করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দুই বছরের বিরতি দিয়ে আজ শুরু হচ্ছে ডিসি সম্মেলন। বরাবরের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। তবে করোনার কারণে এবার তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সকাল ১০টায় সম্মেলন শুরু হবে।
ডিসি সম্মেলনের বিভিন্ন দিক নিয়ে সোমবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল। তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণের কারণে সম্মেলনে অতিথিদের কম দাওয়াত দেওয়া হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ১৫ জন মন্ত্রী ও ১৫ জন সচিবকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে। কার্য অধিবেশনগুলোতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিব মঞ্চে বসবেন, ডিসিরা গ্যালারিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসবেন।
খন্দকার আনোয়ারুল আরও জানান, সম্মেলনে মোট ২৫টি অধিবেশন হবে। এর মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে কার্য অধিবেশন ২১টি। এছাড়া রাষ্ট্রপতির দিকনির্দেশনা গ্রহণ নিয়ে একটি, স্পিকারের শুভেচ্ছা বক্তব্য নিয়ে একটি ও প্রধান বিচারপতির শুভেচ্ছা বক্তব্য নিয়ে একটি অধিবেশন হবে। সম্মেলনে মোট ৫৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ অংশ নেবে। কার্য অধিবেশনগুলোতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি হিসাবে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা উপস্থিত থাকবেন। অধিবেশনগুলোতে সভাপতিত্ব করবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এবার ডিসি সম্মেলন উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের কাছ থেকে ২৬৩টি প্রস্তাব পাওয়া গেছে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, এ বছর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রস্তাব পাওয়া গেছে ভূমি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত। এ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রস্তাব ১৮টি। এরপর সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় (১৬টি প্রস্তাব) ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত (১৫টি) প্রস্তাব বেশি পাওয়া গেছে। সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে থাকছে-ভূমি ব্যবস্থাপনা, কোভিড ম্যানেজমেন্ট, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম জোরদার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও পুনর্বাসন, স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসৃজন ও দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির আরও ব্যবহার ও ই-গভর্ন্যান্স আরও নিশ্চিত করা, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও সম্প্রসারণ, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ, পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণরোধ, ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের বাস্তবায়ন।
করোনা মহামারির আগে সর্বশেষ ডিসি সম্মেলন হয়েছিল ২০১৯ সালে। সে সম্মেলনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ছিল ৭৫ শতাংশ।
করোনায় আক্রান্ত ৭ কমিশনার-ডিসি : এদিকে সাত জন ডিসি ও কমিশনার করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় এবারের সম্মেলনে অংশ নিতে পারছেন না। এদের মধ্যে ২ কমিশনার ও ৫ ডিসি। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়ে বলেন, রাজশাহী ও বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার এবং কক্সবাজার, রাজশাহী, পটুয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও চুয়াডাঙ্গার ডিসি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।