Can't found in the image content.
ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: সোমবার, আগস্ট ১৬, ২০২১
আজ ১৫ আগস্ট, জাতীয় শোক দিবস। পঁচাত্তরের পরে এই দিনটি ছিল নিষিদ্ধ দিন। এই ভয়াবহ কালরাত্রিকে স্মরণ করাও যেনো মানা ছিল। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় একের পর এক এসেছিল স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি যারা বাংলাদেশকে নতুন করে পাকিস্তান বানাতে চেয়েছিল। আর সঙ্গত কারণেই এই সমস্ত শাসকগোষ্ঠীর ১৫ আগস্ট পালন নিষিদ্ধ করেছিল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর প্রথম রাষ্ট্রীয়ভাবে ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করা হয় এবং শোক দিবস পালন করা হয়। সেই সময় শোক দিবস পালন করত শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের কয়েকটি রাজনৈতিক দল। কিন্তু আস্তে আস্তে এখন জাতীয় শোক দিবস প্রশ্নে একটি জাতীয় ঐক্যমত হয়েছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক নেতৃত্বের কারণে জাতীয় শোক দিবস নিয়ে একটি ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল যাদের চিন্তাভাবনা যাই থাকুক না কেন তারা এখন শোক দিবস পালন করেন।
বিশেষ করে জাতীয় পার্টি যারা পঁচাত্তরের খুনীদেরকে মদন দিয়েছিল, এরশাদের আমলে খুনি ফারুক রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দিতা করেছিল, তারা নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছিল, যেই জাতীয় পার্টির কখনোই বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার করার উদ্যোগ নেয়নি বরং এই সমস্ত খুনিদের কূটনৈতিক চাকরি বহাল রেখেছিলেন সেই জাতীয় পার্টি এখন শোক দিবস পালন করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে এখনও বাংলাদেশে কিছু রাজনৈতিক দল আছে যে রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় শোক দিবস পালন করে না। তারা এই দিবসটিকে নিয়ে এক ধরনের অদ্ভুত নীরবতা পালন করে। যে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় শোক দিবস পালন করে না তাদের মধ্যে রয়েছে,
বিএনপি: বিএনপি`র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান যিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিল বলে অভিযোগ করা হয়। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনিদেরকে বিদেশে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেন। পরবর্তীতে তাদের কূটনৈতিক চাকরি দেন এবং বিভিন্ন সময় তাদেরকে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার কাজে ব্যবহার করেন। একই ঘটনা ঘটান বেগম খালেদা জিয়া। ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় এসে জিয়াউর রহমানের নীতিই অনুসরণ করেন খালেদা জিয়া। এক সময় বিএনপি জাতীয় শোক দিবস পালন করতো অনেকটা বিভৎস কায়দায়। তারা খালেদা জিয়ার তথাকথিত জন্মদিন পালন করতো এই দিবসটিতে। সেখান থেকে অবশ্য বিএনপি`র সরে এসেছে। এখন বিএনপি জাতীয় শোক দিবসে খালেদা জিয়ার কেকও যেমন কাটে না তেমনি অন্য কোনো কর্মসূচিও রাখে না। এক ধরনের নীরবতা পালন করে বিএনপি। এই নীরবতাও পঁচাত্তরের খুনিদের পক্ষে এক ধরনের প্রচ্ছন্ন সহানুভূতি বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
জামায়াত: বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী অন্য দল জামায়াত। জামায়াত কোনো সময় পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন করেনি বরং এ দিবসটি সম্পর্কে তারা একটি রহস্যময় নীরবতা পালন করে। পঁচাত্তরের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের পর সবচেয়ে বড় বেনিফিসিয়ারি যারা তাদের মধ্যে অন্যতম হলো জামায়াত। পঁচাত্তরের পরে জামায়াত রাজনীতি করার অনুমতি পায়। যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযম দেশে ফিরে আসেন এবং বিএনপির সঙ্গে মিলে তারা একটি রাজনৈতিক মোর্চা গঠন করেন যে মোর্চা এখনাে অনুষ্ঠানিকভাবে রয়েছে।
মুসলিম লীগ: মুসলিম লীগ এখন মৃতপ্রায় একটি রাজনৈতিক দল। কয়েক ভাগে বিভক্ত এই রাজনৈতিক দলে হাতে গোনা যে ২-৪ জন আছে সেই দলগুলো কেউই ১৫ আগস্ট পালন করে না।
খেলাফত আন্দোলন: খেলাফত আন্দোলন একটি উগ্র মৌলবাদী রাজনৈতিক সংগঠন। তারা জাতীয় শোক দিবস পালন করে না।
খেলাফত মজলিস: খেলাফত মজলিস আরেকটি উগ্রবাদী রাজনৈতিক দল যারা ১৫ আগস্ট পালন করে না।
লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, ধর্মান্ধ উগ্র মৌলবাদী দলগুলো এবং পাকিস্তানপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোই শুধুমাত্র জাতীয় শোক দিবস পালন করে না। যদিও এই দলগুলো এখন ক্ষীণ থেকে ক্ষীণকায় হয়ে নিঃশেষিত প্রায়।