ফ্রিডম বাংলা নিউজ

মঙ্গলবার, নভেম্বর ৫, ২০২৪ |

EN

আরও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আসছে?

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: মঙ্গলবার, জানুয়ারী ১৮, ২০২২

আরও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আসছে?
১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাত সদস্যের বিরুদ্ধে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এই নিষেধাজ্ঞার পর বাংলাদেশে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে আরও বিভিন্ন ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আসবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে বিভিন্ন কথাবার্তা প্রতিদিনই প্রকাশিত হচ্ছে। এমনকি কোনো কোনো ব্যক্তি বলার চেষ্টা করছেন, আরও অনেক ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবর সংগ্রহ করে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, আপাতত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কারো বিরুদ্ধেই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে না। বরং বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যে সাত কর্মকর্তার ওপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল, সেই বিষয়টি পুন:বিক্ষন এবং পর্যালোচনা করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ৮৭জন নিখোঁজ ব্যক্তির একটি তালিকা দেওয়া হয়েছিল এবং এই তালিকায় নিখোঁজ ব্যক্তিরা কিভাবে নিখোঁজ হয়েছে, সে সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এই বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে এ ব্যাপারে কোনো রকম সদুত্তর পাওয়া যায়নি বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। মাত্র সাতজন সম্পর্কে তথ্য দেওয়া গেছে। এখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আবার এ ব্যাপারে তাগাদা দিয়েছে। এই নিখোঁজ ব্যক্তিদের অবস্থা কি, তা জানার জন্য আইন, স্বরাষ্ট্র এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যৌথভাবে কাজ করছে বলে জানা গেছে। 

ইতোমধ্যে যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তাদের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য মার্কিন প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিজে বিষয়টি দেখছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইতোমধ্যে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেও জানা গেছে। দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, সাতজনের এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিকে নিয়ে এখন নানারকম রং চড়ানো হচ্ছে। এই নিষেধাজ্ঞাই শেষ নয়, আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে। একাধিক ব্যক্তি নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসতে পারে, ইত্যাদি নানা রকমের কথাবার্তা বলা হচ্ছে। কিন্তু মার্কিন প্রশাসনের ঘনিষ্ঠসূত্রগুলো এ ধরণের বক্তব্যকে অস্বীকার করেছে। 

উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহায়তা করে। এরমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও সহায়তা করে, তাদেরকে উন্নত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এই সমস্ত সহায়তা দেওয়ার আওতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু বিধিনিষেধ থাকে। সেই বিধিনিষেধের মধ্যে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড যেন না হয়, সেটি অন্যতম। আর সে কারণেই কক্সবাজারের পৌর কাউন্সিলর একরামের বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়েই তদন্ত করতে গিয়ে একাধিক সংগঠন থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বেশকিছু অভিযোগ পায়। এসব অভিযোগের ভিত্তিতেই সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। তবে এ ধরণের নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। বাংলাদেশ যদি উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ হাজির করতে পারে এবং এই সম্পর্কে সুনিশ্চিত ব্যাখ্যা দিতে পারে, তাহলে এ নিষেধাজ্ঞাগুলো থাকবে না। পাশাপাশি এই নিষেধাজ্ঞার ধারায় অন্য কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপের কোনো পরিকল্পনা মার্কিন প্রশাসনের নেই বলেই বিভিন্ন সূত্রগুলো জানাচ্ছে। তবে একটি বিষয় নিশ্চিত যে, সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছে এবং মার্কিন প্রশাসনের ভিতর বাংলাদেশ রাষ্ট্রবিরোধী লবিস্টরা অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। কাজেই নিষেধাজ্ঞা না হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ওপর আরও বিভিন্ন বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করবে, এটি মোটামুটি নিশ্চিত।

সুত্র: বাংলাইনসাইডার