ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪ |

EN

দেশের বাহিরে আওয়ামী লীগের শাখাগুলো কি করে?

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১৪, ২০২১

দেশের বাহিরে আওয়ামী লীগের শাখাগুলো কি করে?
বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের বিদেশে বেশ শক্তিশালী শাখা রয়েছে। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে শাখা রয়েছে এবং এসব শাখার নিয়মিত সম্মেলন হয়, কমিটিও গঠন করা হয়। শুধু মূল দলের শাখা না, অঙ্গসহযোগী সংগঠনের শাখা রয়েছে। অস্বীকার করার উপায় নেই বিভিন্ন সংকটে রাজনৈতিক দলের শাখাগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিএনপির তুলনায় আওয়ামী লীগের বিদেশে সংগঠনগুলো অত্যন্ত শক্তিশালী। কাগজে-কলমে তাদের কর্মী সংখ্যা অনেক বেশি। বিভিন্ন দুঃসময় এই বিদেশী শাখাগুলো অত্যন্ত বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে, এ নিয়ে কোন সন্দেহ নাই। বিশেষ করে, ওয়ান-ইলেভেনের সময় শেখ হাসিনার মুক্তির দাবিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের শাখা বেশ ভাল ভূমিকা পালন করেছিল।

যখন সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন তখন তিনি প্রতিবাদের মুখে পড়েন। সবচেয়ে বড় প্রতিবাদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি লন্ডন সফর করতে গিয়ে। এই সময়ে শেখ হাসিনার মুক্তির দাবিতে তাদের কর্মসূচিগুলো বাংলাদেশের রাজনৈতিক কর্মীদের পর্যন্ত উৎসাহিত করেছে। আর এ কারণে আওয়ামী লীগ সভাপতি বিদেশে শাখাগুলোর নেতাদেরকে আলাদা সম্মান করেন। তারা দেশে আসলে প্রধানমন্ত্রী কর্মব্যস্ততার মধ্যেও তাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। বিদেশে গেলে যত ব্যস্ততাই থাকুক না কেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তিনি কথা বলেন, মিলিত হন এবং তাদেরকে উৎসাহিত করেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি সবসময় বলেন যে, তারা বিদেশে যেয়ে এত কষ্টের মধ্যেও যে আদর্শ ধরে রেখেছে এটি অনেক বড়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের বিদেশি শাখাগুলো কি কাজ করছে, এ নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যেই অনেক প্রশ্ন উঠেছে।

দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার ফলে আওয়ামী লীগের বিদেশের শাখা নেতৃবৃন্দের মধ্যে এক ধরনের আয়েশী ভাব এসে গেছে। ক্ষমতার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়েই তারা এখন ব্যস্ত। অনেকেই ঘনঘন দেশে আসেন, নানা রকম তদবির করেন, অনেকে ব্যবসা বাণিজ্যের মধ্যে ঢুকে পড়েছেন, কেউ কেউ মনোনয়নের জন্য চেষ্টা করেন, অনেকে মনোনয়ন পেয়েছেনও। এখন যে আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশে বিরোধী প্রচারণা চলছে, সেই প্রচারণায় বিদেশের শাখাগুলোর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাম্প্রতিক সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাত জন বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এ নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ওয়াশিংটন কিংবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শাখা এখন পর্যন্ত কোনো কর্মসূচি দেয়নি। অন্যদিকে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের কয়েকজন সদস্য চাপ প্রয়োগের কৌশল হিসেবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার জন্য বিবৃতি দিয়েছেন। এইসব ঘটনা যখন ঘটছে, তখন প্রশ্ন উঠেছে বিদেশের আওয়ামী লীগের শাখা গুলো কি করছে?

ইউরোপ জুড়ে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী সংগঠন রয়েছে। কিন্তু এখন আওয়ামী লীগের এসব সংগঠনের নেতারা নানারকম দেনদরবার, তদবিরেই ব্যস্ত। যখন কোন মন্ত্রী যান বা বিশেষ অতিথি যান, তখন তাদেরকে তুষ্ট করাই যেন তাদের প্রধান কাজ। এছাড়া তারা বাংলাদেশে নানারকম ব্যবসা-বাণিজ্য, তদবিরে সময় কাটান। যার ফলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় অপপ্রচার হচ্ছে এ ব্যাপারে তারা কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। সম্প্রতি সুইডেনে নেত্র নিউজের বিরুদ্ধে একটি মামলা করার পরও সেটির ক্ষেত্রে কি অগ্রগতি হলো তা জানা যায়নি। বিদেশের শাখাগুলো যদি সক্রিয় থাকে, বাংলাদেশ এবং আওয়ামী লীগ বিরোধী ষড়যন্ত্রগুলোকে প্রতিহত করার জন্য সার্বক্ষণিক কর্মসূচির মধ্যে থাকে তাহলে এ ধরনের অপতৎপরতা অনেকাংশেই বন্ধ করা সম্ভব বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।

সৌজণ্যে: বাংলাইনসাইডার