ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলে ছুটতে শুরু করেছে লোকজন। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রায়পুর লক্ষ্মীপুর-ঢাকা, ও রায়পুর লক্ষ্মীপুর - চট্টগ্রাম রুটের যাত্রীবাহী বাসগুলো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে।
স্বাভাবিক সময়ে সাড়ে ৪শ টাকা ভাড়া নিলেও এখন নিচ্ছে ৬শ টাকা করে। ফলে অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের।
গত শনিবার (৭ মে) দুপুরে এবং রাতে লক্ষ্মীপুর ও রায়পুর শহরের পৌর বাস টার্মিনাল, ঝুমুর, জকসিন এবং মান্দারী বাজারের কাউন্টারে থাকা টিকেট বিক্রেতা এবং যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা যায়।
শনিবার (৭ মে) বেসরকারি অনেক অফিস খোলা থাকায় এদিন কাউন্টারগুলোত গাড়ির জন্য অপেক্ষমান যাত্রীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে বাধ্য হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা।
যাত্রীদের অভিযোগ, টিকেট বিক্রেতাদের বেধে দেওয়া অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই তাদের টিকিট কাটতে হচ্ছে।
আর টিকেট বিক্রেতারা জানিয়েছে- বাস মালিকের নির্ধারিত ভাড়ায় তারা টিকেট বিক্রি করছেন। এ ক্ষেত্রে কিছু করণীয় নেই তাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রায়পুর লক্ষ্মীপুর থেকে ঢাকাগামী ইকোনো, ঢাকা এক্সপ্রেস, জননী, জোনাকীসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানির গাড়ি যাতায়াত করে। এগুলোর মধ্যে এসি এবং নন এসি সার্ভিস রয়েছে।
নন এসি বাসের মধ্যে ইকোনো এবং ঢাকা এক্সপ্রেস গাড়ির প্রতি সিটের ভাড়া ছিল সাড়ে ৪শ টাকা। কিন্তু ঈদকে কেন্দ্র করে এখন ভাড়া নিচ্ছে ৬শ টাকা। পাঁচ সিটের জোনাকী এবং জননী গাড়ির ভাড়া ছিল সাড়ে তিনশ টাকা। ঈদ উপলক্ষে নেওয়া হচ্ছে সাড়ে চারশ টাকা। চার সিটের জোনাকী গাড়ি ভাড়া নিচ্ছে পাঁচশ টাকা।
এদিকে বৃহস্পতিবার (৫ মে) রাতে লক্ষ্মীপুরের জকসিন বাজারে থাকা ইকোনো কাউন্টারকে অতিরিক্ত দামে টিকিট বিক্রি করার দায়ে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমিত রায়, সহকারী কমিশনার ভূমি, সদর লক্ষ্মীপুর, রায়পুর সহকারি কমিশনার ভূমি রাসেল ইকবাল । একই সঙ্গে ওই কাউন্টারের মালিক দিদারসহ আশপাশের কাউন্টার মালিকদের সতর্ক করা হয়। তবে পরদিন শুক্রবার সকাল থেকে ওইসব কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতাদের সতর্কতা অগ্রাহ্য করে বেশি দামে টিকিট বিক্রি করতে দেখা গেছে।
এদিন দুপুরে ঢাকাগামী যাত্রী আবদুর রব বলেন, ৬শ টাকা করে ইকোনো গাড়ির সিট ভাড়া করতে হয়েছে তাকে। ১৮শ টাকা দিয়ে তিন সিট ভাড়া করছেন তিনি। ঈদ উপলক্ষে বাস মালিকরা তাদের পকেট কেটে নিচ্ছেন।
শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে ঢাকাগামী জোনাকী পরিবহনের যাত্রী আহছান উল্যা বলেন, ঝুমুর কাউন্টার থেকে ৫শ টাকা করে তাকে টিকেট কাটতে হয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে তাকে কাউন্টারে অপেক্ষা করতে হয়। যাত্রীর তুলনায় গাড়ির সংখ্যা কম থাকায় বেশি দামে টিকিট কেটেও যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়ছেন বলে জানান তিনি।
একই কাউন্টারের মালিক জাকির হোসেন বলেন, কোম্পানির নির্ধারিত দামে তারা টিকিট বিক্রি করছেন। টিকিট প্রতি তাদের ২০ টাকা করে কমিশন দেওয়া হয়।
ঢাকা রুটে চলাচলকারী ঢাকা এক্সপ্রেস পরিবহনের হেড অফিসের দেওয়া মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে তারা ঈদ উপলক্ষে লক্ষ্মীপুর থেকে ৬শ টাকা করে ভাড়া কাটছেন বলে জানান।
অন্যদিকে ইকোনো বাসের মালিকপক্ষের মোবাইলে কল দিলে কেউ রিসিভ করেন নাই।
এ ব্যাপারে গত শনিবার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসেনের ফোনেও কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।