ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

গণশুনানিতে বসেই অভিযোগের সমাধান করলেন পলক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | আপডেট: বুধবার, মে ৮, ২০২৪

গণশুনানিতে বসেই অভিযোগের সমাধান করলেন পলক
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে টেলিযোগাযোগ সেবা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যক্রমের বিষয়ে গণশুনানি। এতে অংশ নিয়ে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকার বাসিন্দা আমানুর রহমান সরকারি প্রতিষ্ঠান বিটিসিএলের ইন্টারনেট সংযোগ চেয়েও পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন।

গণশুনানিতে প্রধান অতিথি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ওই গ্রাহকের অভিযোগ আমলে নিয়ে খিলগাঁও বিটিসিএল অফিসের ডিএমডিকে ফোন করেন। তিনি ৩ ঘণ্টার মধ্যে সংযোগ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকদের এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করে ৩-৭ দিনের মধ্যে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার নির্দেশ দেন।

বুধবার (৮ মে) আগারগাঁওয়ে সংস্থাটির প্রধান সম্মেলন কক্ষে এ গণশুনানিতে সশরীরে এবং জুম প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান, গ্রাহক, বাংলাদেশের ভোক্তা সংঘ, পেশাজীবীসহ অন্যরা অংশ নেন।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা প্রভাবশালী মহল এলাকাভিত্তিক ইন্টারনেট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব খাটাতে পারবেন না। যদি কেউ এ ধরনের কাজ করার চেষ্টা করে তাহলে আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শরণাপন্ন হব।

অপর এক গ্রাহক বিভিন্ন দোকান ও রাস্তায় সিম বিক্রির সময় বায়োমেট্রিকের মাধ্যমে আঙুলের ছাপ নেওয়ার পরও সিম না দেওয়ার অভিযোগ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিটিআরসির সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক খলিল উর রহমান বলেন, একবার আঙুলের ছাপ নেওয়ার পর তিন ঘণ্টার মধ্যে আবার ছাপ দিলে তা যাবে না। বায়োমেট্রিক সংক্রান্ত কোনো প্রতারণা হলে বিটিআরসিতে অভিযোগ করতে হবে।

হাইব্রিড পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে মোবাইল অপারেটরদের সেবা নিয়ে নানা অভিযোগ উঠে আসে। এর মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেটের মেয়াদ না থাকা এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবার পরিধি বাড়ানোর বিষয় উঠে আসে। মোবাইল অপারেটরদের টাকা ৩৫ দিন পর কেটে নেওয়ার বিষয়টি কিভাবে বাড়ানো হবে তা নিয়েও আলোচনা হয়। রাজধানীর অনেক এলাকায় অবৈধ ইন্টারনেট কানেকশন রয়েছে; কিন্তু সরকারি সংস্থা বিটিসিএল এখনো সব এলাকায় যেতে পারেনি। তাই সব জায়গায় বিটিসিএলের কানেকশন দেওয়ার অনুরোধ জানান গ্রাহকরা।

জবাবে বিটিআরসি মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খলিলুর রহমান বলেছেন, এখন মোবাইল অপারেটররা সীমিত পরিসরে আনলিমিটেড প্যাকেজ দিলেও গ্রাহক প্রণোদনায় তারা এ পরিসর বাড়াবেন বলে আশা করি।

গ্রাহকের এক প্রশ্নের জবাবে বিটিআরসির সিস্টেম অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের মহাপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান জানান- ভারত, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়ায় চালু হয়েছে ফাইভজি। দেশেও ফোরজিকে আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা চলছে। তবে বিটিআরসির মাধ্যমে একটি কমিটি হয়েছে কিভাবে ফাইভজিকে শক্তিশালী করা যায়। এছাড়া বহুতল ভবনের কারণে নেটওয়ার্ক দুর্বল হয়। ইএমএফ ভীতির কারণে অনেকেই টাওয়ার বসাতে দিচ্ছে না। ভয়েজ ওভার ওয়াইফাই চালুর প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া কিছু ল-ফুল ইন্টারসেপশন ইস্যু রয়েছে। ফলে বিদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা চলছে, যাতে রোমিংয়ের সময় ব্যক্তিগত তথ্য দিতে না হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে বিটিআরসি মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জুয়েল বলেছেন, ফাইভজি নিয়ে বিটিআরসির বড় কোনো ভাবনা আপাতত নেই। ফাইভজির চেয়ে ফোরজির মানোন্নয়ন এখন বিটিআরসির মূল লক্ষ্য। ফোরজির চূড়ান্ত মানোন্নয়ন করা গেলে, ফাইভজি থেকে প্রাথমিকভাবে যে প্রত্যাশিত সেবা, সেটা পাওয়া যাবে। ভবিষ্যতে প্রয়োজন মনে করলে সরকার ফাইভজি প্রযুক্তিতে জোর দেবে।

এছাড়া শুনানিতে স্পেকট্রাম বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, অ্যামাচার রেডিওর লাইসেন্স স্মার্টকার্ড করার প্রক্রিয়া চলছে। ট্যাক্সের বিষয়টি যাতে কমানো যায় সে বিষয়ে এনবিআরকে জানাব।

অপরদিকে আগামী বছর ঢাকার বাইরে রাজশাহীতে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ।

৫ম বারের মতো অনুষ্ঠিত এ গণশুনানিতে বিটিআরসি কমিশনার মো. আমিনুল হক, প্রকৌশলী শেখ রিয়াজ আহমেদ, ড. মুশফিক মান্নান চৌধুরী, মো. দেলোয়ার হোসাইন, মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ খলিল উর রহমান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মুস্তাফিজুর রহমান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জুয়েল এবং আশীষ কুমার কুন্ডু বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।