ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, জুলাই ৭, ২০২৪ |

EN

মাছ ধরতে আদার দিতে হয়, কালোটাকা সাদা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিবেদক | আপডেট: শুক্রবার, জুন ৭, ২০২৪

মাছ ধরতে আদার দিতে হয়, কালোটাকা সাদা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী
বাজেটে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা প্রশ্ন আসছে, কালোটাকা নিয়ে। কালোটাকা নিয়ে আমি শুনি, কালোটাকা সাদা করলে আর কেউ ট্যাক্স দেবে না। ঘটনা কিন্তু এটা না, এটা শুধু কালোটাকা নয়। জিনিসের দাম বেড়েছে, এখন এক কাঠা জমি যার আছে সেই কোটিপতি। কিন্তু সরকারি যে হিসাব, সেই হিসাবে কেউ জমি বিক্রি করে না। বেশি দামে বিক্রি করে, এতে কিছু টাকা উদ্বৃত্ত হয়। এই টাকাটা তারা নিজেদের কাছেই রাখে। এবার আমরা চেয়েছি এমন ব্যবস্থা করতে যাতে করে সামান্য কিছু টাকা দিয়ে তারা যেন সেটা আসল পথে নিয়ে আসে।

তিনি আরও বলেন, আমরা ঠাট্টা করে বলি মাছ ধরতে গেলে তো আদার দিতে হয়, দিতে হয় না? আদার ছাড়া তো মাছ আসবে না। সেই রকম একটা ব্যবস্থা, এমনটা আগেও হয়েছে। সেই তত্ত্বাবধায়ক আমলেই শুরু হয়েছিল, আর পরেও প্রত্যেক সরকারই করেছে। সেই সুযোগটা আমরাও দিয়েছি। যে অল্প টাকা দিয়ে টাকাটা আগে ব্যাংকে নিয়ে আসো। অর্থাৎ টাকাটা উদ্ধার হোক। এটা নিয়ে নানা জনে নানা কথা বলছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জাতির পিতা আদর্শ নিয়ে কাজ করেছি বলেই বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। আজ গ্রাম পর্যায়ের মানুষের মাঝেও আর্থিক স্বচ্ছলতা দেখা দিয়েছে। আমরা আমাদের প্রবৃদ্ধি প্রায় ৮ ভাগের কাছাকাছি নিয়ে এসেছিলাম। মাথাপিছু আয় আমরা বাড়িয়েছি। তিনি আরও বলেন, ১৯৯৬ সালে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করি। বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধি, অবকাঠামো গত উন্নয়ন, রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ শুরু করি। যে পরিকল্পনা নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছিলাম, তখন ২০০১ সালে আমাদের ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হয়নি। কারণ গ্যাস বিক্রি করতে চাইনি, এটাই ছিল আমার অপরাধ। 

তিনি বলেন, এরপর দেশটা দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও বাংলা ভাই ছিল নিত্যদিনের ব্যাপার। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছিল অস্ত্রের ঝনঝনানি। মেধাবী শিক্ষার্থীদের অস্ত্রধারী হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এটা প্রমাণিত হয়েছে, যে দল বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সেই দলের নেতৃত্বে যখন সরকার হয়, তখন মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়, ভাগ্যের দুয়ার খুলে যায়। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এগিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু কোভিড দেখা দিল। এর ফলে সারাবিশ্বে মন্দা দেখা দিল। এর মধ্যেই ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ। স্যাংশন-পাল্টা স্যাংশনের ফলে সবকিছুর দাম বৃদ্ধি। গম, তৈল, জ্বালানি, গ্যাসসহ অনেক কিছু আমাদের বাহির থেকে আনতে হয়। রিজার্ভ কত আছে, সেটা বিবেচনার বিষয় না, আমাদের মানুষকে খাওয়াতে হবে আগে। রিজার্ভ কত আছে না আছে, তার চেয়ে বেশি দরকার আমার দেশের মানুষের চাহিদাটা পূরণ করা। সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা পানির মতো টাকা খরচ করেছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন, আমরা কারো কাছে হাত পেতে চলবো না। ভিক্ষা করব না। এটাই আমাদের নীতি। বিশ্ব পরিস্থিতি মাথায় নিয়েই আমাদের পরিকল্পনায় চলতে হবে। আমাদের দেশে ‘ভালো না লাগা গ্রুপ’ আছে। তাদের ভালো না লাগাই থাক। এগুলোতে কান দেওয়ার দরকার নেই। এটা যুগ যুগ ধরেই দেখছি, নতুন নয়। যখন কোনো অস্বাভাবিক সরকার আসে তারা খুব খুশি হয়। 

তিনি আরও বলেন, কারণ তখন নাকি তাদের গুরুত্ব থাকে। আর মানুষের ভোটে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে তাদের নাকি মূল্যায়ন হয় না। মূল্যায়নটা করব কিভাবে? তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তো দেখেছি তারা অগণতান্ত্রিক সরকারকে কিভাবে তেল মারে। আমাদের ওই তেল মারা গোষ্ঠির দরকার নেই। আমাদের শক্তি দেশের জনগণ। জনগণ আমাদের ভোট দেয়, জনগণের জন্য কাজ করি। জনগণের কল্যাণ করি। এটাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা সেই ভাবে পদক্ষেপ নেই, যেনো মানুষের কষ্ট না হয়।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, শাজাহান খান, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালার মহিউদ্দিন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃনাল কান্তি দাস, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সবুর, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ। সভা সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শামীম।