ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন দক্ষিণাঞ্চলের ৪০ লাখ গ্রাহক, প্লাবিত গ্রামের পর গ্রাম

ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: সোমবার, মে ২৭, ২০২৪

বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন দক্ষিণাঞ্চলের ৪০ লাখ গ্রাহক, প্লাবিত গ্রামের পর গ্রাম
প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রাথমিক ধাক্কায় দুইজনের মৃত্যুর খবর এসেছে; বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছেন দুর্গত জেলাগুলোর প্রায় ৪০ লাখ গ্রাহক। স্বাভাবিকের চেয়ে সাত-আট ফুট বেশি উচ্চতার জোয়ারের চাপে সাতক্ষীরা, বরগুনাসহ কয়েক জেলায় বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। উপকূলীয় নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে শত শত গ্রাম।

ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান অবশ্য রোববার রাতেই সংবাদ সম্মেলন করে ‘ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির’ খবর দেন। তিনি বলেছেন, ঝড়ের মধ্যে মানুষ ‘অনেক বিপদের মধ্যে’ রয়েছে।

জানা গেছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানার পর প্লাবিত হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। লাখ লাখ মানুষ বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। বসতবিটা, ফসলের খেত, মাছের ঘের, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে উপকূলের বাসিন্দাদের। মৃত্যু হয়েছে দুইজনের। 

ঘূর্ণিঝড়ের কারণে দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ৪০ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। গাছ পড়ে, লাইন ছিঁড়ে অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক এলাকায় পূর্ব সতর্কতা হিসেবে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। 

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) এক কর্মকর্তা জানান, সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৪টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ২৫ লাখ ৬৯ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুৎহীন এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে পটুয়াখালী, বাগেরহাট, ভোলা, পিরোজপুর, সাতক্ষীরা, বরিশাল ও ঝালকাঠি।

পটুয়াখালীতে ৬ লাখ, বাগেরহাটে সাড়ে ৪ লাখ ও ভোলায় সোয়া ৪ লাখ, পিরোজপুরে ৩ লাখ, বরিশালে ১ লাখ ৮০ হাজার, সাতক্ষীরায় ১ লাখ ৭০ হাজার এবং ঝালকাঠিতে ১ লাখ ৩৫ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। রাতে আরও ৮-১০ লাখ গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কার কথা জানান সংশ্লিষ্টরা। 
বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক সুশান্ত রায় বলেন, জেলায় ৪ লাখ ৮৫ হাজারের বেশি গ্রাহক রয়েছেন।

দমকা ও ঝোড়ো হাওয়ায় পল্লী বিদ্যুতের মূল সঞ্চালন লাইনের বিভিন্ন স্থানে গাছপালা উপড়ে পড়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ঝড়ে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়েছে। এতে কমবেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দুর্যোগ শেষ হলে লাইনে কাজ করে বিদ্যুৎসংযোগ পুনরায় চালু করা হবে। 

এদিকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। মোবাইল কোম্পানিগুলো বিকল্প উপায়ে নেটওয়ার্ক চালু রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। 

বিদ্যুৎ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে যথাসময়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা, খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি প্রয়োজনে বাতিল এবং অতিরিক্ত জনবল প্রস্তুত রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ-সংক্রান্ত যে কোনো প্রয়োজনে ১৬৯৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য বলা হয়েছে। 

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে গভীর সমুদ্রে তেল খালাস কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে বলে বিপিসি সূত্রে জানা গেছে। নিরাপত্তার কারণে জ্বালানি তেলবাহী দুটি জাহাজকে গভীর সমুদ্রে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ নৌরুটে তেল পরিবহন বন্ধ থাকবে। তবে রেমালের কারণে এলএনজি সরবরাহে কোনো সমস্যা হবে না বলে জানান পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা।