লক্ষ্মীপুরে এবার নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে খোদ দুই প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রধান শিক্ষকদের (সহকারী প্রিসাইডিং) সমন্বয় সভার প্রার্থীদের ভোট চাইতে সুযোগ দিয়েছেন। এটিওদের এমন কর্মকান্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উপজেলার সচেতন মহল।
এরআগে চেয়ারম্যান প্রার্থী সালাহ উদ্দিন টিপু পাঠদান বন্ধ রেখে শ্রেণিকক্ষে ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদে নিজ প্রতীক কাপ পিরিচে ভোট চেয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার প্রধান শিক্ষকদের মাসিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা প্রশাসন ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস এ আয়োজন করে। এসময় উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর প্রধান শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় প্রার্থীদের বক্তব্যের সময় উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন ও মাকসুদ হোসেন (প্রিসাইডিং কর্মকর্তা)। এসময় প্রার্থীরা নিজ প্রতীকে ভোট ও উপস্থিত সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। আরও জানা গেছে, শিক্ষকদের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী হাফিজ উল্লাহ (মাইক), ইউসুফ পাটোয়ারী (বই) ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ফরিদা ইয়াসমিন লিকা (ফুটবল)। এসময় তাদের সমর্থকরা উপস্থিত শিক্ষকদের হাতে তাদের প্রতীক সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করেন।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন প্রধান শিক্ষক বলেন, অনুষ্ঠান শুরুর কিছুক্ষণ পর প্রার্থীরা সভামঞ্চে উপস্থিত হন। তারা মঞ্চে থাকা উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর মাইকে নাম ঘোষনার পর তারা বক্তব্য দেন। এসময় প্রার্থীরা নিজ মার্কায় ভোট চান। পাশাপাশি নির্বাচিত হলে শিক্ষক ও শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করার নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কেউ কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, আসন্ন সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমরা সহকারী প্রিসাইডিং এর দায়িত্ব পালন করবো। এসময় আমাদের অনুষ্ঠানে প্রার্থীরা বক্তব্য দেওয়া কিংবা উপস্থিত থাকা নির্বাচনী আচরণ লঙ্ঘন। অথচ আমাদের সভায় এটিওগণ নির্বাচনী বিধি তোয়াক্কা না করে প্রার্থীদের ভোট চাইতে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। প্রধান শিক্ষকদের মাসিক সমন্বয় সভায় বক্তব্য রাখা একাধিক প্রার্থী বলেন, প্রধান শিক্ষকদের সভায় বক্তব্য রাখা নির্বাচন আচরণ বিধি লঙ্ঘন তা জানা ছিল না। শিক্ষকগণ ও তাদের পরিবার এ উপজেলার ভোটার। তাই তাদের কাছে ভোট ও দোয়া চেয়েছি। কাউকে অনৈতিক কোন সুবিধা দিয়ে নয়, একজন প্রার্থী হিসাবে বক্তব্য রেখেছি।
সভায় উপস্থিত থাকা ও অভিযুক্ত উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, প্রার্থীদের বক্তব্য দিতে আমরা বলিনি। তারা আমাদের পরিচিতও নয়। ওনারা জোরপূর্বক অনুষ্ঠানে প্রবেশ করে, মাইকে বক্তব্য দিয়েছেন। বসেছেন সভামঞ্চে আমাদের সঙ্গেও। আর কোন প্রার্থী থেকে আমি ও কোন শিক্ষক কোন প্রকার অনৈতিক সুবিধা নেয়নি। এবিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব, উন্নয়ন ও মানবসম্পদ) ও রিটার্নিং কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ বলেন, প্রধান শিক্ষকদের সভায় প্রার্থীদের বক্তব্য দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। এটি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন। বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। এঘটনার সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক তাঁর বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত হওয়া লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগে একজন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।