নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: শনিবার, আগস্ট ২১, ২০২১
ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যান
অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের
ফেসবুক স্ট্যাটাসের প্রতি পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে নাগরিক সমাবেশ। সমাবেশের নেতারা ড. আসিফ নজরুলের
পক্ষে মত রেখে বলেছেন,
‘বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আফগানিস্তানের কাবুল
বিমানবন্দরের দৃশ্যের চেয়ে ভয়াবহ হবে
ঢাকা বিমানবন্দরের দৃশ্য।’
শুক্রবার
শাহবাগে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ও
বন্দি ছাত্রনেতাদের মুক্তি দাও! সভা-সমাবেশে
দমন-পীড়ন এবং অধ্যাপক
আসিফ নজরুলকে হুমকি-হয়রানির প্রতিবাদ’ শীর্ষক এ নাগরিক সমাবেশ
অনুষ্ঠিত হয়।
এর
আগে ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে কাবুল বিমানবন্দর
ধরনের দৃশ্য বাংলাদেশেও হতে পারে।’ ড.
আসিফ নজরুলের এই ফেসবুক স্ট্যাটাস
নিয়ে তার পক্ষে-বিপক্ষে
বিভিন্ন মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়। স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র
করে গত বুধবার দুপুর
দেড়টায় ছাত্রলীগ এবং বিকেল পৌনে
৫টায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীরা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের কক্ষে
তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে বৃহস্পতিবার
বিকেল চারটার দিকে তালা খোলার
জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর আবেদন করলে পাঁচটার দিকে
তালা খুলে দেয় বিশ্ববিদ্যালয়
প্রশাসন। স্ট্যাটাসটি কেন্দ্র আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে
শাহবাগ থানায় অভিযোগও দায়ের করে ছাত্রলীগ।
সমাবেশে
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্টাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী
বলেন, ‘যে জাতি সম্মান
দিতে জানে না, সেই
জাতির কপালে বিপর্যয় আছে। সাহসী শিক্ষকের
প্রতি যা হচ্ছে তার
জন্য প্রধানমন্ত্রীর দায় আছে। আওয়ামী
লীগের সভাপতি হিসেবে আপনার একটা নৈতিক দায়িত্ব
আছে। যারা আসিফ নজরুলের
প্রতি অন্যায় করেছে, অন্যায় বহাল রেখেছে তাদের
পক্ষ থেকে পাবলিকলি আসিফ
নজরুলের কাছে ক্ষমা চান।
আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে একটা উদাহরণ সৃষ্টি
হবে। আপনার টেন্টাররা এসব থেকে শিখবে।
আদব-কায়দা শিখবে। আদব-কায়দা না
শিখলে জাতির উন্নতি হয় না।’
প্রধানমন্ত্রীর
উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি
কথা দিয়েছিলেন- নিরাপদ সড়ক আন্দোনে ছাত্রদের
নামে কোনো মামলা হবে
না। তিন বছর ধরে
সে মামলা ঝুলছে। আপনার কথার মূল্য না
থাকলে দেশবাসী যাবে কোথায়? একইভাবে
নরেন্দ্র মোদির আগমনের প্রতিবাদ করায় ৫৪ জন
ছাত্রের এখনও জামিন দেননি।
শুধু জামিন না, এ সব
মামলা প্রত্যাহার করা উচিত। তবেই
কাবুলের দৃশ্য দেখতে হবে না। নয়ত
কাবুলের দৃশ্য পুনরাবৃত্তি হওয়া আশ্চর্য কিছু
না।’
নাগরিক
ঐক্যের আহ্বায়ক মাহামুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আসিফ নজরুলের স্ট্যাটাসে
কারও নাম বলে নেই।
চোরের মন পুলিশ পুলিশ।
নাম না বললেও ওরা
(আওয়ামী লীগ) বুঝেছে যে
আসিফ নজরুল ওদের কথা বলেছে।
আসিফ নজরুল যা বলেছে তা
প্রত্যেক মানুষের মনে ব্যানার হয়ে
বুলঝে। বাংলাদেশে যদি ঠিকঠাক মত
নির্বাচন হয় তাহলে বাংলাদেশের
বিমানবন্দরে অবস্থা কাবুলের থেকে ভয়াবহ হবে।’
গণসংহতি
আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘ক্ষমতা
থেকে নামলে তাদের (আওয়ামী লীগ) পরিণতি আফগানস্থানের
কাবুল বিমানবন্দরের মত হবে। প্লেনের
চাকা ধরে দেশ ছেড়ে
পালাতে হবে। এখনও সময়
আছে, পদত্যাগ করেন। অন্তবর্তীকালীন সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর
করেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। জনগণ হয়ত আপনাদের
ক্ষমা করবে। নয়ত এদেশের মানুষ
আপনাদের ক্ষমতা থেকে নামিয়ে গণতান্ত্রিক
সরকার প্রতিষ্ঠা করবে।’
ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নুরুল হক
নূর বলেন, ‘শিক্ষক সমাজের প্রতিনিধি হিসাবে আসিফ নজরুল যে
স্ট্যাটাস দিয়েছেন তা কি অবাস্তব
কথা? সাহস থাকলে নিরেপক্ষ
নির্বাচন দিয়ে দেখেন, অস্তিত্ব
খুঁজে পাওয়া যাবে না।’
ভাসানী
অনুসারী পরিষদের চেয়ারম্যান ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের
ট্রস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর
সভাপতিত্বে এবং ভাসানী অনুসারী
পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জাহাঙ্গীর আলম মিন্টুর পরিচালনায়
আরও বক্তব্য রাখেন বিকল্প ধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান
অধ্রাপক ড. নুরুল আমিন
বেপারী, জেএসডির কার্যকারী সভাপতি সা কা ম
আনিছুর রহমান খান, মুক্তিযোদ্ধা নঈম
জাহাঙ্গীর, ইসতিয়াক আজিজ উলফাত, রাষ্ট্র
চিন্তার এডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, নাগরিক ঐক্যের সমন্বয়কারী শহিদ উল্লাহ কায়সার,
সদস্য ডা. জাহিদ উর
রহমান, নাগরিক মহিলা ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক ফেরেেদৗসী আক্তার, ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রাশেদ খান, যুগ্ম আহ্বায়ক
যুগ্ম আহ্বায়ক সাদ্দাম হোসেন, যুব অধিকার পরিষদের
সদস্য সচিব মনজুর মোর্শেদ
মামুন, শ্রমিক অধিকার পরিষদদের আহ্বায়ক আব্দুর রহমান,বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা নগর আহ্বায়ক
সৈকত আরিফ প্রমুখ।