নড়াইলে ছাগল চুরির অভিযোগে দুই শিশুকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার মামলা দায়েরের পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার এড়েন্দা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নির্যাতনের শিকার দুই শিশু হলো- উপজেলার পদ্দবিলা গ্রামের আসাদের ছেলে আজিজুর (১৩) এবং সারুলিয়া গ্রামের বিল্লাল শিকদারের ছেলে জয় শিকদার (১৪)।
জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার এড়েন্দা গ্রামের জহুর শেখের স্ত্রী দোলেনা বেগমের দুইটি ছাগল চুরির চেষ্টা করছিল এমন সন্দেহে আজিজুর ও জয়কে ধাওয়া করে। দুই বন্ধু দ্রুতগতিতে পালানোর সময় ধরে ফেলেন স্থানীয়রা। এ সময় ছাগল চুরির অভিযোগ এনে দুই বন্ধুকে গাছের সঙ্গে বেঁধে এলোপাতাড়ি মারধর করে অভিযুক্ত ওই পরিবারসহ স্থানীয় বেশ কয়েকজন। পরে চুরির অভিযোগ এনে তাদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়। ঘটনার পরদিন বুধবার ওই দুই শিশুর বিরুদ্ধে কোনো লিখিত অভিযোগ না থাকায় অভিভাবকদের জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেয় লোহাগড়া থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নির্যাতনের ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে পড়ে। পরে বিষয়টি নজরে এলে অভিযুক্তদের ধরতে নড়েচড়ে বসে থানা পুলিশ।
এরপর বৃহস্পতিবার নির্যাতনের শিকার শিশু আজিজুরের পিতা বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি ও অজ্ঞাতনামা আরও ৩-৪ জনকে আসামি করে লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ জনকে আটক করেন।
ভুক্তভোগী আজিজুরের বাবা বলেন, মিথ্যা অভিযোগে আমাদের সন্তানদের গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। আমাদের সন্তান যদি অপরাধ করে তাহলে আগে তারা আইনের আশ্রয় নেবেন। তা না নিয়ে নির্যাতনকে ধামাচাপা দিতে উল্টো তাদের পুলিশে দেয়। আমরা অভিযুক্তদের শাস্তি দাবি জানাচ্ছি।
নির্যাতনের শিকার শিশু আজিজুর জানায়, ছাগল চুরি করিনি। এরপরও আমাকে এবং বন্ধু জয়কে গাছের সঙ্গে বেঁধে অনেক পিটিয়েছে।
অপর শিশু জয় বলেন, আমাকে নির্যাতন করে হাতের আঙুল ভেঙে দিয়েছে।
লোহাগড়া থানার ওসি শেখ আবু হেনা মিলন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নির্যাতনের শিকার আজিজুরের বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা দায়েরের পর ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।