বরিশালে পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলায় ১৩ বছর বয়সী কন্যাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে তার গর্ভধারিণী মা এবং পরকীয়া প্রেমিক। পরে আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হয়। নিহতের নাম তন্নি আক্তার (১৩)। এ ঘটনায় ঘাতক মাকে গ্রেপ্তার করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। তবে ঘাতক প্রেমিক কবির খান পলাতক রয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের ছোট রাজাপুর গ্রামে। গ্রেপ্তারকৃত লিপি আক্তার (৩০) বরিশালের কাউনিয়া থানাধীন সায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের ছোট রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. সোহরাব হাওলাদারের স্ত্রী।
শনিবার বেলা ১২টার দিকে কাউনিয়া থানায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) উত্তর জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ জাকির হোসেন মজুমদার এই তথ্য জানান।
তিনি জানান, কাউনিয়া থানাধীন সায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের ছোট রাজাপুর গ্রামের সোহরাব হাওলাদারের স্ত্রী লিপি আক্তারের সাথে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়ায় একই ইউনিয়নের রামকাঠি গ্রামের নুরু খানের ছেলে কবির খান। ঘটনার দিন অর্থাৎ গত (২৭ মে) দুপুরে লিপি আক্তার নিজ ঘরে তার পরকীয়া প্রেমিক কবির খানের সাথে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। যা দেখে ফেলে তার মেয়ে তন্নি আক্তার (১৩)।
এসময় তন্নি এ ঘটনা তার বাবাকে বলে দেওয়ার কথা বলে। এজন্য পাষণ্ড মা লিপি আক্তার ও তার পরকীয়া প্রেমিক কবির খান মিলে তন্নিকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিত করে তন্নিকে গলায় দড়ি দিয়ে ঘরে ঝুলিয়ে রাখে এবং সে আত্মহত্যা করেছে বলে এলাকাবাসীর কাছে প্রচার করে মা লিপি।
এ ঘটনায় গত ২৭ মে কাউনিয়া থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলার সূত্র ধরে তদন্তে নামে কাউনিয়া থানা পুলিশ। তদন্ত করতে গিয়ে মূল রহস্য উদঘাটন করেন কাউনিয়া থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) ছগির হোসেন। এরপর শনিবার সকালে গ্রেপ্তার করা হয় ঘাতক মা লিপি আক্তারকে।
বিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ জাকির হোসেন মজুমদার বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন নিহত তন্নির বাবা সোহরাব হাওলাদার। মামলা নং ৩। আটক মাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। সে মেয়েকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে।
তিনি বলেন, হত্যার কাজে ব্যবহৃত সকল আলামত জব্দ করা হয়েছে। তবে প্রেমিক কবির খান ঘটনার দিন থেকেই আত্মগোপনে রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। খুব শিগগিরই আসামি গ্রেপ্তার হবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
প্রেস ব্রিফিংকালে কাউনিয়া জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার রবিউল ইসলাম শামীম, কাউনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রহমান মুকুল, তদন্ত অফিসার মো. ছগির হোসেন সহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।