ফ্রিডম বাংলা নিউজ

মঙ্গলবার, নভেম্বর ৫, ২০২৪ |

EN

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো দুই ট্রাস্টি রেহেনা ও বেনজীরকে দুদকে তলব

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: সোমবার, জানুয়ারী ৩, ২০২২

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো দুই ট্রাস্টি রেহেনা ও বেনজীরকে দুদকে তলব
অর্থ আত্মসাত, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য রেহেনা রহমান ও বেনজীর আহমেদকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

২৯ ডিসেম্বর দুদক উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে তাদের তলব করা হয়। আগামী ৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার সকাল ১০টায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে তাদের হাজির হয়ে বক্তব্য দিতে বলা হয়েছে। 

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, এফডিআর করার নামে প্রতিষ্ঠানের অর্থ লোপাট, স্ত্রী, স্বজনদের চাকরি দেয়ার নামে অনৈতিক ভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া, সরকারি শুল্ক ফাঁকি দিয়ে গাড়ি ক্রয় ও অবৈধভাবে বিলাসবহুল গাড়ির ব্যবহার এবং বিভিন্ন অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের আড়ালে প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, বসুন্ধরা, ঢাকার বোর্ড অব ট্রাস্টিজ-এর সদস্য রেহেনা রহমান ও বেনজীর আহমেদকে তলবের নোটিশ জারি করেছে দুদক। 

নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে বর্ণিত অভিযোগ বিষয়ে তাদের বক্তব্য শ্রবণ ও গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন বিধায় উল্লিখিত অভিযোগ বিষয়ে বক্তব্য প্রদানের লক্ষ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হয়ে অনুসন্ধান টিমের নিকট বক্তব্য প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে হাজির হয়ে বক্তব্য প্রদানে ব্যর্থ হলে বর্ণিত অভিযোগ বিষয়ে তাদের কোনো বক্তব্য নেই মর্মে গণ্য করা হবে। 

অভিযুক্ত এম এ কাসেম ও রেহানা রহমানের বিরুদ্ধে বিএনপি জামায়াতসংশ্লিষ্টতা ও জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগ রয়েছে। 

মানবতাবিরোধী অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত আসামী সাকা চৌধুরীর আপন খালাতো বোন এই রেহানা রহমান। এর আগে একই অভিযোগে তলব  করা হয় আরো দুই ট্রাস্টি এম এ কাসেম ও মোহাম্মদ শাহজাহানকে। তবে ২ জানুয়ারি সকালে তারা হাজির না হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়েছেন। 

মোহাম্মদ শাজাহান অসুস্থতার কারন দর্শান, অন্যদিকে এম এ কাসেম বার্ধক্যজনিত কারণে বিশ্রামে আছেন বলে আইনজীবী মারফত জানিয়েছেন। অথচ গত বুধবার তিনি সাউথ ইস্ট ব্যাংকের বোর্ড মিটিং এ সশরীরে উপস্থিত ছিলেন। অংশ নিয়েছেন নর্থ সাউথের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাতেও। 

ফলে দুদকের ডাকে সাড়া না দেয়াকে ধৃষ্টতা ও আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন দাবি করেছেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগকারী সংগঠন আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশন এর উপদেষ্টা ড. সুফী সাগর সামস। 

তিনি বলেন, ‘এম এ কাসেম ও মোহাম্মদ শাজাহান বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মিটিং, বিশ্ববিদ্যালয় মিটিংসহ সব ধরনের স্বাভাবিক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন। কিন্তু দুদকে উপস্থিতির ক্ষেত্রে অসুস্থতার দোহাই দিলেন। আইনের ফাঁক গলিয়ে তারা আসলে সময় ক্ষেপণ করছেন। আমরা জানতে পেরেছি একই প্রক্রিয়ায় অভিযুক্ত ট্রাস্টিরাও দুদকে উপস্থিত না হওয়ার পরিকল্পনা করছেন। অন্যরা যাতে একই রকম অজুহাতে পার পেয়ে না যায় সে ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি প্রতিষ্ঠানকে বাঁচাতে দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির কোনো বিকল্প নেই।’ 

জানা গেছে অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই দুদককে এড়িয়ে চলার জন্য আইনজীবীদের পরামর্শে বিভিন্ন ফাঁক ফোকড় খুঁজছেন। 

এদিকে একই অভিযোগে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো দুই ট্রাস্টি আজিম উদ্দিন ও আজিজ আল কায়সার টিটোকে আগামী ৯ জানুয়ারি দুদকে তলব করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে জানা গেছে একটি গোয়েন্দা সংস্থা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিযুক্ত ট্রাস্টিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। 

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ট্রাস্টি বিদেশ ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বিমান বন্দরে যাওয়ার পর তাকে সেখান থেকে ফেরত পাঠানো হয়।