক্ষতিসাধণ করেছে এবং আমার ভাড়াটিয়াদের ওপর হামলা ও তাদেরকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে।
মো. কামাল আহমেদ আরো বলেন, ওসমানীনগর থানার মোল্লারপাড়া মৌজায় আমার পিতা মরহুম হাজী আব্দুল বারী ২০০২ সালে ১৫ শতক ভূমি ক্রয় করেন। আমার পিতার মৃত্যর পর উক্ত ভূমিতে বাউন্ডারীসহ আমি একটি ভবন নির্মাণ করি। এই ভবন নির্মাণের শুরু থেকে বালাগঞ্জ থানার মজলিসপুর গ্রামের মো. সাজিদ আলীর পুত্র আব্দুল খালিক বিভিন্ন সময়ে মোবাইল ফোনে এবং ভবন নির্মাণস্থলে এসে আমার কেয়ারটেকার শাহীন মিয়ার নিকট মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করতো। সে হুমকি দিত, তাকে চাঁদা না দিলে এই ভূমিতে ভবন নির্মাণ করতে দেবে না এবং এই জায়গাটি নাকি তার। বিষয়টি আমি জানার পর দেশে এসে আদালতে মামলা দায়ের করি। আমার এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মাননীয় আদালত ২০২১ সালের ২৬ আগস্ট স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ প্রদান করেন।
কিন্তু তারা আদালতের আদেশ অমান্য করে গত ২৭ মে আব্দুল খালিকের নির্দেশে ওসমানীনগর থানার দশহাল গ্রামের মৃত আব্দুল গনির পুত্র মোস্তাক আহমদ ও তার স্ত্রী রুবি আক্তার, বালাগঞ্জ থানার রাজাপুর গ্রামের মো. গোফরান আহমদ জায়গীরদার ওরফে মাসুম ও একই থানার হুশিয়ারপুর গ্রামের মৃত আব্বাস উল্লাহর পুত্র সুন্দর আলী দেশীয় অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমার ভূমিতে অনুপ্রবেশ করে ভাড়াটিয়াদের জোরপূর্বক বাসা থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা চালায়। এ সময় ভাড়াটিয়ারা উক্ত ভূমিতে আদালতের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ রয়েছে জানালে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ভাড়াটিয়াদের হুমকি-ধমকি, গালিগালাজ ও মারধর করতে থাকে। খবর পেয়ে ওসমানীনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আব্দুল খালিক গংদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আমার ভাড়াটিয়া একজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় এবং তার ওপর অমানসিক নির্যাতন করে। পরে সাজানো একটি অস্ত্র মামলা দিয়ে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে আদালতে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করি। ওই সন্ত্রাসী ঘটনার মোড় ঘুরাতে ভূমিখেকো চক্র আমিসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ এনে ওসমানীনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
এর আগে ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর আব্দুল খালিক ও তার সহযোগীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমার জায়গায় প্রবেশ করে আমাকে হুমকি দিয়ে বলে এখানে ভবন নির্মাণ করতে গেলে তাদেরকে চাঁদা দিতে হবে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমার জায়গার ওপর স্থাপিত সাইনবোর্ড ভেঙ্গে ফেলে এবং অস্ত্রের মুখে আমার সাথে থাকা নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে আদালতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি। এরপরও সন্ত্রাসীরা আমার জমি দখল করতে এবং আমাকে হত্যা করতে প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা থেকে বাঁচতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন ভুক্তভোগী কামাল আহমেদের পরিবার।