ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪ |

EN

২০২৩ সালে জাতীয় নির্বাচন

শেখ হাসিনার সামনে ৭০০ দিনের বড় চ্যালেঞ্জ

নতুন জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে। সে হিসেবে বর্তমান সরকারের তৃতীয় মেয়াদ আয়ু আছে আর প্রায় ৭০০ দিন। এই ৭০০ দিন আওয়ামী লীগ সরকারকে কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হবে, ঘরে-বাইরে নানা ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে।


ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: শনিবার, জানুয়ারী ২৯, ২০২২

শেখ হাসিনার সামনে ৭০০ দিনের বড় চ্যালেঞ্জ
গত টানা তিন বছর সরকার পরিচালনায় শেখ হাসিনা একাই সবদিক সামলাচ্ছেন, তাই নতুন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আগামী ৭০০ দিন শেখ হাসিনার জন্য চ্যালেঞ্জিং সময় হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। গতকাল জাতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শেষ হয়েছে। শীতকালীন অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে শেখ হাসিনা নিজেও এই চ্যালেঞ্জের কথা বলেছেন এবং তিনি এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। সবসময় শেখ হাসিনার সাহস, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এবং দূরদর্শিতাই আওয়ামী লীগকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। আগামী ৭০০ দিন কিভাবে শেখ হাসিনা জটিল-কঠিন পরিস্থিতিগুলো সামাল দেন, সেটি এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে মুখ্য আলোচনার বিষয়। আগামী ৭০০ দিন তাকে কি পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে, সেটি যদি আমরা খুঁজে দেখার চেষ্টা করি তাহলে দেখব যে-

১. আন্তর্জাতিক চাপ: বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমশ দৃশ্যমান হচ্ছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একের পর এক বাংলাদেশের ওপর নানা বিষয়ে দৃশ্যমান চাপ সৃষ্টি করছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৭ জন কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, সামনে আরো নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে বলে কোনো কোনো মহল মন্তব্য করছেন। বাংলাদেশ থেকে যারা অবৈধ পথে নগদ অর্থ দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সম্পদ করেছেন সেই সম্পদের অর্থের উৎস জানতে চাওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অবশ্যই এটি শুধু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, বিভিন্ন দেশ থেকে যারা নগদ অর্থে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ করেছে তাদের প্রত্যেককেই জবাবদিহিতার আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে জো বাইডেন সরকার। কাজেই, সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং সময় পার করতে হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেক্ষাপটে। শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই নয়, ইতোমধ্যে জাতিসংঘে র‍্যাব নিষিদ্ধ করার আবেদন জানিয়েছে ১২টি মানবাধিকার সংস্থা। আর ইউরোপিয়ান ইউনিয়নেও একজন এমপি র‍্যাবকে নিষিদ্ধ করার দাবি করেছেন। আর এই সবকিছু মিলিয়ে সামনের দিনগুলোতে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়বে। আর এই চাপ সামাল দিতে হবে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। তিনি কিভাবে এই চাপ সামাল দেন সেটাই দেখার বিষয়।

২. বিভিন্ন অপপ্রচার:পপ্রচার: গত দুই বছর ধরেই সরকারের বিরুদ্ধে বিরামহীন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্মে। বিদেশে থাকা পলাতক গোষ্ঠীর বিএনপি-জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং তাদের অর্থায়নে বাংলাদেশবিরোধী বিশেষ করে সরকারবিরোধী নানারকম অপপ্রচারে লিপ্ত। এই অপপ্রচারের মাত্রাগুলো যত নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসবে তত বাড়বে। প্রশ্ন হলো, এই অপপ্রচারগুলো মোকাবেলা করে উন্নয়নের বার্তা শেখ হাসিনা কিভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে দিবেন বা এই অপপ্রচারগুলো যে কেবলই মিথ্যা প্রচারণা সেটি প্রতিষ্ঠা করা আওয়ামী লীগ সভাপতির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

৩. সংগঠনে বিশৃঙ্খলা: নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের সংগঠনের মধ্যে নানারকম বিশৃঙ্খলার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। দলের মধ্যে বিভক্তি প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময়। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে বিভক্তির কথা শোনা যায়। এই বিভক্তি কাটিয়ে সুশৃঙ্খল শক্তিশালী দলকে নির্বাচনের মাঠে নামানো আওয়ামী লীগ সভাপতির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

৪. প্রশাসনের ভূমিকা: গত একযুগ আওয়ামী লীগের পক্ষে ছিলো প্রশাসন, এটি অনেকেই বলেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রশাসনের জন্য যে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন, তা নজিরবিহীন। তাদের বেতন বৃদ্ধি এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বিপুলভাবে দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরও আগামী নির্বাচনের আগে এই প্রশাসন কতটুকু আওয়ামী লীগের পক্ষে থাকবে, সেটি নিয়ে অনেকের মধ্যেই সংশয় রয়েছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে, বিভিন্ন পর্যায়ের মাঠ প্রশাসনের মধ্যে যে সরকারবিরোধী প্রকাশ্য তৎপরতা দেখা যাচ্ছে তা রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।

৫. দুর্নীতি: এই আওয়ামী লীগ সরকারের সময় যেমন অনেক উন্নতি হয়েছে, তেমন দুর্নীতির অভিযোগও উঠছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। আর এই দুর্নীতির অভিযোগগুলো অধিকাংশই অতিরঞ্জিত আর মনগড়া। আর এই সমস্ত অভিযোগগুলোকে মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ সভাপতিকে আগামী নির্বাচন মোকাবেলা করতে হবে।

কাজেই, আগামী ৭০০ দিন এক কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই নির্বাচনের মাঠে যেতে হবে শেখ হাসিনাকে।

সৌজন্যে: বাংলাইনসাইডার