কক্সবাজারের মায়ানমার (বার্মা) সীমান্তবর্তী উপজেলা টেকনাফের দ্বীপাঞ্চল শাহপরীরদ্বীপ ইউনিয়নের সেন্টমার্টিন (জিনজিরা) দ্বীপের দক্ষিণপাড়া এলাকার নুরুল ইসলাম প্রকাশ কালু মিয়ার ছেলে মোঃ আলীর (৩৩) সাথে বাধ্য হয়ে পরকীয়ায় জড়িয়ে মনি (ছদ্মনাম) নামের জীবনে নেমে এসেছে সর্বনাশ। অভিযুক্ত মোঃ আলী নিজের স্ত্রী-সন্তান ও সংসার থাকা সত্ত্বেও পার্শ্ববর্তী গ্রামের কোনারপাড়া এলাকার মৃত আবদুল্লাহর কন্যা ও একই এলাকার আবদুল মালেকের স্ত্রী ৩ সন্তানের জননী মনি বেগম (ছন্মনাম) কে অনেকটা জোর-জবরদস্তি ও কৌশলে বাধ্য করে ইচ্ছের বিরুদ্ধে পরকীয়ায় জড়িয়ে একদিকে ছাড়িয়েছে স্বামী ও ৩ সন্তানের সুখের সংসার, অন্য দিকে বিয়ের প্রলোভনে দৈহিক অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে সম্ভ্রম হানির পাশাপাশি স্বর্ণালংকার ও অর্থ-সম্পদ হারিয়ে নিয়ে, অবশেষে সব কিছু অস্বীকার করে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে! ভুক্তভোগী মনি বেগম স্বামী-সন্তান সহ সুখের সংসার, নিজের সম্ভ্রম-ইজ্জত ও সহায়-সম্পদ সর্বস্ব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় আইন-আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে আর ইচ্ছে/অনিচ্ছায় যেভাবেই হোক, পরকীয়ায় জড়ানোর অনুশোচনায় চোখের পানি ফেলছেন।
জানা যায়, ভুক্তভোগী মনি বেগমের সাথে একই এলাকার মৃত আবদুর রকিমের পুত্র আবদুল মালেক'র (৩৫) ২০১০ সালে পারিবারিক ভাবে বিবাহ হয় এবং বিয়ে পরবর্তী উক্ত মনি বেগম ও আবদুল মালেক'র দাম্পত্য জীবন সুখে-শান্তিতে চলছিল তাদের সংসারে ৩ টি সন্তান জন্ম নেয়। কিন্তু এত বছর পরে তাদের জীবনে নেমে আসে পরকীয়ার অভিশাপ। গত কয়েক বছর ধরে স্বামীর অনুপস্থিতিতে মনি বেগম কে নানা ভাবে উত্যক্ত ও অশালীন আচরণ সহ কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল লম্পট মোঃ আলী। মনি বেগম প্রথম প্রথম অভিযুক্ত মোঃ আলীর এহেন আচরণের জোর প্রতিবাদ করার পাশাপাশি স্বামী ও আত্মীয়-স্বজনদের অবগত এমনকি এলাকার গণ্যমান্য লোকজন ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে বহুবার নালিশও করেন, অনেকবার সালিশ-বিচারও হয়েছিল। কিন্তু লম্পট মোঃ আলীর কুপ্রস্তাব ও উত্যক্ত করা যেমন থামেনি, অন্য দিকে স্বামী আবদুল মালেকও বিনা দোষে সন্দেহ করা, অপবাদ দেওয়া, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা শুরু করে এমনকি একাধিকবার মারধর করে পিতার বাড়িতেও তাড়িয়ে দেয়। এমতাবস্থার এক পর্যায়ে গ্রামের সহজ-সরল, নিরীহ গৃহবধূ মনি বেগম সত্যি সত্যি লম্পট মোঃ আলীর সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে এবং ঐ মোঃ আলী তাকে বিয়ে করে স্ত্রী মর্যাদায় ঘরে তুলে সুখের সংসার জীবন-যাপন করার প্রলোভন দিলে ও স্বামী আবদুল মালেকের অত্যাচার-অপবাদে অতিষ্ট হয়ে পড়লে, মোঃ আলীর সাথে সত্যি সত্যি পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। চলতি বছরের জানুয়ারী মাসে মনি বেগম কে নিয়ে মোঃ আলী কক্সবাজার শহরে এসে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে আবাসিক হোটেলে রুম নিয়ে দৈহিক (অনৈতিক) মেলামেশার করতে থাকে এবং এক সময় মোঃ আলীর সহায়তায় মনি বেগম তার স্বামী আবদুল মালেকের সাথে বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটায় এবং