পাবনার ঈশ্বরদীর আলোচিত টিটিই শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওঠা ‘অসদাচরণের’ অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। ওই রাতে শফিকুল রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে ভ্রমণকারীদের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করলেও খারাপ আচারণ করেননি। তবে টিটিই শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে উসকানি দিয়েছে ট্রেনে থাকা অন্য একজন। তিনি রেলওয়েতেই চাকরি করেন।
তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির দেওয়া প্রতিবেদন হাতে পেয়ে এমন তথ্য জানিয়েছেন বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক শাহিদুল ইসলাম। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তার হাতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটির সদস্যরা।
প্রতিবেদন হাতে পেয়ে শাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘তদন্তে টিটিই শফিকুল ইসলাম নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগের কোনো ভিত্তি পাওয়া যায়নি। যেকারণে অভিযোগ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ’
শাহিদুল ইসলাম আরো বলেন, ‘তদন্তে উঠে এসেছে ট্রেনের গার্ড শরিফুল ইসলাম ওই যাত্রীকে দিয়ে টিটিই শফিকুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে উসকানি দিয়েছিলেন। কোনো কারণে ট্রেনের গার্ড শরিফুল টিটিই শফিকুলের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। গার্ড শরিফুলের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করেছেন তদন্ত কমিটি। ’
রেলমন্ত্রীর স্ত্রী বা তার মামাতো বোনের কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল কি না, এ বিষয়ে বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক শাহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি ছিল ট্রেনের মধ্যে যাত্রীর সঙ্গে টিটিই শফিকুলের খারাপ আচরণের অভিযোগ। সেকারণে শুধু সেই বিষয়ে তদন্ত করা হয়েছে। এর বাইরে কোনো বিষয় এর সঙ্গে আনা হয়নি। আর তদন্তে অভিযোগকারী বা অভিযুক্ত ব্যক্তিসহ কারো বক্তব্যে এ বিষয়ে কোনো কথা বা অভিযোগ উঠে আসেনি।
তিনি আরো বলেন, মূল তদন্ত প্রতিবেদন ৭ পৃষ্ঠার। সঙ্গে আরো ৪০ পৃষ্ঠার তথ্য উপাত্ত যুক্ত করা হয়েছে। তদন্তে শফিকুলের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি। অভিযোগকারী ট্রেনযাত্রী ইমরুল কায়েস প্রান্তের তোলা অভিযোগ সঠিক ছিল না। তিনি অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তাকে রেলওয়ে বিভাগীয় কার্যালয়ে এসে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে।
গত ৫ মে রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে বিনা টিকিটের তিনযাত্রীকে জরিমানাসহ ভাড়া আদায় করেন পাবনার ঈশ্বরদীর ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) শফিকুল ইসলাম। পরে রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর ফোনে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন পাকশী বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) নাসির উদ্দিন। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা সৃষ্টি হলে শফিকুলের বরখাস্তাদেশ তুলে নিয়ে তাকে স্বপদে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।