Can't found in the image content. 'ধরা খাওয়া' সব বিএনপির হয় কেন? | ফ্রিডম বাংলা নিউজ
ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪ |

EN

'ধরা খাওয়া' সব বিএনপির হয় কেন?

ফারজানা ববি নাদিরা | আপডেট: শুক্রবার, জানুয়ারী ২১, ২০২২

'ধরা খাওয়া' সব বিএনপির হয় কেন?
বিগত বছরগুলোতে নেতিবাচক কাজের জন্য যতজন সমালোচিত হয়েছেন, তাদের অধিকাংশই অতীতে বিএনপির পদধারী নেতা-কর্মী ছিলেন। তা সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ ফরিদ উদ্দিন আহমদ হোন, কিংবা সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান, এরা প্রত্যেকেই অতীতে বিএনপির একটিভ কর্মী ছিলেন এবং ক্ষমতা বদলের সাথে সাথে ক্ষমতাসীন দলে নাম লেখেন। সমাজে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে, এরকম প্রত্যেকটি ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির অতীত ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, তারা একসময় বিএনপি করতেন। ক্ষমতার পালা বদলের সাথে সাথে দল বদল করে সমালোচিত হওয়া বিএনপি নেতাদের মধ্যে রয়েছেন-

ভিসি ফরিদ উদ্দিন আহমদ:  শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ভিসি এই মূহুর্তে দেশের সবচেয়ে হট টপিক। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার ঘটনায় তাকে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে শিক্ষার্থীরা। শাবিপ্রবির এই ভিসি বিএনপির শাসনামলে জিয়া চেয়ারের প্রস্তাব করেছিলেন এবং বিএনপি পন্থী সাদা দল করতেন। কিন্তু ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে আওয়ামী পন্থী নীল দলে যোগ দেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন হন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হন। ওনার বিরুদ্ধে আছে প্রশ্ন ফাসেঁর অভিযোগও। এত কিছুর পরেও তিনি বহাল তবিয়তে কিভাবে থাকেন, সেটি একটি বড় প্রশ্ন বটে। 

মুরাদ হাসান: বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য, এক সুপরিচিত চিত্রনায়িকাকে ধর্ষণের হুমকি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য করার জেরে ইতোমধ্যে মন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান। বর্তমান সরকারের মন্ত্রী হলেও ১৯৯৬-৯৮ সেশনে ছাত্রদলের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ শাখার প্রচার সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। জানা যায়, মুরাদ হাসান ১৯৯৩ সাল থেকে ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ১৯৯৬ সালে যখন কলেজ শাখা কমিটি হয়, তখন তিনি প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পান। ১৯৯৬ সালের শেষ দিকে বা ১৯৯৭ সালের শুরুতে মুরাদ হাসান ছাত্রলীগে যোগ দেন। ওইসময় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে ছাত্রদলকে হোস্টেল ছাড়া করে ছাত্রলীগ। ছাত্রদলের এই কোণঠাসা পরিস্থিতিতে মুরাদ হাসান ছাত্রলীগে যোগ দেন। পরে তিনি মেডিকেল শাখার সভাপতি হন।

'রিজেন্ট' শাহেদ:  রিজেন্ট হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসার নামে জালিয়াতির অভিযোগে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের পর প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমের বিষয়ে প্রতারণাসহ নানা তথ্য উঠে আসে। র‌্যাবের অভিযানের আগ পর্যন্ত তিনি টিভি টকশোতে নিজেকে আওয়ামী লীগের লোক বলে পরিচয় দিতেন। কিন্তু প্রতারণায় ধরা খাওয়ার পর দেখা যায় তিনি বিএনপি করতেন।

জিকে শামীম: ক্যাসিনো বাণিজ্যসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্থের পাহাড় বানানো জিকে শামীমের উত্থান ঘটে যুবদলের ওয়ার্ড পর্যায়ে রাজনীতির মাধ্যমে। মির্জা আব্বাসের ভাই মির্জা কালু ও মির্জা খোকনের ঘনিষ্ঠতা অর্জন করেন শামীম। তাদের হাত ধরে তিনি গণপূর্ত ভবনের ঠিকাদারি ব্যবসা শুরু ও পরে নিয়ন্ত্রক বনে যান। এক পর্যায়ে ঢাকা মহানগর যুবদলের সহ-সম্পাদকের পদ তিনি লাভ করেন।

খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া: জিকে শামীমের মতো ক্যাসিনো বাণিজ্যসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্থের পাহাড় বানানো খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াও একসময় যুবদল করতেন। কিন্তু ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে ভিড়ে যান যুবলীগে। শুরু করেন যুবলীগের রাজনীতি। খুব দ্রুতই দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন তিনি। এরপর যুবলীগে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে খুব একটা সময় লাগে নি খালেদের।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপিতে আদর্শ ভিত্তিক রাজনীতি হয় না বলেই ক্ষমতার পালা বদলের সাথে সাথে কর্মীও নিজেকে নতুন আঙ্গিকে বদলে ফেলে এবং ক্ষমতাসীন দলের সাথে মিশে যায়। বিপরীতে ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় নেতার ব্যক্তিগত বলয় বৃদ্ধি করতে এসব বহিরাগতদের দলে অনুপ্রবেশ ঘটান। এসব অনুপ্রবেশকারীর কারণে দলের পোড় খাওয়া নেতারাও অনেক সময় দলে কোণঠাসা অবস্থায় থাকতে হয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সৌজন্যে: বাংলাইনসাইডার