ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, জুলাই ৬, ২০২৪ |

EN

ভোট যুদ্ধে আপন দুই ভাই, কাকে ভোট দিবেন স্বজন-ভোটাররা?

সাইফুল ইসলাম, মধুপুর প্রতিনিধি | আপডেট: শুক্রবার, ডিসেম্বর ২৪, ২০২১

ভোট যুদ্ধে আপন দুই ভাই, কাকে ভোট দিবেন স্বজন-ভোটাররা?
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মগড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম ও তার সহোদর ভাই মো. কামাল হোসেন। আজহারুল ইসলাম আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন। আর মো. কামাল হোসেন হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী।

ভোটের মাঠে দুই ভাইয়ের লড়াই নিয়ে টাঙ্গাইল জুড়ে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বইছে। আত্মীয় স্বজনরাও আলাদা আলাদা পক্ষ নিয়েছেন। ভোটাররাও বিব্রত হচ্ছেন, কাকে ভোট দিবেন।

আগামী ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মগড়া ইউনিয়ন পরিষদের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম। তার প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন সহোদর ভাই মো. কামাল হোসেন। আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী আজহারুলকে পরিবারের লোকজন বাসা থেকে বের করে দিয়েছে।

মগড়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আজহারুল ইসলাম ছাড়াও তার ছোট ভাই মো. কামাল হোসাইন (চশমা প্রতীক)। তিনি সদর থানা আওয়ামী লীগের সদস্য। এছাড়াও অপর দুই বিদ্রোহী প্রার্থী হচ্ছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোতালিব হোসেন (আনারস প্রতীক) ও সদর উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি শফিকুল ইসলাম বুলবুল (মোটর সাইকেল প্রতীক)। বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় তিন তিনজনকেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জাতীয় পার্টি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আব্দুল বাছেদ মণ্ডল।

আজহারুল ইসলাম এই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। তাকে এবার মোকাবেলা করতে হচ্ছে তার আপন ভাইসহ দলের তিন বিদ্রোহী প্রার্থীকে।

আপন দুই ভাই ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ায় বিষয়টি শুধু ওই ইউনিয়ন নয়। পুরো টাঙ্গাইল জুড়েই আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। দলের কিছু নেতাকর্মী বর্তমান চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলামের দিকে আবার কিছু কিছু নেতাকর্মী তার ভাইসহ অন্য বিদ্রোহীদের পক্ষে কাজ করছেন। তবে তাদের পরিবারের সদস্যসহ আত্মীয় স্বজনরাও বিভক্ত হয়ে গেছে দুই ভাইয়ের দিকে।

বুধবার দুপুরে সরেজমিন ওই ইউনিয়নের গেলে কুইজবাড়ি বাজারে একটি চায়ের দোকানে কথা হয় কয়েকজন গ্রামবাসীর সঙ্গে। বেলাল হোসেন নামক একজন ভোটার বলেন, ক্ষমতার জন্য ভাই ভাইয়ের মধ্যে যুদ্ধ হয়। আগে শুনছি। এবার নিজেই দেখতেছি।

অপরজন রেজাউল করিম বলেন, আমরা সাধারণ ভোটাররা বিব্রত এর মধ্যে আছি। নির্বাচনের পরে ভাইয়ের সাথে ভাইয়ের ঠিকই মিল থাকবে। তবে আমরা ভোটাররা আলাদা হয়ে যাচ্ছি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক আওয়ামী লীগের কর্মী বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী যোগ্য না হওয়ায় আওয়ামী লীগের কর্মীরা এবার বিদ্রোহী ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীর পক্ষ নিয়েছে। নৌকার মাঝিকে নির্বাচিত করার বিষয়ে খুব চিন্তায় আছি।

তবে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া বড় ভাই আজহারুল ইসলাম মনে করেন ভোট যুদ্ধে অংশ নিয়ে তাদের সম্পর্কের অবনতি হবে না। তিনি জানান, পরপর দুইবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এলাকার মানুষের জন্য কাজ করেছেন। তাই এলাকার মানুষ ও দল তাকেই চেয়েছে। এজন্যই প্রার্থী হয়েছেন। ভাইকে তিনি ভাইয়ের চোখেই দেখেন।

ছোট ভাই কামাল হোসাইন বলেন, গত নির্বাচনের সময় বড় ভাই তাকে তার মায়ের সামনে কথা দিয়েছিলেন এবার চেয়ারম্যান পদে তিনি প্রার্থী না হয়ে আমাকে প্রার্থী করবেন। কিন্তু তিনি কথা রাখেননি। মাসহ অপর ছয় ভাই এবং বেশিরভাগ আত্মীয়স্বজনের তার প্রতি সমর্থন রয়েছে বলে জানান।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এএইচএম কামরুল হাসান বলেন, চতুর্থ ধাপে টাঙ্গাইলের তিন উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে মোট চেয়ারম্যান প্রার্থী ৯৭ জন। সাধারণ সদস্য প্রার্থী ৬৮৫ জন ও সংরক্ষিত প্রার্থী ২৩২ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ৬ হাজার ১৮৭ জন। নির্বাচনের সব প্রস্তুতি শেষ। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে আশাবাদী।