১১ মে লক্ষ্মীপুর সদর থানা ও পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এবারের সম্মেলন হবে শহরের উত্তর তেমুহনীর এন. আহম্মদীয়া বিদ্যালয় মাঠে।
সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। তারিখ ঘোষণার পর সদর থানা ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১০ জন সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম আলোচনায় উঠে এসেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০০৩ সালে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে এডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়নকে সভাপতি ও আবুল কাশেম চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৫ সালে এডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর বিজন বিহারি ঘোষ ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনে নেতা-কর্মীদের ঢাকায় নেওয়ার জন্য দুটি কমিটি করা হয়। সেই কমিটিতে সদর উপজেলার দায়িত্ব দেওয়া হয় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়নের মামা মো. হুমায়ুন কবির পাটওয়ারীকে। তখন থেকে তিনি সদর থানা আওয়ামী লীগের আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এ ছাড়া লক্ষ্মীপুর পৌর আওয়ামী লীগেরও সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৩ সালের অক্টোবর মাসে। সম্মেলনে ইসমাইল হোসেন চৌধুরীকে সভাপতি ও মনিরুল করিমকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এই কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল করিম ২০১৮ সালে মারা গেলে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয় জসিম উদ্দিনকে। পরবর্তীতে দলীয় কর্মকান্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণ না করার অভিযোগে জসিম উদ্দিনকে বাদ দিয়ে এডভোকেট জহির উদ্দিন মো. বাবরকে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের এই দুইটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটের দীর্ঘ ১৯ বছর সম্মেলন না হওয়ায় অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছে দলীয় কার্যক্রম। সর্বশেষ জেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় সদর থানা ও পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষনার পর নেতা-কর্মীদের মাঝে প্রাণ চাঞ্চল্যতা ফিরে আসে। সম্মেলনকে ঘিরে প্রার্থীদের প্রচারণায় উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে উপজেলা ও পৌরসভার অলিগলি। পদপ্রত্যাশী প্রবীণ ও নবীন নেতাদের পোস্টার, ব্যানার আর বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে দলীয় কার্যালয়সহ পুরো জেলা। নির্মাণ করা হয়েছে শতাধিক তোরণ।
বুধবার সকাল ১০টায় সদর থানা ও পৌর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম পারুক পিংকু। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য ফরিদুন্নাহার লাইলী, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন এমপি প্রমুখ।
এদিকে ১৯ বছর পর হতে যাওয়া সম্মেলনের কাউন্সিলরদের তালিকা নিয়ে ইতিমধ্যে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে দলের প্রকৃত নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে নিজেদের পছন্দের লোকজনদেরকে দিয়ে সদর ও পৌর আওয়ামী লীগের কাউন্সিলরদের তালিকা তৈরী করা হয়েছে।
পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী বলেন, সম্মেলন সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে বিশাল প্যান্ডেল। উৎসব মুখর পরিবেশে নেতা-কর্মীদের সরব উপস্থিতে সম্মেলন সম্পূর্ণ হবে বলে আশা করছি।