তারপর মোঃ আলী 'তাকে বিয়ে করতেছে' এমন বিশ্বাস' জন্মাতে কাজী পরিচয়ে অজ্ঞাত একজনকে নিয়ে এসে কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে কাবিননামা করেছে বলে জানায়। তারপর মনি বেগমের সাথে দৈহিক (অনৈতিক) মেলামেশার সাথে সাথে মনি বেগমের কাছে থাকা নগদ ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ও সাড়ে ৪ ভরি স্বর্ণালংকার সর্বসাকুল্যেই হাতিয়ে নেয়। উভয়ে মাস খানেক হোটেল রুমে অবস্থান করে অবশেষে গত ২৩ মার্চ মনি বেগম কে নিয়ে নিজের ঘরে ফেরার কথা বলে এলাকায় ফিরেই লম্পট ও প্রতারক মোঃ আলী মনি বেগম কে রেখে সটকে পড়ে। তারপর সব কিছু অস্বীকার করে বসে! এছাড়া উক্ত লম্পট ও প্রতারক মোঃ আলী 'মনি বেগমের সাথে কোন কাবিননামা বা বিয়ে করেনি, সব সাঁজানো' বলে নিজেই স্বীকার করে। সব হারিয়ে নিঃস্ব ও নিরুপায় মনি বেগম প্রথমে স্থানীয় সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদে বিচার দিলেও তা অভিযুক্ত মোঃ আলীর অগ্রাহ্যতায় কোন সুরাহা না হওয়ায় আইন-আদালতের দ্বারস্থ হতে এবং ঐ মোঃ আলীর করা (সাঁজানো) কাবিননামা ও কাজীর প্রসঙ্গে সত্যতা যাচাই অথবা আদৌ কাবিননামা হয়ে থাকলে তা সংগ্রহ করার উদ্দেশ্যে বড় ভাই নুরুল ইসলামকে সাথে নিয়ে কক্সবাজারে আসেন, কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন কাজী অফিসে এমনকি আদালত ভবনে নোটারী পাবলিকের কার্যালয় গুলোতেও হন্যে হয়ে খোজাখুজি করেও কিছুই না পেয়ে আরও হতাশ ভুক্তভোগী মনি বেগম আদালতে মামলা করার উদ্যোগ নেন। মনি বেগমের আইনজীবী কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সহঃ পাবলিক প্রসিকিউটর এড. আবুল কাসেম জানান, আমার মক্কেলের সাথে জঘন্যতম তথা সম্ভ্রম ও অর্থ-সম্পদ সর্বস্ব হরণ করার মতো চরম অন্যায় ও কঠিন শাস্তি যোগ্য অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।
ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত উভয়ের স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও একাধিকবার সালিশ-বিচারকারী সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মুজিবুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অভিযুক্ত মোঃ আলী ও ভুক্তভোগী মনি বেগমের বিষয়টি নিয়ে অত্র ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে একাধিকবার সমাধান করার চেষ্টা করা হয়েছিল, তবে তারা তাতে সন্তুষ্ট হতে না পারায় বিষয়টি নিষ্পত্তি করা যায়নি।
এই বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হাফিজুর রহমানের সাথে ফোনালাপে তিনি এ ধরনের কোন অভিযোগ থানায় আসেনি, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানান।
সচেতন মহলের মতে, পরকীয়ার পরিণতি এমনই হয়ে থাকে, এক সাথে কয়েকটি সংসার ও একাধিক জনের জীবন তচনচ হয়ে যায়।
জঘন্যতম ঘটনায় চরম ভাবে প্রতারিত, সম্ভ্রম ও অর্থ-সম্পদ সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব ভুক্তভোগী মনি বেগম কাঁন্না জড়িত কন্ঠে লম্পট ও প্রতারক মোঃ আলীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও নিজের
ক্ষতি পূরণ চেয়ে সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি ও সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।