ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

নতুন মহাসচিব খুঁজছে তারেক

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: শুক্রবার, ডিসেম্বর ২৪, ২০২১

নতুন মহাসচিব খুঁজছে তারেক
বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার দাবির আড়ালে আসলে বিএনপি তার সংগঠন গুছাচ্ছে। বিএনপি নেতারাই স্বীকার করছে আগে তারা ঘর থেকে বের হতে পারত না, এখন তারা বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ করছে। এর মাধ্যমে তারা সাংগঠনিকভাবে আগের চেয়ে শক্তি সঞ্চয় করতে পারছে। বিশেষ করে বিএনপি প্রধান লক্ষ্য হলো, সরকারবিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলা। আর সেই কাজটির প্রাথমিক ধাপ তারা অতিক্রম করছে বলে বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী জানিয়েছেন। বিএনপি নেতারা স্বীকার করেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি বা উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়া একটি উপলক্ষে মাত্র। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তারা সংগঠিত হতে চাইছে। আর বিএনপির যত সংঘটিত হতে চাইছে ততই বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল, দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে হয়ে উঠেছে। বিএনপি বিভিন্ন সিনিয়র নেতারা এখন মাঠে নেমেছেন। ডা. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মতো নেতারা প্রথমবারের মতো ঢাকার বাইরে বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছেন, সভা-সমাবেশ করছেন। এর ফলে বিএনপিতে একটি প্যারালাল নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে আগে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একাই দলের নীতিনির্ধারণী বক্তব্যগুলো রাখত সেখানে অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। এখন দলে একধরণের যৌথ নেতৃত্ব তৈরি হয়েছে, কারণ দলীয় কোন্দল। 

বিএনপি যখনই প্রকাশ্য বের হয় তখনই দলের মধ্যে নেতৃত্বের কোন্দল প্রবল আকার ধারণ করে, নানা রকম বিভক্তি এবং মেরুকরণ প্রকাশ্য রূপ নেয়। আর একারণেই এখন তারেক জিয়া দলের ভেতর একটি যৌথ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন বলে দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে। বিশেষ করে আন্দোলন, কর্মসূচির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ডা. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে সাথে নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন তারেক জিয়া। তবে এই নির্দেশনার পরও বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল মিটছে না। বিশেষ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বকে কিছুতেই মেনে নিচ্ছে না তৃণমূল, তারা মনে করছেন যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিশ্বাসযোগ্য নন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের প্রেক্ষাপটেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্পর্কে বিএনপির নেতাকর্মীদের এ ধরনের ধারণা। আর এ কারণেই বিএনপিতে নতুন মহাসচিব নিয়োগের দাবী জানানো হচ্ছে। বিশেষ করে তৃণমূলের সঙ্গে তারেক জিয়া যে নিয়মিত বৈঠক গুলো করছেন সেই বৈঠকে বারবার বলা হচ্ছে একজন নতুন মহাসচিব দরকার। গতকালও তারেক অন্তত তিনটি জেলা তৃণমূলের সাথে ভিডিও কনফারেন্স বৈঠক করেছেন এবং সেই বৈঠকে মহাসচিব পরিবর্তন করে একজন শক্ত সামর্থ্য মহাসচিব হিসেবে একজন কর্মঠ এবং দলের জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করতে সক্ষম ব্যক্তিকে মহাসচিব করার ব্যাপারে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আশ্বাস দিয়েছেন যে তিনি নতুন মহাসচিব খুঁজছেন।

তবে কে মহাসচিব হবে এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। বিএনপি'র একাধিক সূত্রগুলো বলছে যে তারেক জিয়া মহাসচিব করার জন্য বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন, আগের চেয়ে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। আগে যেমন বিএনপি'র কোনো নেতাই মহাসচিব হতে রাজি ছিলেন না কিন্তু এখন যখন বিএনপিতে একটু চাঙ্গা ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে তখন মহাসচিব হওয়ার ক্ষেত্রে আগ্রহী মানুষের সংখ্যা কম নয়। তবে অপেক্ষাকৃত তরুণ কারো হাতে বিএনপির মহাসচিব এর নেতৃত্ব তুলে দেওয়ার পক্ষে তৃণমূল। তারা মনে করেন বিএনপিকে আরো বেশ কিছুটা সময় আন্দোলন করতে হবে এবং মাঠের কোন নেতা যদি মহাসচিব হন তাহলে তিনি দলকে সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। বিশেষ করে আন্দোলন-সংগ্রামে অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন নেতৃত্বকেই মহাসচিব পদেই দেখতে চায় বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। আর এক্ষেত্রে মির্জা আব্বাস, ডা. খন্দকার মোশাররফ হোসেনই মহাসচিব হওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন। তবে মহাসচিব খোঁজাটা তারেক জিয়ার আরেকটি কৌশল নাকি সত্যি সত্যি তিনি একজন নতুন মহাসচিব নিয়োগ দিবেন এটি এখনও রহস্যময়।

বাংলাইনসাইডার