ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

সেপ্টেম্বরে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের শঙ্কা

ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: শুক্রবার, আগস্ট ১৩, ২০২১

সেপ্টেম্বরে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের শঙ্কা

১১ আগস্ট থেকে সবকিছু খুলে দেওয়া হয়েছে। আর ১৯ আগস্ট থেকে সে খুলে দেওয়ার পরিধি আরও বিস্তৃত হচ্ছে। গত ১১ আগস্ট অর্ধেক গণপরিবহন চালু এবং অফিস-আদালত খুলে দেওয়া হয়েছে এবং সব ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা বলা হয়েছিল কিন্তু ১১ তারিখ থেকে আজ পর্যন্ত সাধারণ মানুষের যে চলাচল তাতে স্বাস্থ্যবিধি খুব একটা মানা হচ্ছে না বলেই দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যেই আজ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ১৯ আগস্ট থেকে পর্যটনকেন্দ্রসহ অন্যান্য বিনোদন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। আর এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ নাগাদ করোনা পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। তারা বলছেন যে, বাংলাদেশের করোনার তৃতীয় ঢেউ হতে পারে। তবে এটিকে তৃতীয় ঢেউ মানতে নারাজ অনেক চিকিৎসক। তারা বলছেন বাংলাদেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউই শেষ হয়নি। কিছুটা করোনা সংক্রমণের হার কমে আসছিল, ৩০ শতাংশ থেকে তা ২৩-২৪ শতাংশের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছিল কিন্তু ১১ তারিখ থেকে যখন সবকিছু খুলে দেয়া হলো তখন এটি আরও সংক্রমিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে মানুষ এখন অফিস আদালতে যাচ্ছে, মেলামেশা করছে, হোটেল-রেস্টুরেন্ট খাচ্ছে আর গণপরিবহন করোনা সংক্রমণের একটা বড় ঝুঁকি সৃষ্টি করবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

 

যেকোনো একটি এলাকায় সংক্রমণ ছড়িয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ১৪ দিনের একটি সময়সীমা লাগে অর্থাৎ সংক্রমণ হ্রাস বৃদ্ধি ১৪ দিনের মধ্যে দৃশ্যমান হয়। সেই হিসেবে ১১ আগস্ট থেকে যখন সবকিছু করে দেয়া হয়েছে। এর ফলাফল ২৬-২৭ আগস্ট থেকে পাওয়া শুরু হবে বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন এবং সেই সময় আস্তে আস্তে সংক্রমণ বাড়তে থাকবে। বিশেষ করে গণপরিবহন এবং গণজমায়েতের ঘটনাগুলো করোনা সংক্রমণ বাড়াতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশে ২০২০ সালের মার্চে প্রথম সংক্রমণ হয়েছিল। কিন্তু এ বছরের জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি নাগাদ পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। কিন্তু সেই সময়ে পর্যটনকেন্দ্রগুলো খুলে যাওয়া, ওয়াজ মাহফিল এবং গণজমায়েত হয় এমন অনুষ্ঠানাদি নতুন করে চালু হওয়ার ফলে সংক্রমণের ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটেছিল। আর সে কারণেই বাংলাদেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয় এবং এটি প্রথম ঢেউ এর চেয়ে অনেক বেশি ভয়ঙ্কর ছিলো। প্রথম দফায় করোনায় বাংলাদেশে কখনো প্রতিদিন মৃত্যুর সংখ্যা ২০০ অতিক্রম করেনি। দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণে আমাদের ২৬৪ জন সর্বোচ্চ মৃত্যুবরণ করেছে একদিনে।

 

আর এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে যে, হাসপাতালগুলোতে তিল ধারণের জায়গা নেই। আর এখন নতুন করে যদি রোগী আছে তাহলে তাদেরকে শয্যা দেয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে। পাশাপাশি যে গণটিকা কর্মসূচি ছিলো, সেই কর্মসূচি পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। যদিও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, এক কোটির বেশি লোককে টিকা দেওয়া হয়েছে কিন্তু ১৮ কোটি মানুষের এই দেশে এক কোটি মানুষকে টিকা দিয়ে করোনা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। এরকম পরিস্থিতিতে সরকার অনেকটা বাধ্য হয়েই জীবিকার প্রয়োজনে সবকিছু খুলে দিচ্ছে এবং সরকারের নীতিনির্ধারক মহলও বলছে যে, অনেক ঝুঁকি নিয়ে তারা এটি খুলে দিয়েছে। কিন্তু যদি গত দুইদিনে যেভাবে স্বাস্থ্যবিধির প্রতি উপেক্ষা দেখানো হয়েছে, সেই উপেক্ষা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে আগস্টের শেষ সপ্তাহ থেকে সেপ্টেম্বরে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে এবং সেটি দ্বিতীয় দফা করোনার চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। আর বাংলাদেশে যেভাবে টিকা দেয়া হচ্ছে সেই টিকাদান কার্যক্রম যদি জোরদার না করা হয় তাহলে আগামী বছর জুন পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনা একটু কঠিনই বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।

সুত্র: বাংলাইনসাইডার