বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে সংলাপ সংলাপ খেলা শুরু হয়ে গেছে। রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোকে ডেকে ডেকে সংলাপ করছেন। কিসের সংলাপ? কেমন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করবে? যে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে?
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন করে কী হবে। যে সরকার আছে সে সরকারই তো নির্বাচনকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা নির্বাচন ব্যবস্থাটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ যতদিন সরকারে থাকবে ততদিন নির্বাচন কমিশন করে কোনো লাভ হবে না। সংলাপ করে কোনো লাভ হবে না। কথায় আছে পুরনো জিনিস আবার নতুন বোতলে দিয়ে দেখিয়ে কোনো কাজ হবে না।
বুধবার বিকালে টাঙ্গাইলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
স্থানীয় জেলা সদর মাঠে আয়োজিত সমাবেশে ফখরুল ইসলাম বলেন, এটা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার না থাকলে সেই নির্বাচন কোনো দিন অবাধ সুষ্ঠু হতে পারে না। আমাদের অভিজ্ঞতা ১৪ সালের নির্বাচন, ১৮ সালের নির্বাচন।
তিনি বলেন, আমাদের অভিজ্ঞতা এখন স্থানীয় পর্যায়ে যে নির্বাচন হচ্ছে- ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, পৌরসভা নির্বাচন সব জায়গায় দেখছি সরকারদলীয় লোকজন জোর করে সমস্ত ফলাফল তাদের দিকে নিয়ে চলে যাচ্ছে। তবে এ নির্বাচন করে কোনো লাভ নেই। সমস্যার সমাধান এক জায়গাতেই। সে সমাধান হচ্ছে নির্বাচনের সময় একটি নিরপেক্ষ সরকার দিতে হবে। যেটিতে আমরা বলি তত্ত্বাবধায়ক সরকার। আর এ সরকারকে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা দিয়ে তার অধীনে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও মুক্তির বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বেগম খালেদা জিয়া জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। বর্তমান সরকার বেআইনিভাবে ক্ষমতায় থেকে বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য আইন দেখাচ্ছেন। বেগম খালেদা জিয়াকে এ মুহূর্তেই চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো দরকার। আমরা বারবার বলেছি মানবিক কারণে তাকে বিদেশে যেতে বাধা দেবেন না। কিন্তু তারা সে কথা শুনেন না। যদি এ কারণে তার মৃত্যু হয় তার দায়দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির ৩৫ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করে গুম হত্যার মাধ্যমে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি আহমেদ আযম খানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মাহমুদুল হকের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন— বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক গৌতম চক্রবর্তী, শিশু বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন, কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী সদস্য ফকির মাহবুব আনাম স্বপন, ওবায়দুল হক নাসির ও জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ফরহাদ ইকবাল প্রমুখ।
দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় পর টাঙ্গাইলে বিএনপির বড় ধরনের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হলো। এ সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর সমাবেশ ঘটে। শুরুতেই সমাবেশটি শহরের শহিদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত সেখানে সমাবেশের অনুমতি পাওয়া যায়নি। পরে জেলা সদর মাঠে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয় বলে জেলা বিএনপির নেতারা জানান।