ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪ |

EN

মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক-এর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: বুধবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২১

মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক-এর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
গত ১২ই ডিসেম্বর দূর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বরাবরে মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দূর্নীতির অভিযোগ তুলে মো: মোকসেদ হোসেন নামের এক ভূক্তভোগী ঠিকাদার।

অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, মৎস্য অধিদপ্তরের অতি: মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক ছাত্র জীবন থেকেই বিএনপি ঘরানার একজন ব্যক্তি। বিগত বিএনপি শাসনামল থেকেই খালেদা জিয়ার ছোট ভাই সাঈদ ইস্কান্দারের সাথে আত্মীয়তার সর্ম্পক এবং ঘনিষ্টতার নানান তথ্য গণমাধ্যম ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার হাতে রয়েছে। যখন তিনি পরিচালক পদে পদোন্নতি পান তখন সাইদ ইস্কান্দর পরিবারের সাথে ঘনিষ্টতার বিষয়টি সামনে আসলে তখনকার সচিব মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিষয়টি সামাল দেন। সাবেক এই সচিবের জনপ্রশাসন সচিবের সাথে ঘনিষ্টতা থাকায় এই ব্যাপারটি ধামাচাপা দিয়ে তাকে পদোন্নতির ব্যবস্থা করেন বলে জানা গেছে। পরবর্তীতে এসবি-এর প্রতিবেদনে তা প্রমাণিত এবং বর্তমানে প্রতিবেদনটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। 

তিনি অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, জাতীয় কৃষি প্রযুক্তি প্রকল্প (এন. এ. টি. পি.) এর প্রকল্প পরিচালক হিসেবে যোগদানের পরপরই দুর্নীতির মহোৎসব শুরু করেন। তখন প্রকল্পের উপকরণ ক্রয়ের ক্ষেত্রে ভূয়া কাগজ দিয়ে কোটেশন/টেন্ডারের নামে বাজার দরের চেয়ে বহুগুণ উচ্চ দরে মালামাল ক্রয় করেছেন। কাগজপত্র মিথ্যা ও দ্রব্যের মূল্য অত্যধিক বেশী হওয়ায় কোটেশন/দরপত্র কমিটির সভাপতি কোটেশনের তুলনামূলক বিবরনীতে (সিএস) স্বাক্ষর না করা সত্বেও প্রকল্প পরিচালক ক্ষমতার অপব্যবহার করে দূর্নীতির মাধ্যমে কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। 

এছাড়াও খন্দকার মাহবুবুল হক এনএটিপি প্রকল্পে প্রায় ৩০০টি মোটর সাইকেল ক্রয় করেন। ভূয়া কাগজ পত্র দিয়ে কোটেশন করে উপরোক্ত কায়দায় ভারতীয় হিরো মোটর সাইকেল ক্রয় করে কাগজপত্রে জাপানী মোটর সাইকেল দেখিয়ে দূর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমানে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।

উক্ত বিষয়ে সে সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ দায়ের হলে তদন্তের স্বার্থে এবং শাস্তি স্বরূপ মৎস্য ও প্রাণি-সম্পদ মন্ত্রণালয় খন্দকার মাহবুবুল হককে প্রকল্প পরিচালক হতে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, সিরাজগঞ্জে বদলী করে। মৎস্য ও প্রাণি-সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ফাইলে এসব দুর্নীতির চিত্র সংরক্ষিত আছে যা যেকোনো সময় গায়েব হয়ে যেতে পারে বলে তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন।

মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও অতিঃ মহাপরিচালক যোগসাজশ করে এই অর্থ বছরে কোটি কোটি টাকার আত্নসাৎ করেন। তার মধ্যে উল্লেযোগ্য হল কোষ্টাল মেরিন প্রকল্প । উনি এই প্রকল্পের বর্তমানে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন। সেখান থেকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে স্পীডবোর্ড ক্রয় এবং বিভিন্ন ধরনের শীপের জন্য যন্ত্রাংশ ক্রয়ে অনিয়ম। খন্দকার মাহবুবুল হক বর্তমানে মৎস্য অধিদপ্তরের কোষ্টাল সাসটেইনেবল প্রকল্পে প্রকল্প পরিচালক। 

সরকারের পিপিআর ২০০৮ এবং ২০১৪ মোতাবেক প্রকল্পের মোট ব্যয়ের সর্বোচ্চ ৩% অধিক অর্থ ব্যয়ে পরামর্শক ফার্ম নিয়োগ করা যাবে না মর্মে বিধান আছে। কিন্তু উক্ত বিধান অমান্য করে পিডি সাহেব প্রকল্প ব্যয়ের ৮% টাকা বায়ে ৩৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে পরামর্শক ফার্ম নিয়োগ করেছেন। এতে সরকারের প্রায় ২৬ কোটি টাকা দূর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। 

সাম্প্রতিক সময়ে সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের আওতায় আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে ৭৮(আঠাত্তর) জন মেরিন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে যেখানে প্রতি জনের কাছ থেকে ৩-৫ লক্ষ টাকা করে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।।

মৎস্য অধিদপ্তরের বর্তমান অতিঃ মহাপরিচালক খ. মাহাবুবুল হক ডিজি হওয়ার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও মৎস্য অধিদপ্তরের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা ছড়াছড়ি করে যাচ্ছেন । সেই মোতাবেক সহকারী পরিচালক ( প্রশাসন -১ ) আবুল বাশার , জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (রিজার্ভ) সুজিত কুমার চ্যাটার্জী ও প্রধান সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জুয়েল শেখকে সাথে নিয়ে উপর মহলে আপ্রাণ চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

এসব অভিযোগ সত্য নয় উল্লেখ করে খ. মাহাবুবুল হক ফ্রিডম বাংলা নিউজকে বলেন, কোন এক কুচক্রিমহল আমার সফলতায় ঈর্ষান্বিত হয়ে এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ করে যাচ্ছেন। আমার ৩০ বছরের স্বচ্ছ চাকুরী জীবনে দাগ লাগানোর চেষ্ঠা করছেন।