Can't found in the image content. চট্টগ্রামে লাগামহীন নিত্যপণ্যের দাম | ফ্রিডম বাংলা নিউজ
ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

চট্টগ্রামে লাগামহীন নিত্যপণ্যের দাম

চট্রগ্রাম ব্যুরো | আপডেট: শনিবার, মে ৪, ২০২৪

চট্টগ্রামে লাগামহীন নিত্যপণ্যের দাম
চট্টগ্রামে নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীন। কোনো কারণ ছাড়াই বাড়ছে মুরগি, ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, রসুন, আলু, মাছ ও মাংসের দাম। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে দ্বিগুণ দামে আলু বিক্রি হলেও প্রশাসন নির্বিকার। এছাড়াও বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম।

২৯ পণ্যের বেশিরভাগই বিক্রি হচ্ছে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত দামে। দাম বেঁধে দেওয়ার ২ মাস পরও বাজারে তার কোনো প্রভাব নেই। বেশিরভাগ পণ্যই আগের মতো অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে।

দেশের বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের দাম কিছুটা সহনীয় হলেও খুচরা বাজারে অতিরিক্ত দাম আদায় করা হচ্ছে। উপজেলা পর্যায়ে আরও চড়া দাম আদায় করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।

পেঁয়াজের দাম কয়েক দিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১২ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। খুচরা বাজারে ভালোমানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি ৭৫ থেকে ৭৮ টাকা। মাছ ও মাংসের দাম আগের মতোই আকাশচুম্বী। আড়তদারদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা বেপরোয়াভাবে আলুর দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন।

ব্যবসায়ীরা জানান, বেশিরভাগ নিত্যপণ্য ও ভোগ্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। কোনো কারণ ছাড়াই ব্যবসায়ীরা এসব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। আলু বিক্রি হচ্ছে সরকার নির্ধারিত দামের দ্বিগুণের চেয়ে বেশি দামে। সরকার নির্ধারিত আলু দাম ২৮ দশমিক ৫৫ টাকা। কিন্তু বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা দামে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, চট্টগ্রামে আলুর বাজার সিন্ডিকেটের কবলে পড়েছে। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন হিমাগার থেকে আলুর সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও অদৃশ্য কারণে বাড়ছে দাম। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ ও রিয়াজউদ্দিন বাজারের আড়তদাররা সিন্ডিকেট করে বিক্রি কমিয়ে দিয়েছেন। তারা আলুর কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সরকার নির্ধারিত দামে কোথাও আলু বিক্রি হচ্ছে না। বাজারে প্রতি কেজি পুরাতন আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকার বেশি দামে।

আড়তদার বদরুল হাসান জানান, উত্তরবঙ্গের আড়তদাররা আলুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। এ কারণে আমাদেরও অতিরিক্তি দামে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে। আমরা কমিশনে আলু বিক্রি করি। তবে আলুর সরবরাহ বাড়লে আলুর দাম কমে আসবে। সিন্ডিকেটে আলু বিক্রির সুযোগ নেই।
 
ঈদুল ফিতরের আগে নগরীর বাজারে সোনালি মুরগির কেজি ৩৩০ থেকে ৩৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে ৬০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে এখন ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুরগি বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে সোনালি মুরগির সরবরাহ সংকট চলছে, যে কারণে দাম বেড়েছে। এর আগে কখনো এত দামে সোনালি মুরগি বিক্রি হয়নি বলেও জানান তারা।

ক্রেতারা বলছেন, সংকটের অজুহাত দিয়ে সিন্ডিকেট করে রেকর্ড দামে সোনালি মুরগি বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। শুক্রবার নগরীর চকবাজার, বহদ্দারহাট, কাজীর দেউড়ি, রিয়াজউদ্দীন ও কর্ণফুলীসহ বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, অতিরিক্ত দাবদাহের কারণে বাজারগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কিছুটা কম। মুরগির দোকানের খাঁচাগুলোতে পর্যাপ্ত সোনালি মুরগি দেখা গেছে। তারপরও সরবরাহ সংকটের কথা বলে রেকর্ড দামে সোনালি মুরগি বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে সাধারণ ক্রেতাদের সোনালি মুরগি না কিনে ব্রয়লার মুরগি বেশি কিনতে দেখা গেছে।

সোনালি মুরগি ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যদিও গত সপ্তাহে সোনালি মুরগি বিক্রি হয় ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকায় এবং গত এক মাস আগে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকায় বিক্রি হয়। ব্রয়লার মুরগির দামও বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০ টাকার বেশি। ঈদের পর ব্রয়লার মুরগির দাম কমে ১৯০ টাকা থেকে ২০০ টাকায় নেমে এসেছিল। এখন আবার দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২০০ থেকে ২২০ টাকায়।

নিত্যপ্রয়োজনীয় আরেক মসলা পণ্য রসুনের দাম বেড়েছে। বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি ও আমদানি করা উভয় প্রকার রসুনের দাম কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেড়েছে। শুক্রবার বাজারভেদে দেশি রসুন ১৮০-২০০ টাকা ও আমদানি করা রসুন ২৩০-২৪০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। দেশি আদার দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ২৪০ টাকা হয়েছে।

চট্টগ্রামে গত কয়েকদিনে বস্তাপ্রতি চালের দাম বেড়েছে ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। বাজারে মোটা চালের কেজি গত এক সপ্তাহে ২ টাকা বেড়ে ৫২ টাকা হয়েছে। আর সরু চাল তিন টাকা বেড়ে ৬৫ থেকে ৭৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজার ঘুরে এ ধরনের চালের দাম আরও বেশিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

সূত্র জানায়, ১৫ দিন আগে যে মোটা চালের (স্বর্ণা) কেজি ৫১-৫২ টাকা ছিল তা এখন ৫৩-৫৪ টাকা বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি মানের চালের (পাইজাম ও বিআর-২৮) কেজি ৫৬-৫৭ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৮-৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যে বাজারে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে মাঝারি মানের চালের। কেজি প্রতি মাঝারিমানের চালের দাম ২ থেকে ৪ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর মিনিকেট ও নাজিরশাইলের মতো সরু চালের দাম কেজিপ্রতি দাম ৬৪-৭৬ টাকা থেকে বেড়ে ৬৬-৮০ টাকা হয়েছে। বাজারে নাজিরশাইল চালের নানা ধরন আছে। মানভেদে সেগুলো অবশ্য আরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।