রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ভেন্ডাবাড়ি ইউনিয়নের ভেন্ডাবাড়ি গ্রামের সোনামতি খালের ওপর আট লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুর দুই পাশে কোনও সংযোগ সড়ক নেই। চারদিকে ফসলি জমি। ফলে এলাকাবাসীর কোনও কাজেই আসছে না সেতুটি।
জানা গেছে, পীরগঞ্জ উপজেলায় ২০২০-২১ অর্থবছরে ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে চারটি সেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। মাঠ থেকে কৃষকদের ফসল আনার সুবিধার্থে সেতুগুলো নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে সোনামতি খালের ওপর আট লাখ তিন হাজার টাকা ব্যয়ে ওই সেতুটি নির্মাণ করে বিএডিসি।
এলাকাবাসী জানায়, সেতুটির উত্তর দিকে মূল সড়ক থেকে চারদিকে ফসলি জমি। এসব জমির পাশ দিয়ে হেঁটে চলাচলের জন্য একটি ছোট রাস্তা থাকলেও, সেতুর দুই পাশে কোনও রাস্তা করা হয়নি। দক্ষিণ পাশেও ধানক্ষেত। ফলে সেতুর সাথে কোনও সড়কের সংযোগ নেই। নির্মাণের পর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। সড়কহীন এই সেতু এলাকাবাসীর কোনও কাজেই আসছে না।
ভেন্ডাবাড়ি গ্রামের কৃষক নাদের আলী ও আব্দুল জব্বার বলেন, ‘কী কারণে এত টাকা দিয়ে সেতু নির্মাণ করা হয়েছে তা আমরা জানি না। সেতুটির দুই পাশে মাটি ভরাট করে রাস্তা করা হলে চলাচল করা যেতো। সেতু নির্মাণের সময় আমরা বিএডিসি কর্তৃপক্ষকে দুই পাশে মাটি ভরাট করে রাস্তা করার কথা বলেছিলাম। তারা সেটা করেননি। রাস্তা ছাড়া সেতু নির্মাণের কোনও প্রয়োজনই ছিল না।’
এ ব্যাপারে সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সোয়াদ কনস্ট্রাকশনের মালিক বেলাল মিয়া বলেন, বর্ষা মৌসুমের কারণে সেতুর গোড়ায় মাটি দেওয়া হয়নি। বর্ষা শেষ হলে দুই পাশে মাটি দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, চলাচলের জন্য সেতুর দুই পাশে মাটি ভরাট করে রাস্তা নির্মাণে কোনও বরাদ্দ নেই। এই সেতু নির্মাণ করার প্রয়োজনীয়তা ছিল কি-না তা বিএডিসি কর্তৃপক্ষ বলতে পারবেন।
ভেন্ডাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, স্থানীয় কৃষকরা যাতে মাঠ থেকে ফসল কেটে বাড়িতে নিতে পারেন, সেজন্য সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। তবে দুই পাশে মাটি ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ না করায় এটা কোনও আজে আসছে না। রাস্তা নির্মাণ করে সেতুর সাথে সংযোগ করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএডিসির পীরগঞ্জ উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী রুবেল ইসলাম বলেন, কৃষকদের চলাচলের সুবিধার্থে পীরগঞ্জে চলতি অর্থবছরে ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে চারটি সেতু নির্মাণ করেছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের অনুরোধে সোনামতি শাখা খালের ওপর ওই সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ভূ-উপরিস্থ পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন ও সেচ দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে।