ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪ |

EN

Mahi & Dr Murad এর পুরনো টেলি আলাপচারিতার অডিও ক্লিপ ফাঁস করলো কারা?

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: বুধবার, ডিসেম্বর ৮, ২০২১

Mahi & Dr Murad এর পুরনো টেলি আলাপচারিতার অডিও ক্লিপ ফাঁস করলো কারা?
বিতর্কিত মন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান পদত্যাগ করেছেন। মুরাদ হাসানের পদত্যাগের পিছনে যে অডিও ক্লিপটি সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে সেটি হলো চিত্রনায়ক ইমন এবং চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে মুরাদ হাসানের টেলি আলাপচারিতা। এই টেলি আলাপচারিতাটা সাম্প্রতিক নয়। এটি এক বছরের বেশি আগের মাহি নিজেও স্বীকার করেছেন যে, এটি ২০২০ সালের। তাহলে প্রশ্ন উঠল যে, ২০২০ সালের অডিও ক্লিপ এখন বাজারে ছাড়লো কারা? বা এই অডিও ক্লিপটি রেকর্ড করলো কারা? এর উত্তরের ভিতরে অনেক রাজনৈতিক রহস্য লুকিয়ে আছে বলে অনেকেই মনে করছেন। এখন এই অডিও ক্লিপ নিয়ে আজ ডিবি এবং র‍্যাবের মুখোমুখি হয়েছিলেন ইমন। ডিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, মাহিয়া মাহি সৌদি আরব থেকে ঢাকায় ফিরলে তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। কিন্তু এই পুরো ঘটনায় তিনটি প্রশ্ন সামনে এসেছে।

প্রথমত, মাহিয়া মাহি এবং ইমনের সঙ্গে ডা. মুরাদ হাসানের কথোপকথন রেকর্ড করলো কারা? বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী এ ধরনের আড়িপাতা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। নিক্সন চৌধুরীর এক মামলায় অ্যাডভোকেট শাহদীন মালিক হাইকোর্টে আইন দেখিয়ে বলেছিলেন যে, নিক্সন চৌধুরীর সঙ্গে ডিসির যে টেলি আলাপচারিতা সেই টেলি আলাপচারিতা যারাই রেকর্ড করেছে তারাই শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছে এবং এই যুক্তির ভিত্তিতে নিক্সন চৌধুরীকে হাইকোর্ট জামিন দিয়েছিল। এখন প্রশ্ন হলো যে, একবছর বা দুই বছর আগের এই আলাপচারিতা কারা রেকর্ড করলো? এটি যারা রেকর্ড করেছে তারা কি অনুমতি নিয়ে করেছে বা তারা কি সঠিক কাজ করেছে কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে। কারণ এরকম যদি অডিও রেকর্ড করা হয় তাহলে এটি একটি ভয়ঙ্কর ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন বলে অনেকে মনে করছেন।

দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো যে, এই ফোনালাপটি এতদিন পরে ফাঁস করা হলো কেন? সাম্প্রতিক সময়ে ডা. মুরাদ খুব স্পষ্ট করে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথাবার্তা বলছিলেন। তার এই স্পষ্টবাদিতা কিছু কিছু বিষয় আপত্তিকর, আবার কিছু কিছু বিষয় সত্য। যেমন রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছিলেন সেই বক্তব্য একসময় বিএনপি-আওয়ামী লীগ এমনকি জামায়াতের বক্তব্য ছিলো। তিনি বিরোধী রাজনীতি নিয়ে যে চাঁচাছোলা সমালোচনাগুলো করতেন সেই সমালোচনাগুলো আলোচনার দাবি রাখে। তবে তিনি বেগম খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমা সম্বন্ধে যে কথাগুলো বলেছেন তা অরুচিকর, কদর্য এবং আপত্তিকর। তাহলে কি মুরাদ বলির পাঠা হয়েছিলেন? মুরাদকে কেউ ব্যবহার করেছিল? এই ব্যবহার করার পর তাকে বলির পাঠা বানিয়ে ছুড়ে ফেলে দেয়া হলো? নাকি মুরাদই কারো এজেন্ট হিসেবে সরকারকে বিব্রত করার জন্য এবং সরকারের ভাবমূর্তি নষ্টের জন্য এরকম খেলায় মেতেছিলেন? এই বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করা দরকার।

এখন নির্বাচনের দুই বছরের মত সময় আছে। এই সময়ে এরকম অনেক কিছুই ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে অনেকেই মনে করেন যে, মুরাদের এই ঘটনাটি আসলে একটি কৌশল। সরকার মুরাদকে ব্যবহার করেছে। যখন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়া এবং ছাত্রদের আন্দোলন তখন পুরো দৃষ্টিকে অন্যদিকে প্রবাহিত করা যায় করার ক্ষেত্রে মুরাদ তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছেন। আর এই কারণেই এতদিন পর তার এই অডিও টেপ বাজারে এসেছে। কোনটা সত্য কোনটা মিথ্যা সেটি পরের বিষয় কিন্তু রাজনীতিতে এই ধরনের খেলা যদি সামনের দিকে হতে থাকে তাহলে তা একটা ভয়ঙ্কর বার্তা দেবে বলে মনে হয়। মুরাদ যেটি করেছেন সেটি নিঃসন্দেহে গর্হিত, অরুচিকর এবং আপত্তিকর। একজন রাজনীতিবিদ এরকম শিষ্টাচার বিরোধী নোংরা কথাবার্তা বলতে পারেন না। কিন্তু দীর্ঘদিনের পুরনো ঘটনাটি যেভাবে সামনে আনা হলো সেটি কারা কিভাবে আনলো সেটিও খতিয়ে দেখা দরকার বলে অনেকে মনে করছেন।

সুত্র: বাংলাইনসাইডার