নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে বৈঠক করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল।
সোমবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি বঙ্গভবনে পৌঁছায়। সন্ধ্যা ৫টা ১০ মিনিটে বৈঠক শেষে বের হন তারা।
বৈঠকে রাষ্ট্রপতিকে চারটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে ব্রিফিংয়ে জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
প্রস্তাবগুলো হলো-
১. সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ করবেন।
২. তাদের নিয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি যেভাবে উপযুক্ত বিবেচনা করবেন, সেই প্রক্রিয়ায় তিনি তাদের নিয়োগদান করবেন।
৩. প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের লক্ষ্যে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৮-এর বিধান সাপেক্ষে একটি উপযুক্ত আইন প্রণয়ন করা যেতে পারে।
৪. সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচনের স্বার্থে সব নির্বাচনে অধিকতর তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের অন্যান্যরা হলেন- আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান।
গত ২০ ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
প্রথম দিনে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনা করেন রাষ্ট্রপতি। এছাড়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক জোট (জাসদ), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, গণফোরামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছে।
বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ পাওয়া দলগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল অংশ নিলেও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), এলডিপি, মুসলীম লীগ, জেএসডি ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নেয়নি।
অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে কয়েকটি দল সার্চ কমিটির মাধ্যমেই পরবর্তী নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়ে এসেছে রাষ্ট্রপতির কাছে। সার্চ কমিটির জন্য নামের তালিকাও দিয়ে এসেছে কয়েকটি দল।
প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কাউন্সিল গঠন করে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগেরও প্রস্তাব এসেছে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকার; সব রাজনৈতিক দলের সদস্যদের নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার; নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জটিলতা ও অবিশ্বাস দূর করতে আইন প্রণয়নসহ বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছে অংশগ্রহণকারী দলগুলো।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশগ্রহণ না করা দলগুলো এ আলোচনা প্রক্রিয়াকে ‘লোক দেখানো’ বলে মন্তব্য করেছে।
২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি শপথ নেওয়া সিইসি কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি। সার্চ কমিটির মাধ্যমেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও শাহাদাত হোসেন চৌধুরীকে বাছাই করে বর্তমান নির্বাচন কমিশনার গঠন করা হয়।