বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাবে ইন্দুরকানীতে ডায়রীয়ার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। হাসপাতালে থাকলেও নাই চিকিৎসার সুবিধা। কয়েকদিন ধরে উপজেলা ব্যাপি শিশু সহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ ডায়রীয়ার আক্রান্ত হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার থাকলেও আবাসিক চালু না থাকায় এখানে রোগীদের ভর্তি করা হচ্ছে না। তাই ডায়রীয়া আক্রান্ত রোগীদের পিরোজপুর জেলা হাসপাতাল ও খুলনা কলেরা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার উপজেলার দক্ষিণ ইন্দুরকানী গ্রামের বাসিন্দা ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি ছিদ্দিকুর রহমান ড্য়ারীয়ায় আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে ইন্দুরকানী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে তাকে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এর আগে ডায়রীয়ায় আক্রান্ত রোগী ইন্দুরকানী গ্রামের মহিদুল হাওলাদারের স্ত্রী নাছিমা বেগম, বাদশাহ গাজীর মেয়ে মরিয়ম বেগম উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসার সুবিধা না পেয়ে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে রোগী সুস্থ না হলে তাদের কে খুলনা কলেরা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এভাবে প্রতিদিন ডায়রীয়া আক্রান্ত রোগীদের উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে জেলা ও বিভাগীয় শহরে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এমনকি এক মাস আগে ইন্দুরকানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফুন্নেসা খানমের শিশু পুত্র অসুস্থ হলে উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা না হওয়ায় তাকে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে পরে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পর সুস্থ হন।
চিকিৎসকরা বলেছেন বিশুদ্ধ খাবার পানি পান না করা ও থালা বাসন বিশুদ্ধ পানি দিয়ে পরিস্কার না করায় দিন দিন এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ উপজেলার উপজেলা সদর সহ ৫ টি ইউনিয়নের ৪ টি ইউনিয়নে গভীর নলকুপ সেট হয় না। নাই পিএস এফের ব্যবস্থা। তাই সকল হাটবাজার হোটেল ও চায়ের দোকানে পুকুর, নদী ও খালের পানি পান করানো হচ্ছে। তেমনি এলাকাবাসী ও বাধ্য হয়ে ফিটকারী দিয়ে এ পানি পান করছে। ইন্দুরকানী উপজেলা পরিষদের সামনের খালের সাথে বিভিন্ন বহুতল ভবনের লেট্রিনের সেফটি টেংকি ও ময়লার পানির জন্য কোন টেংকি না করে সরাসরি খালের সাথে পাইপ দিয়ে দিয়েছে। ওই পানিই সবাই দৈনন্দিন কাজ ও খাবার পানি হিসাবে ব্যবহার করে। যার ফলে এ এলাকায় ডায়রীয়া সহ পানি বাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে।
ডারীয়ার আক্রান্ত গৃহবধু নাছিমার স্বামী মহিদুল হাওলাদার জানান, এই উপজেলা হাসপাতালে কোন চিকিৎসা না পেয়ে আমার স্ত্রীকে নিয়ে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে খুলনা কলেরা হাসপাতালে নিয়ে চিকৎসা দেয়া হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ননী গোপাল বলেন, বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকটের কারণে ডায়রীয়া সহ নানা পানিবাহিত রোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক ভাবে ভর্তির ব্যবস্থা না থাকায় রোগীদের ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগ হচ্ছে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফুন্নেসা খানম জানান, বিশুদ্ধ খাবার পানির সমস্যার কারণে ডায়রীয়া সহ পানিবাহিত রোগে এ এলাকার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। তবে বিশুদ্ধ পানি সরবারহের জন্য দুটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। অপরদিকে হাসপাতালের ইনডোর চালু না হওয়ায় কেন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে পারছে না। ইনডোর চালুর জন্য চেষ্টা চলছে।