গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রঘুনাথপুরে বরবটি চাষে বিরাট সাফল্য পেয়েছে কৃষক সুরেশ মালাকার। কয়েক বছর ধরে তিনি মাঁচা পদ্ধতিতে এ সবজি চাষ করছেন। এবার বরবটি চাষে ফলন ও দাম পাচ্ছেন ভালো। এতে একদিকে তার ভাগ্যের পরিবর্তনে হয়েছে। অন্যদিকে তিনি আর্থিকভাবে হয়েছেন স্বাবলম্বী। ক্ষেতে মেেনর আনন্দে স্বামী,স্ত্রী মিলে কাজ করছেন। বাজারে বিক্রির জন্য মুঠো মুঠো ভরে তুলছেন বরবটি। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এ মৌসুমে লাখ টাকার বরবটি বিক্রির আশা তাদের।
জানা গেছে, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলাসহ ৫টি উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় সারা বছরই নানা জাতের সবজি চাষ হয়। অনেক আগে থেকেই রঘুনাথপুরে বরবটি চাষ শুরু হয়। রঘুনাথপুর গ্রামের স্কুলপাড়ার সুরেশ মালাকার ১০ শতক পরিমান জমির ঘেরপাড়ে মাঁচায় করে বরবটি চাষ করেন। এতে খরচের তুলনায় অনেক বেশি লাভ হবে তার। এই চাষ দেখে উপজেলা জুড়ে মাঁচায় বরবটি চাষ ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সুরেশ মালাকার আগামিতে আরো বেশি জমিতে বরবটি চাষ করবেন বলে আমাদের এ প্রতিনিধিকে জানান। এবছর বরবটি চাষে তার খরচ হয়েছে ৮ হাজার টাকা।
এরই মধ্যে বিক্রি করেছেন প্রায় ৫ হাজার ৫০০ টাকার বরবটি। আবহাওয়া ভালো থাকলে প্রায় ১ লক্ষ টাকার বরবটি বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশা করছেন। ওই গ্রামের সবজি চাষী বিশ্বজিৎ বালা, অভি বিশ্বাস, সুব্রত মন্ডল, শান্তি রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, মাঁচায় বরবটি চাষে লাভ বেশি। বর্তমানে বাজারে ৪০/৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বরবটি। রঘুনাথপুর গ্রামের কমপক্ষে ১০০ কৃষক বরবটি চাষ করছেন। ইউনিয়ন উপসহকারি কৃষি অফিসার প্রদীপ হালদার বলেন, এক বিঘা জমিতে বরবটি চাষে খরচ হয় ৮ থেকে সাড়ে ৮ হাজার টাকা। জমিতে টিএসপি, এমওপি, বোরন ও শিকড় বর্ধক হরমোন দিতে হয়। চারা গজানের সঙ্গে সঙ্গে বাঁশের খুঁটি ও সুতা দিয়ে মাচা (বান) তৈরি করতে হয়। গাছে ফুল আসার ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে বরবটি ধরা শুরু হয়। বীজ বপনের ৪০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে বরবটি উঠতে শুরু করে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো: সেকেন্দার শেখ বলেন, রঘুনাথপুরের মাটি সবজি চাষের জন্য খুবই উর্বর। বিশেষ করে আবাহওয়া অনুকুলে থাকলে গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষে এখানকার কৃষকরা লাভবান হবেন। বরবটি একটি লাভজনক চাষ। এই চাষ করে এলাকার অনেকেই এখন স্বাবলম্বী হয়েছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক ড. অরবিন্দু কুমার রায় বলেন, গোপালগঞ্জের সবজি চাষিরা এ বছর বরবটি চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। এ চাষে বৃষ্টি কম হলে ভালো হয়। গাছের গোড়ায় পানি জমে না থাকলে গাছ সতেজ থাকে এবং ফলন ধরে বেশি। জেলায় বরবটি চাষে কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টির জন্য আমরা সব ধরনের পরামর্শ ও ব্যবস্থা গ্রহন করেছি।