জো বাইডেন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প–যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যথাক্রমে ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিকান দলের দুই প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে। কিন্তু সম্প্রতি নির্বাচনের বেশ আগে সিএনএনের বিতর্কের পর বাইডেনকে নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সে বিতর্কে ট্রাম্পের কাছে পাত্তাই পাননি বাইডেন। শোনা যাচ্ছে, বিতর্কের পর ডেমোক্রেটরা অনানুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনে বাইডেনের বিকল্প খুঁজছে।
যদিও বাইডেন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘ঈশ্বর ছাড়া কেউ আমাকে নির্বাচন থেকে সরাতে পারবে না।’ কিন্তু যদি শেষ পর্যন্ত নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাইডেনে আস্থা না রাখতে পারেন ডেমোক্রেটরা, সেক্ষেত্রে তার জায়গায় ট্রাম্পের মুখোমুখি হবেন কে?
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাইডেনের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস নাকি সে দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে রয়েছেন। বেশকিছু জরিপে দেখা গেছে, বাইডেনের চেয়ে বরং কমলাকে ট্রাম্পের সামনে দাঁড় করালে ডেমোক্রেটদের নির্বাচনে ভালো করার সম্ভাবনা রয়েছে।
গত ২ জুলাই প্রকাশিত সিএনএনের এক জরিপে দেখা গেছে, ৪৯ শতাংশ ভোটারের সমর্থন নিয়ে বাইডেনের (৪৩ শতাংশ) চেয়ে এগিয়ে আছেন ট্রাম্প। কিন্তু বাইডেনের তুলনায় ট্রাম্পের সঙ্গে লড়াইয়ে কমলার অবস্থান ভালো ছিল।। ট্রাম্পের (৪৭ শতাংশ) সঙ্গে লড়াইয়ে মাত্র ২ শতাংশ পিছিয়ে ছিলেন কমলা (৪৫ শতাংশ)।
একইভাবে সিএনএনের ওই বিতর্কের পর রয়টার্স/ইপসসের করা এক জরিপে ট্রাম্পের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে কমলার। ট্রাম্পের ৪৩ শতাংশ সমর্থনের বিপরীতে কমলা সমর্থন পান ৪২ শতাংশ।
বাইডেন ক্যাম্পেইনের অভ্যন্তরীণ জরিপেও ট্রাম্পের বিপরীতে জনসমর্থনের দিক দিয়ে প্রায় সমান অবস্থানে ছিলেন বাইডেন ও কমলা।
বাইডেন সরে গেলে কমলাই নির্বাচনে ডেমোক্রেটদের সেরা বাজি হবে বলে মনে করছেন দলটির প্রভাবশালী নেতারা। যাদের মধ্যে রয়েছেন–গত নির্বাচনে বাইডেনের জয়ের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা জিম ক্লাইবার্ন, নিউইয়র্কের কংগ্রেসম্যান এবং কংগ্রেশনাল ব্ল্যাক ককাসের জ্যেষ্ঠ সদস্য গ্রেগরি মিকস এবং পেনসিলভানিয়ার ডেমোক্রেট নেতা সামার লি ও কংগ্রেসের সংখ্যালঘু নেতা হাকিম জেফরিস।
শুধু ডেমোক্রেটরাই নন; রিপাবলিকান দলের বেশ কয়েকজন দাতাও মনে করছেন ট্রাম্পের বিপরীতে কমলার চেয়ে বাইডেন নির্বাচন করলে রিপাবলিকানদের জয়ের সম্ভাবনা বেশি।
নেভাডায় ট্রাম্পের ক্যাম্পেইনের জন্য তহবিল সংগ্রহ করা পলিন লি রয়টার্সকে বলেন, ‘আমি চাই বাইডেন নির্বাচন করুক।’ তিনি বলছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে নিজেকে ‘অযোগ্য’ হিসেবে প্রমাণ করেছেন বাইডেন। তাই ট্রাম্পের বিপরীতে বাইডেন টিকে থাকলে রিপাবলিকানদের জয়ের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে বলেই মত তার।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এখনো কয়েক মাস সময় আছে। এর মধ্যে নিজেকে ‘যোগ্য’ প্রমাণের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন বাইডেন। এরপরও যদি শেষ পর্যন্ত ৮১ বছর বয়সী বাইডেনকে নির্বাচন থেকে ছিটকে যেতেই হয়, সেক্ষেত্রে ট্রাম্পের বিপরীতে কমলাকে বেছে নিতেই পারে ডেমোক্রেটরা।