বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা ও উৎসব মুখর পরিবেশে এবং হিংসা বিদ্বেষ বিভেদ পরিহার করে মানুষে মানুষে সৌভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠার দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষনার মধ্যে দিয়ে খাগড়াছড়িতে পালিত হচ্ছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শুভ বৈশাখী পুর্ণিমা (বুদ্ধ পূর্ণিমা)।
শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে খাগড়াছড়ি জেলাসহ ৯ টি উপজেলায় বৌদ্ধ বিহার গুলোতে এ ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করছে চাকমা, মারমা ও বড়–য়া সহ বৌদ্ধ সম্প্রদায়। “বুদ্ধ ধর্ম সংঘ” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে তথাগত ভগবান বুদ্ধের ত্রি-স্মৃতি বিজড়িত শুভ বৈশাখী পূর্ণিমা উপলক্ষে রবিবার সকালে জেলা শহরে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। শত বছরের ঐতিহ্যবাহী য়ংড বৌদ্ধ বিহারে মঙ্গল প্রদীপ জে¦লে শোভাযাত্রাটি উদ্বোধন করেন, ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরনার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স এর চেয়ারম্যান, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা (এমপি)। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে তিন পার্বত্য জেলার সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তি চাকমা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক গোলাম মো. বাতনে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, পৌর মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী, বৌদ্ধ কল্যাণ ট্রাস্ট এর ট্রাস্টি রুপনা চাকমা, ও বৈশাখী পুর্নিমা উদযাপন কমিটির আহবায়ক কল্যাণ মিত্র বড়–য়াসহ ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ ভিক্ষু, দায়ক-দায়িকারা এসময় উপস্থিত ছিলেন। শোভাযাত্রাটি য়ংড বৌদ্ধ বিহার হতে জেলা শহরের চেঙ্গী স্কয়ারস্থ জনবল বৌদ্ধ বিহারে এসে শেষ হয়। পরে বিহার প্রাঙ্গনে ধর্মদেশনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের হাজার হাজার পূণ্যার্থী। পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ, সার্বজনীন বুদ্ধ (বৈশাখী) উদযাপন কমিটি, খাগড়াছড়ি সাসনা রাক্ষিতা ভিক্ষু সংঘ ও বাংলাদেশ বুডিষ্ট কল্যাণ পরিষদের আয়োজনে এ বার সম্মিলিত ভাবে এ শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা (বৈশাখী) পালন করা হয়। এ উপলক্ষে খাগড়াছড়ির প্রতিটি বৌদ্ধ বিহারে উপাসক-উপাসিকা ও পূণ্যার্থীরা বুদ্ধপূজা, পিন্ডদান, পঞ্চশীল প্রার্থনা, সংঘদান, অষ্টপরিস্কার দান, বুদ্ধ মূর্তিদান, ধর্মদেশনা ও অভিষেক অনুষ্ঠানসহ প্রদীপ পূজা করছে। এ ছাড়া বুদ্ধ দেশ ও বিশ্ব শান্তি কামনায় ভগবান বৌদ্ধের কাছে প্রার্থনা করেছে পূণ্যার্থীরা।
উল্লেখ্য, বৌদ্ধ ধর্ম অনুসারে, প্রায় আড়াই হাজার বছর আগের এই দিনে মহামতি গৌতম বুদ্ধের জন্মগ্রহণ করেছিলেন নেপালেরলুম্বিনী কাননে। এ রাতেই তিনি বোধিজ্ঞান লাভ করেছিলেন এছাড়াও গৌতমবুদ্ধ পরিনির্বাণ লাভ করেন।