ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪ |

EN

ফুলবাড়ীতে গো-খাদ্যের মুল্য বৃদ্ধি,বিপাকে খামারিরা

মেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী, দিনাজপুর | আপডেট: শুক্রবার, মে ২০, ২০২২

ফুলবাড়ীতে গো-খাদ্যের মুল্য বৃদ্ধি,বিপাকে খামারিরা
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে গো-খাদ্যের দাম। দাম বেশি হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন খামারিরা। 

এদিকে গো-খাদ্যের মুল্যবৃদ্ধির কারণে দুধ উৎপাদন ও পশু মোটাতাজা করণে ব্যায় বেড়েছে কৃষক ও খামারিদের। এতে গবাদি পশুপালনে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। 

আসন্ন কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে খামারীরা অনেকেই গরু মোটা তাজাকরন করে থাকেন,ঈদের হাটে বিক্রয়ের জন্য। এভাবে গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পেলে মোটাতাজা করন  প্রক্রিয়াজাত করনে খরচ বাড়বে। এতে করে কোরবানীর গরু’র মুল্য বৃদ্ধি পাবে বলে মন্তব্য করছেন এলাকার সচেতন মহল।

সরেজমিনে ফুলবাড়ী বাজার ঘুরে জানা গেছে,গত এক সপ্তাহের ব্যাবধানে গো-খাদ্যের মুল্য কেজিতে বেড়েছে ৫-১০টাকা। প্রকার ভেদে কোনো কোনো খাদ্য পণ্যের মুল্য বেড়েছে পুর্বের দামের চেয়ে দি¦গুন।

বিশেষ করে গমের ভুষি গত সপ্তাহ আগে ছিল ৪০-৪২টাকা যা এখন বেড়ে হয়েছে ৬০টাকা কেজি। গমের আটা প্রতি কেজি ৩৫ থেকে বেড়ে ৪৮টাকা, ভুট্টার আটা প্রতি কেজি ৩২ টাকা থেকে ৩৭টাকা, সরিষার খৈল (এলসি) ৪২ থেকে ৪৫টাকা, সয়াবিন খৈল ৪৮থেকে ৮০টাকা, মশুর ভুসি ৩৪ থেকে ৪২টাকা, মটর ভুসি ৪৫ থেকে ৫৫টাকা, আতপ ব্রাণ ২৫ থেকে ৫০টাকা, ফ্রেস ক্যাটল ফিড ৩২ থেকে ৪০টাকা, ডেইরী ফিড ৪২ থেকে ৪৪টাকা,ধানের কুড়া (৫০কেজি) ৬৫০ থেকে ৭৫০টাকা, খড় ১পণ (৮০টি আঁটি) ৩৫০টাকা থেকে বেড়ে ৪৮০টাকা হয়েছে। 

উপজেলার শিবনগর ইউপির বড়বন্দর এলাকার খামারি মোস্তাক আহমেদ জানান,এক সপ্তাহের ব্যবধানে গো-খাদ্যের অস্বাভাবিক দাম বাড়লেও দুধের দাম অপরিবর্তিতই রয়েছে। গোয়ালারা ৪০ টাকা কেজি কিনে খুচরা ৪৫-৫০টাকা হিসেবেই বিক্রি করছে। ফলে খরচের তুলনায় দুধ বিক্রি হচ্ছে অনেক কম টাকায়। এতে পোষাতে পারছেন না খামারী ও গৃহস্থরা।

দক্ষিণ বাসুদেবপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, চাউলের দাম ৪৫টাকা হলেও গমের ভুসি ৬০টাকা কেজি। বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানো হচ্ছে কিনা বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার। 

পৌর শহরের কাঁটাবাড়ী গ্রামের খামারী ছুটুয়া জানান,তার ৮টি গরু রয়েছে,গো খাদ্যের মুল্য যেভাবে বাড়ছে,তাতে করে গরু পালন করে পোষানো যাচ্ছেনা। 

ফুলবাড়ী বাজারের আজাদ ট্রেডার্সের সত্বাধিকাী আজাদ সাগর ও ফিড ব্যবসায়ী মোক্তার হোসেন বলেন, এক সপ্তাহ আগেও কম দামে কিনে কম দামে বিক্রি করেছি। এখন ক্রয় মুল্য বেশি তাই গো-খাদ্য বিক্রয় করতে হচ্ছে বেশি মূল্যে। 

ফিড ব্যবসায়ী মোক্তার হোসেন বলেন,যেসব খাদ্য পণ্য দিয়ে গোখাদ্যের ফিড তৈরী হয়,সেগুলো আমদানী না থাকার কারনে বেশি দামে ক্রয় করে কোম্পানি গুলোকে এই গো-খাদ্য ফিড তৈরী করতে হচ্ছে। সে কারনে ফিডের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

ব্যবসায়ী আমজাদ আলী বলেন, বড় বড় ডিলাররা এলসি বন্ধের অযুহাতে সব কিছুর দাম বাড়িয়েছেন। ফলে স্থানীয় ভাবে যেসব খাদ্য উৎপাদন হয় সেগুলোরও দাম বাড়ছে বলে দাবী করেন তিনি।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, গো-খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় বিকল্প হিসেবে আমরা খামারিদের ঘাস চাষের পরামর্শ দিচ্ছি। ঘাষ চাষ প্রকল্পের আওতায় আমাদের একজন মাঠকর্মী খামারিদের ঘাস চাষে উদ্বুদ্ধ করণে কাজ করছেন। এই প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি ইউনিয়নে দুটি করে প্রদর্শনী প্লট করা হবে। প্রতিটি ইউনিয়নে দুইজনকে বীজ ও চারজনকে ঘাস সংরক্ষণের প্রযুক্তি সরকারি খরচে বানিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়াও খামারীদের সার্বক্ষনিক উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিস থেকে সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হয়।