দেশের একমাত্র উৎপাদনশীল দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিএমসি-এক্সএমসি কনসোর্টিয়ামের অধিনে কর্মরত দেশি শ্রমিকরা দুই দফা দাবীতে মাস ব্যাপী আন্দোলনের পর অবশেষে তাদের আংশিক দাবী মেনে নিয়ে মোট শ্রমিকদের মোট ৮৫০জন শ্রমিকদের মধ্যে থেকে প্রথম পর্যায়ে ২১২ জন শ্রমিককে শনিবার সকালে কাজে যোগদানের জন্য করোনা পরিক্ষা করেন খনি কতৃপক্ষ। এসব শ্রমিক খনির অভ্যান্তরে এক সপ্তাহের কোয়ারেনটাইন থাকার পর কাজে যোগ দিবেন।
খনি শ্রমিকরা জানায়, গতকাল শনিবার সকালে প্রথম দফায় ২১২ জন শ্রমিক করোনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে যেসব শ্রমিকের নেগেটিভ আসবে তারাই শুধু খনির অভ্যান্তরে প্রবেশ করে এক সপ্তাহের কোয়ারেনটাইন থাকার পর কাজে যোগ দিবেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে একইভাবে প্রতি সপ্তাহে ২০০ জন করে মোট ৮৫০ জন শ্রমিককে পর্যায়ক্রমে খনিতে কাজ করার জন্য প্রবেশের অনুমোতি দিবেন।
এর আগে শুক্রবার (১৩ মে) রাতে খনির অভ্যান্তরে খনি কর্তৃপক্ষের সাথে আন্দোলনকারী শ্রমিকদের একটি প্রতিনিধি দলের এক বৈঠক হয়। সেখানে আন্দলনকালী শ্রমিকদের আংশিক দাবী মেনে নিলে শ্রমিকরা আন্দোলন স্থগিত করেন।
কাজে যোগ দেওয়ার বিষয়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান জানান, শুক্রবার রাতে খনি কর্তৃপক্ষের সাথে আমাদের একটি বৈঠক হয় তাতে কর্তৃপক্ষ আমাদের আংশিক দাবী মেনে নিলে আমরা আন্দোলন স্থগিত করি। এরই প্রেক্ষিতে শনিবার সকালে মোট ৮৫০ শ্রমিকদের মধ্য থেকে ২১২ জন শ্রমিককে করোনার পরীক্ষা করা হয়। আজ রোববার তারা খনির অভ্যান্তরে প্রবেশ করে এক সপ্তাহের কোয়ারাইনটাইন শেষে কাজে যোগদান করবেন। তিনি আরও বলেন, পর্যয়ক্রমে একইভাবে প্রতি সপ্তাহে ২০০ জন করে মোট ৬০০ জন শ্রমিককে খনিতে কাজ করার জন্য প্রবেশের অনুমোতি দিবেন। বাকী ২৫০ জন শ্রমিককে পরবর্তীতে যোগদান করবেন।
বিষয়টি নিয়ে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানী লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান খান এর সাথে মুঠো ফোনে জানান, শুক্রবার রাতে শ্রমিকদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে গতকাল শনিবার ১৮৮ জন শ্রমিকের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। ফলাফল পেলে তারা খনির অভ্যান্তরে প্রবেশ করবে এবং ৭ থেকে ১০ দিন কোয়ারেনটাইনে থাকার পর কাজে যোগ দিবেন। একই ভাবে ১০ দিন পর পর ২০০ জন করে মোট ৬০০ জন শ্রমিক কাজে যোগ দিবেন। ৬০০ জন শ্রমিকের কাজের প্রেক্ষিতে চতুর্থ মাসে ১০০ জন শ্রমিক বের হয়ে নতুন করে ১০০ জন প্রবেশ করবেন একইভাবে পর্যায় ক্রমে বাকী শ্রমিকরা কাজে যোগ দিবেন।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে খনির উৎপাদন কাজ বন্ধ রয়েছে নতুন ফেজের উন্নয়ন কাজ চলছে। উল্লেখ্য যে, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের শ্রমিকরা গত ১১ এপ্রিল খনি কর্তৃপক্ষের কাছে একটি স্মারক লিপি প্রদান করেন। ওই দিন ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী মাস ব্যাপী বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন।