ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

রিফাত হত্যাকাণ্ডের অন্যতম পরিকল্পনাকারী মিন্নি এখন কেমন আছেন?

ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: বুধবার, আগস্ট ১৮, ২০২১

রিফাত হত্যাকাণ্ডের অন্যতম পরিকল্পনাকারী মিন্নি এখন কেমন আছেন?

মনে আছে বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের কথা? যেই হত্যাকাণ্ড সারা দেশের মানুষকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। দিনে দুপুরে প্রকাশ্য দিবালোকে সবার সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রিফাত শরীফকে। রিফাত শরীফের স্ত্রী ছিলেন আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। যিনি প্রথমে রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী ছিলেন। পরে অবশ্য তদন্তে বেরিয়ে আসে তার আসল চেহারা। প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী থেকে হয়ে যান আসামি। ওই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম পরিকল্পনাকারী ছিলেন সে। মামলার প্রধান আসামি মো. সাব্বির আহম্মেদ নয়ন ওরফে নয়নবন্ড ২০২০ সালের জুলাই পুলিশের সঙ্গেবন্দুকযুদ্ধেনিহত হন।

 

রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বরগুনা জেলা দায়রা জজ আদালত মিন্নিসহ জনকে ফাঁসির আদেশ দেন। ফাঁসির আদেশ হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর বরগুনা জেলা কারাগার থেকে মিন্নিকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। মিন্নি এই কারাগারের কনডেম সেলে আছেন। মিন্নির মৃত্যুদণ্ডের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে। তবে করেনাভাইরাসের কারণে হাইকোর্ট বন্ধ থাকায় এতদিন আপিল শুনানি করা হয়নি। এখন কোর্ট খোলায় দ্রুত সময়ের মধ্যে এই আপিল শুনানি নিস্পত্তি হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

জানা গেছে, কারাগারের কনডেম সেলে মিন্নি সুস্থ আছেন। কারাবিধি অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের সাধারণত কনডেম সেলে রাখা হয়। ওই সেলে সাধারণ একজন আসামি থাকার কথা। তবে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে অতিরিক্ত আসামি থাকার কারণে একটি কনডেম সেলে তিনজন কয়েদিকে থাকতে হচ্ছে।

 

কারাগারের একটি সূত্র বলছে, করোনার কারণে কারাগারে হাজতি কয়েদির সঙ্গে দেখা-স্বাক্ষাত করা একেবারেই নিষেধ। তবে প্রতি সপ্তাহে পরিবারের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার সুযোগ পেয়ে থাকেন হাজতি বা কয়েদিরা। মিন্নিও সেই সুযোগটা নিয়ে থাকেন। পরিবারের সঙ্গে দেখা-স্বাক্ষাত না হলেও প্রতি সপ্তাহে টেলিফোনে কথা বলে থাকেন।

 

মিন্নির বিষয়ে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার আবদুল জলিল বলেন, ‘কারাগারে মিন্নি ভালোই আছেন। তিনি কারাবিধি মোতাবেক সকল সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন।

 

কারাগারে মিন্নির শারীরিক অবস্থা ভালো নেই দাবি করে বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, ‘মিন্নির বুকে ব্যথা মাথা ব্যথাসহ অন্যান্য অনেক উপসর্গ আছে। মিন্নি খেতে পারে না, ঘুমাতে পারে না। সব সময় অসুস্থ থাকে। তাই খুবই দুর্বল হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার কারণে তাকে চেনাই এখন দুষ্কর।

 

মিন্নির বাবার ভাষ্য, মিন্নি ওই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত ছিল না। এটা কেউ প্রমাণও করতে পারেনি। কুচক্রী মহল মিন্নিকে এই মামলায় জড়িয়ে ফাঁসির দণ্ডে দণ্ডিত করেছে। মিন্নিও আমার কাছে বলেছে, সে সম্পূর্ণ নির্দোষ। উচ্চ আদালতে বেকসুর খালাস পাবে বলে মনে করে।

 

মিন্নির বাবা বলেন, ‘মৃত্যুর আগে রিফাত তার বাবার কাছে হামলাকারীদের নাম বলেছে এবং মামলায় মিন্নিকে সাক্ষী করতে বলেছে। রিফাতের কথা অনুযায়ী তার বাবা মামলা দায়ের করেন এবং মামলার এজাহারে এসব কথা স্পষ্টভাবে লেখা আছে। এছাড়া রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ যে সাক্ষী দিয়েছেন তাতেও এসব কথা উঠে এসেছে। তাই আমি দৃঢ় আশাবাদী, আল্লাহর রহমতে উচ্চ আদালতে আমরা সুফল পাব। আল্লাহর রহমতে মিন্নি আবার আমাদের মাঝে ফিরে আসবেই।

 

রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মিন্নি ছাড়া বাকি যে পাঁচ আসামিকে আদালত ফাঁসির আদেশ দেন তারা হলো- রাকিবুল হাসান রিফাত ওরফে রিফাত ফরাজী, আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, মো. রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় মো. হাসান। খালাস পেয়েছেন মো. মুসা, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর কামরুল হাসান সাইমুন নামে চারজন।

সৌজন্যে: বাংলাইনসাইডার