ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: মঙ্গলবার, আগস্ট ১৭, ২০২১
আফগানিস্তান
এখন তালেবানদের দখলে। এর ফলে বাংলাদেশের
রাজনীতিতে এর একটি প্রভাব
লক্ষ্য করা যায়। সম্প্রতি
ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেছিলেন, তালেবানের সাথে যোগ দিতে
বাংলাদেশ থেকে এরই মধ্যে
কিছু মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে আফগানিস্তানে যাওয়ার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশে তালেবান ফেরত অনেকেই আছেন
যারা বিএনপি-জামায়াত-হেফাজত সহ ইসলামপন্থী রাজনৈতিক
সংগঠনগুলোতে রয়েছে। তবে দীর্ঘদিন আফগানিস্তানে
মার্কিনীদের প্রভাবে তালেবানরা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়লেও মার্কিন
সেনা প্রত্যাহারের ১০০দিনের মাথায় আফগানিস্তান দখল করেছে তালেবান।
তালেবানদের উত্থানের ফলে বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক
মেরুকরণ হচ্ছে। এর প্রভাব বাংলাদেশের
রাজনীতিতেও দেখা গেছে। তালেবানরা
যখন কাবুল দখল করলো তখন
বিএনপির চাপা উল্লাস আর
চাপা থাকেনি। বিএনপির এই উল্লাস প্রকাশ্য
হয়ে উঠেছে। এর ফলে বাংলাদেশে
থাকা তালেবান ফেরতরা আবার সোচ্চার হয়ে
উঠছে। বিএনপি মনে করে আফগানিস্তান
যদি তালেবানদের দখলে থাকে সেটা
বিএনপির জন্য ইতিবাচক।
তালেবানদের
উত্থানে বিএনপি একাধিক কারণে খুশি। প্রথমত, তালেবানদের পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে একদিকে চীন, অন্যদিকে রাশিয়া।
চীনের সাথে ইতিমধ্যে তালেবানদের
বৈঠক হয়েছে এবং চীন তালেবানদের
সাথে সুসম্পর্কও চায় বলে জানিয়েছে।
চীন দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে তাদের আধিপত্য বিস্তার করতে চায়। সেই
কারণেই চীন তালেবানদের পৃষ্ঠপোষকতা
দিচ্ছে। আর চীন এই
অঞ্চলে ভারতকে হটিয়ে কর্তৃত্ব নিতে চায়। বিএনপি
সবসময় মনে করে আওয়ামী
লীগকে সহযোগিতা করে ভারত এবং
ভারতের কারণে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে।
বিএনপি মনে করছে তালেবানদের
অভ্যুত্থানের ফলে এই অঞ্চলে
ভারতের আধিপত্য কমে যাবে এবং
চীনের আধিপত্য বাড়বে। চীনের আধিপত্য বাড়লে বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারে বলে
মনে করছে বিএনপির নেতারা।
বিএনপির সঙ্গে জামায়াতসহ অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনের সম্পর্ক থাকায় বিএনপি এতদিন আন্তর্জাতিক মহলে কোণঠাসা হয়ে
পড়েছিল। কিন্তু এখন যখন তালেবানদের
উত্থান হলো তখন পশ্চিমা
কূটনৈতিকরা চায় জঙ্গিবাদ যেন
তাদের বিরুদ্ধে না যায় তাই
তারা ছোট ছোট জঙ্গি
সংগঠনগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়। এর জন্য
মার্কিনরা এখন বাংলাদেশের এই
উগ্র, ধর্মান্ধ, মৌলবাদী গোষ্ঠীকে সমর্থন করবে যেন তারা
মার্কিন বিদ্বেষী না হয়। এর
ফলে বিএনপির সাথে জামায়াতের সম্পর্ক
নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো আর বাধা দিবে
না। কারণ, তারা মনে করে
বিএনপি যদি জামায়াত ছেড়ে
দেয় তাহলে তারা তালেবান হয়ে
যাবে। এছাড়াও বিএনপির সাথে অন্যান্য উগ্র,
ধর্মান্ধ, মৌলবাদী সংগঠন রয়েছে।
এইদিকে
তালেবানদের উত্থান নিয়ে আওয়ামী লীগ
সতর্ক। যদিও আওয়ামী লীগ
একটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বলতে চায়
না। কিন্তু আওয়ামী লীগ দেখতে চায়
যে এর ফলে বাংলাদেশে
তালেবান, লস্কর-ই-তৈয়ব সহ
অন্যান্য সংগঠনগুলো কি করে এবং
এদের চীন কি ধরণের
সম্পর্ক বজায় রাখে সেটাও
দেখতে চায়। এই জন্য
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ
সরকার সম্পূর্ণ বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রেখে সতর্ক অবস্থানে
আছে। বিশ্বে যখন কোন ঘটনা
ঘটে তখন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে
বিএনপি উল্লসিত হয়। যেমন- নরেন্দ্র
মোদীর বিজয়ে বিএনপি উল্লসিত হয়ে বিএনপি মিষ্টি
বিতরণ করে এবং মনে
করে মোদী সরকার বিএনপিকে
ক্ষমতায় আসতে সহায়তা করবে।
কিন্তু তেমন কিছুই ঘটেনি।
তালেবানদের উত্থানেও এখন বিএনপি খুশি
হলেও তেমন কিছু হবে
না বলেই মনে করছেন
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সৌজন্য:
বাংলাইনসাইডার