ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: বুধবার, আগস্ট ১১, ২০২১
গণটিকা
কর্মূচিতে টিকা নিয়ে কেন্দ্রে
কেন্দ্রে হুলুস্থুল যেনো কমছেই না। টিকা নিতে
মানুষের আগ্রহের প্রেক্ষাপটে এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি
আরও বাড়ছে। টিকা নিতে এসে
বিচ্ছিন্নভাবে ঘটছে নানা অপ্রত্যাশিত
ঘটনাও। এমন পরিস্থিতিতে মানুষেরও
যেমন হয়রানি বাড়ছে, তেমনি বিপাকে পড়তে হচ্ছে স্বাস্থ্য
বিভাগকেও। এদিকে হিসাব অনুযায়ী, হাতে থাকা প্রথম
ডোজের সব টিকাই ফুরিয়ে
গেছে। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও ফাইজারের প্রথম
ডোজ দেওয়া আগে থেকেই বন্ধ
রয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ হচ্ছে
মডার্নার প্রথম ডোজের টিকা প্রদান। এরপর
আগামী শনিবার বন্ধ হয়ে যাবে
সিনোফার্মের প্রথম ডোজ। এরকম পরিস্থিতিতে
আরও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে যাচ্ছে বলে
মনে করা হচ্ছে।
জানা
গেছে, আগস্টের মধ্যে আরো টিকা আসা
নিশ্চিত আছে বলেই এখনো
নির্ভার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন,
দ্বিতীয় ডোজের ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে এই দফায় খুবই
সতর্ক থাকা উচিত। কোনো
কারণে যদি আবারও টিকা
নিয়ে সংকট তৈরি হয়,
তবে ফের ঝামেলায় পড়তে
হতে পারে। বিশেষ করে প্রায় এক
মাস আগে থেকে যারা
নিবন্ধন করেও ঢাকাসহ বিভিন্ন
সিটি করপোরেশন এলাকায় টিকা পাচ্ছিলেন না
তাদের এত দিন অপেক্ষায়
থাকতে বলা হয়েছিল। হঠাৎ
করেই গতকাল মঙ্গলবার এক নির্দেশনায় বলা
হয়েছে, দ্বিতীয় ডোজ শুরু করার
জন্য কাল থেকে মডার্না
টিকার প্রথম ডোজ বন্ধ করা
হচ্ছে। ফলে দীর্ঘদিন অপেক্ষা
করেও যারা এখনো টিকা
পাননি তাদের কী হবে, সে
ব্যাপারে নির্দেশনায় কিছু বলা নেই।
সংশ্লিষ্ট
সূত্র জানায়, গতকাল পর্যন্ত প্রায় ২২ লাখ মানুষকে
মডার্নার প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া
হয়েছে। ফলে আর প্রায়
২৩ লাখ মডার্নার টিকা
হাতে আছে। যা রাখা
হয়েছে প্রথম ডোজ নেওয়া ব্যক্তিদের
দ্বিতীয় ডোজের জন্য। তাই এখন প্রথম
ডোজ চালিয়ে গেলে পরে দ্বিতীয়
ডোজ নিয়ে অক্সফোর্ডের টিকার
মতো সংকট তৈরি হতে
পারে। সে জন্যই ঝুঁকি
না নিয়ে দ্বিতীয় ডোজের
টিকা থেকে খরচ করতে
নারাজ কর্তৃপক্ষ। যদিও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যেসব
কেন্দ্রের হাতে মডার্নার প্রথম
ডোজের জন্য বরাদ্দ টিকা
রয়ে গেছে সেগুলো দ্রুত
শেষ করে দ্বিতীয় ডোজের
কাজ শুরু করতে হবে।
একই নির্দেশনায় আগামী শনিবার সারা দেশে সিনোফার্মের
দ্বিতীয় ডোজের টিকা শুরু করতে
বলা হয়েছে। এই নির্দেশনার ফলে
প্রথম ডোজের টিকা আবারও অনেকটাই
থমকে যাওয়ার অবস্থায় এসেছে।
ঢাকা
মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বলেন, ‘টিকা
দেওয়া বন্ধ হচ্ছে না।
মডার্নার টিকা যতক্ষণ হাতে
আছে, ততক্ষণ চলবে। এরপর আবার যে
টিকা দেওয়ার নির্দেশনা আসবে, সে অনুসারে আমরা
টিকা চালিয়ে যাব।’
স্বাস্থ্য
অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, গতকাল
চীন থেকে আসা সিনোফার্মের
১৭ লাখ টিকা নিয়ে
এ পর্যন্ত দেশে চারটি ব্র্যান্ড
মিলে মোট টিকা এসেছে
দুই কোটি ৭২ লাখ
৪৭ হাজার ৯২০ ডোজ। এর
মধ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার এক কোটি ১৮
লাখ ৪৭ হাজার ৩০০
ডোজ, ফাইজারের এক লাখ ৬২০
ডোজ, সিনোফার্মের ৯৮ লাখ ডোজ
ও মডার্নার ৫৫ লাখ ডোজ।
এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশে মোট টিকা
দেওয়া হয়েছে এক কোটি ৯৬
লাখ ৭১ হাজার ৬২০
ডোজ। এ ছাড়া টিকার
জন্য গতকাল বিকেল পর্যন্ত নিবন্ধন করেছে প্রায় তিন কোটি মানুষ।
সংশ্লিষ্ট
সূত্রগুলো বলছে, গতকাল টিকা দেওয়া শেষে
হাতে থাকা ৭৫ লাখ
৭৬ হাজার ৩০০ ডোজ টিকার
মধ্যে জাপান থেকে আসা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ১৬ লাখ টিকার
প্রায় সবটাই দ্বিতীয় ডোজের জন্য রাখা। যা
থেকে গেল তিন দিনে
প্রায় তিন লাখ টিকা
এরই মধ্যে দেওয়া হয়েছে। সেই মজুদ থেকে
প্রথম ডোজ দেওয়া হচ্ছে
না। ফাইজারের দ্বিতীয় ডোজের জন্য রাখা ৫০
হাজার থেকে দ্বিতীয় ডোজ
চলছে। এরই মধ্যে ২৭
হাজার ৫৯০ ডোজ
দেওয়া হয়েছে। আরো আগেই এই
মজুদ থেকে প্রথম ডোজ
দেওয়া বন্ধ রয়েছে। মডার্নার
৫৫ লাখের মধ্যে গতকাল পর্যন্ত প্রায় অর্ধেক চলে গেছে প্রথম
ডোজের জন্য। ফলে বাকিটা দ্বিতীয়
ডোজের জন্য রেখে কাল
থেকে বন্ধ করা হচ্ছে
প্রথম ডোজ। সিনোফার্মের ৬৮
লাখ ২৭ হাজার ৩৮৩
প্রথম ডোজ ও দুই
লাখ ১১ হাজার ৮০০
দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে
গতকাল পর্যন্ত। ফলে প্রথম ডোজের
আরো ৬৮ লাখ ২৭
হাজারের বেশি টিকা হাতে
রাখা দরকার আগের পরিকল্পনা অনুসারে,
কিন্তু গতকাল সন্ধ্যায় আসা টিকাসহ সিনোফার্মের
ডোজ হাতে থাকবে ২৮
লাখের মতো। ফলে এখনই
এই টিকার প্রায় ৪০ লাখ ডোজ
ঘাটতি হয়ে গেছে।