সড়কে প্রতিনিয়ত ঘটছে গাড়ী দূর্ঘটনা। মৃত্যু বরন ও পঙ্গুত্ব জীবন যাপন করছে অনেকে। কাউকে বুঝাবার ও দেখার কেউ নেই। নিয়ন্ত্রণে নেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। যে যার মতো ফিটনেস বিহীন ও অনুমতি ছাড়া সড়কে দেদারছে চালাচ্ছে গাড়ি। এসব গাড়ীর চালক বেশির ভাগ রোহিঙ্গা, অদক্ষ ও কিশোর। তাদের মধ্যে রয়েছে সিন্ডিকেট। ওই সিন্ডিকেট সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে বেপরোয়া ভাবে চালায় গাড়ী। এক প্রকার যাত্রী সাধারন তাদেরই কাছে জিম্মি। হাতিয়ে নিচ্ছে যেমন ইচ্ছা ভাড়া। একদিকে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব, অপরদিকে যাত্রীদের করছে ফতুর। লাভবান হচ্ছে কিছু কতিপয় নেতাসহ সংশ্লিষ্টরা।
টেকনাফ-কক্সবাজার প্রধান সড়কের সরেজমিন দেখা যায়, কিশোর চালক টমটম গাড়ী সড়কের মধ্যখানে চালাচ্ছে। ডাম্পার চালক মোবাইল কানে ৬০-৭০ গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে কানজ্বালা ভেঁপু। সিএনজি (অটোরিকশা) আর টমটম গাড়ীর দীর্ঘ লাইন। কারও গাড়ী কিংবা চালকের লাইসেন্স নেই। সকলে সংশ্লিষ্টদের সাপ্তাহিক মাসোয়ারা দিয়ে ম্যানেজ করে চলছে।
বিশেষ করে সর্বত্রই এখন রোহিঙ্গা চালকদের হাতে গাড়ি। তাদের নিয়ম কানুনের বালাই নেই। তাই প্রতিনিয়ত সড়কে ঘটছে দূ্র্ঘটনা। এতে সড়কে প্রাণ ঝরলেও পঙ্গুত্ব জীবন যাপন করছে অনেকে।
এছাড়াও উখিয়া-টেকনাফের প্রধান সড়কে ১১ লাখ রোহিঙ্গার পাশাপাশি পর্যটকের চাপ রয়েছে। ফলে অতিরিক্ত যানবাহন নিয়মিত চলাচল করায় দূর্ঘটনার সংখ্যা আরো বাড়ছে। টমটম গাড়ী দিন দিন ভয়ংকর জীবনঘাতী দানব হয়ে উঠছে । হ্নীলা-টেকনাফে প্রায় আড়াই হাজার মতো টমটম গাড়ী রয়েছে বলে জানা যায়। প্রতিদিন কোন না কোন ভাবে টমটম নামক এই ব্যাটারী চালিত গাড়ির ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হয়ে জীবনহানিসহ পঙ্গুত্বের শিকার হচ্ছে নিরহ অসংখ্য পথচারী ও সাধারণ যাত্রী।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি টমটম দুর্ঘটনায় চালকসহ পাঁচ জন স্কুলছাত্র, পরের দিন স্কুল থেকে আসার পথে দুই স্কুল ছাত্রী মারাত্মক ভাবে আহত হয়। গত সোমবার রাতে উখিয়ায় সিএনজির চার যাত্রী নিহত হয়েছে।
শুধু তাই নই, সড়কে যেমন ইচ্ছা ভাড়া বেশি আদায় করছে যাত্রী সাধারণ থেকে। না দিলে তর্কে জড়িয়ে পড়ে।
সরেজমিন আরো দেখা যায়, হ্নীলা থেকে জাদিমুড়া সিএনজি ভাড়া ৫০ টাকা, টেকনাফে ৮০-১০ টাকা। অথচ দুরত্ব ১৩-২৩ কিলোমিটার।
সাধারন যাত্রীদের মধ্যে ভাড়ার নিয়ে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে দীর্ঘদিন ধরে। সংশ্লিষ্ট কেউ এগিয়ে আসছে না সমাধানে। উল্টো মাসিক চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
নিরাপত্তার স্বার্থে অবৈধ টমটমে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা । এছাড়া টমটমের কারণে হ্নীলা ও টেকনাফে লেগেই আছে যানজট । আর দুর্ঘটনা এখন নিত্য সময়ের ঘটনা।
হ্নীলার সমাজকর্মী ছৈয়দুল আমিন চৌধুরী জানান, অলিতে গলিতে ভুঁইফোড় শ্রমিক সংগঠন। ওই সংগঠনের নেতারা সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে অদক্ষ ও অপ্রাপ্ত চালকদের গাড়ি চালাতে সুযোগ করে দিচ্ছে। যার কারনে নিয়মিতভাবে সড়ক দুর্ঘটনা লেগেই থাকে।
এব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশ ইনচার্জ (ওসি) মনজুরুল হক জানান, ফিটনেস বিহীন ও অবৈধভাবে চলাচলকারী গাড়ী আইনের আওতায় আনতে সড়কে প্রতিনিয়ত অভিযান অব্যাহত আছে।