ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: সোমবার, আগস্ট ৩০, ২০২১
দিনাজপুরের গোলাবাড়ীর এক আদিবাসী গ্রামে
মানুষের নানা গুজবের কারণে
গ্রামসুদ্ধ মানুষ এখনও টিকা গ্রহণ
করেননি। সারাদেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গণটিকা কার্যক্রম চললেও এ গ্রামের একজনও
তা গ্রহণ করেনি। এ গ্রামে ৩০টির
মত পরিবারে প্রায় ১৪০ জন ক্ষুদ্র
নৃগোষ্টির লোক বাস করেন।
দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার গোলাবাড়ী আদিবাসী গ্রামবাসীর মনে করেন, করোনার
টিকা গ্রহণ করলে নাকি মারা
যায়, পঙ্গু হয়, পায়ে পানি
ধরে এ কারণেই তারা
টিকা গ্রহণ করেননি।
তবে স্বাস্থ্য বিভাগ
বলছে, কিছু গুজব-অপপ্রচারের
কারণে তারা এমন কাজ
করেছেন।
জেলা সিভিল সার্জন
কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, করোনাভাইরাসে
শুরু থেকে গত শনিবার
পর্যন্ত নবাবগঞ্জ উপজেলায় ৩২৯ জন ব্যক্তি
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সুস্থ
হয়েছেন ৩২১জন।
আক্রান্তদের মধ্যে ৬ জনের মৃত্যু
হয়েছে। আবার গত শনিবার
পর্যন্ত নবাবগঞ্জে করোনা টিকা গ্রহণ করতে
৭৩,১৮২ জন নিবন্ধন
করেছেন। এর মধ্যে ২০,৯০৩ জন প্রথম
ডোজ টিকা গ্রহণ করেছেন।
আর ৭,৯৪৩ জন
দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন।
ওই গ্রামের ষাটোর্ধ্ব
সুশিলা মার্ডি বলেন, টিকা নিলে মানুষ
মারা যাবে সেই ভয়ে
আমরা টিকা নেইনি। রমেষ
মার্ডি নামের আরেকজন বলেন, এমনিতেই ব্যথা, টিকা নিলে পা
নাকি ফুলে যাবে,আমরা
গরিব মানুষ পা ফুলে গেলে
সংসারের চালাবো কিভাবে।
সুশিলা মার্ডি কিম্বা রমেষ মার্ডি, দেখে
ওই গ্রামের স্থানীয় আদিবাসী মার্সাল যুব উন্নয়ন স্পোটিং
ক্লাব নামে এক সংগঠন
গ্রামবাসীদেরকে টিকার আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছেন।
এ উপলক্ষে গত শুক্রবার গ্রামবাসীদের
কাছে টিকার গুরুত্ব এবং অপপ্রচারে সাড়া
না দেওয়ার জন্য আলোচনা সভার
আয়োজন করেন।
এতে উপজেলা স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সাদিয়া কাসেম
সেফা উপস্থিত থেকে তাদের টিকা
বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। টিকার সুফল সম্পর্কে বিভিন্নভাবে
তাদের বুঝানোর পর অবশেষে গ্রামের
সকলে টিকা নিতে রাজি
হন। পরে আয়োজক সংগঠনের
পক্ষ থেকে গ্রামের প্রায়
একশ' জনকে ফ্রি টিকার
নিবন্ধন করে দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে গোলাবাড়ি
আদর্শ মার্সাল যুব উন্নয়নে কোষাধ্যক্ষ
আলমগীর মুর্মু বলেন, গ্রামবাসীদের অনেক বুঝানোর চেষ্টা
করি। আমরা চেষ্টা করেছি
গ্রামের মানুষদের একত্র করেছি।
নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. সাদিয়া কাসেম
সেফা বলেন, তারা বিভিন্ন অপপ্রচারের
কারণে টিকা গ্রহণ করেননি।
তাদের কথা শুনে বুঝাতে
সক্ষম হয়েছি, গ্রামবাসীরা টিকা গ্রহণ করবেন
বলে কথাও দিয়েছেন। এরই
অংশ হিসেবে মার্সাল যুব উন্নয়নে সেচ্ছাসেবীরা
তাদের ফ্রি নিবন্ধন করে
দিচ্ছেন।
নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা
কর্মকর্তা মো. শাহাজাহান আলী
বলেন, তুলনামূলক ওই গ্রামের বাসিন্দারা
বেশিরভাগ অশিক্ষিত। তারা কায়িক শ্রম
করে জীবিকা নির্বাহ করেন। উপজেলা স্বাস্থ্যবিভাগ থেকে পর্যাপ্ত প্রচারণা
চালিয়েছি।