ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, মে ১৯, ২০২৪ |

EN

ইরান ইসরাইল উত্তেজনা

ইসরাইলে হামলার পর ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র-ইইউর নতুন নিষেধাজ্ঞা, যা বলল রাশিয়া

বিশ্ব বাংলা ডেস্ক | আপডেট: বুধবার, এপ্রিল ১৭, ২০২৪

ইসরাইলে হামলার পর ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র-ইইউর নতুন নিষেধাজ্ঞা, যা বলল রাশিয়া

ছবি: সংগৃহীত

ইসরাইলের ওপর পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরান। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইরানের ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ভাবছে।

ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ইউএস ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন বলেন, এ বিষয়ে আগামী দিনগুলোতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি আশা করছেন। অন্যদিকে ইইউ পররাষ্ট্রনীতির প্রধান জোসেপ বোরেল বলেন, ব্লক (ঐক্যবদ্ধ কিছু দেশ) এটি নিয়ে কাজ করছে।

ইসরাইল তার মিত্রদের প্রতি তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার অনুরোধ করেছে।

গত বছরের অক্টোবরে ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়েছে।

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে সীমিত করার জন্য যে বিস্তৃত চুক্তি করা হয়েছিল তার সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল এই নিষেধাজ্ঞাসমূহ।

তবে যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ ও যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশ পূর্বের নিষেধাজ্ঞা বজায় রেখেছে এবং নতুন কিছু নিষেধাজ্ঞা যুক্ত করেছে।

সোমবার ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারজি হালেভি বলেছেন, ইরানের হামলার জবাব না দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে না।

এর আগে গত ১৩ এপ্রিল শনিবার ইসরাইলের ওপর প্রথমবারের মতো সরাসরি হামলা করে ইরান। এ হামলায় ইরান, ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেন থেকে ৩০০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন নিক্ষেপ করা হয়েছে। তবে সেসবের বেশিরভাগই ইসরাইল এবং তার মিত্রদের দ্বারা ধ্বংস হয়েছে।

এ হামলাটি ১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে ইসরাইলি বিমান হামলার প্রতিশোধ ছিল বলে জানিয়েছে তেহরান। সিরিয়ার সেই হামলায় ১৩ জন নিহত হযন।

মঙ্গলবার মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি মিজ ইয়েলেন বলেছেন, নিষেধাজ্ঞার প্রতি সম্মান রেখেই আমি সম্পূর্ণ আশাবাদী যে আগামী দিনগুলোতে আমরা ইরানের বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করব।

তিনি বলেন, আমরা নিষেধাজ্ঞার টুলসগুলো প্রাক্-নিরীক্ষণ করিনি। কিন্তু ইরানের সন্ত্রাসী অর্থায়ন ব্যাহত করার সব বিকল্পই আলোচনার টেবিলে থাকবে।

ইরানের তেল রপ্তানি একটি সম্ভাব্য ক্ষেত্র, যা আমরা খতিয়ে দেখতে পারি যোগ করে তিনি বলেন, ইরান কিছু তেল রপ্তানি করছে। সেখানেও আমরা কিছু পদক্ষেপ নিতে পারি।

মিসেস ইয়েলেন বলেন, ইরানকে বিচ্ছিন্ন করে প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোকে তার অর্থায়ন করার ও ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধকে সমর্থন করার ক্ষমতাকে ব্যাহত করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে আর্থিক নিষেধাজ্ঞাগুলো ব্যবহার করেছে। এর মধ্যে আছে পাঁচ শতাধিকেরও বেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্যবস্তু করা।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান পরে বলেছিলেন যে নতুন নিষেধাজ্ঞাগুলো ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন কর্মসূচির পাশাপাশি দেশটির রেভল্যুশনারি গার্ড ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কেও লক্ষ্যবস্তু করবে।

তিনি বলেন, আমরা আশা করি যে আমাদের মিত্র এবং অংশীদাররা শিগগিরই তাদের নিজস্ব নিষেধাজ্ঞাগুলো বাস্তবায়ন করবে। এই নতুন নিষেধাজ্ঞা ও অন্যান্য পদক্ষেপ ইরানের সামরিক সক্ষমতা এবং কার্যকারিতাকে দুর্বল করতে ও এর সমস্যাজনক আচরণ মোকাবিলায় চাপ জারি রাখবে।

ইইউর শীর্ষ কূটনীতিক মি. বোরেল বলেন, কিছু সদস্য দেশ ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞাকে আরও বাড়াতে বলেছে। 

নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় কাজ শুরু করার জন্য ইইউর কূটনৈতিক পরিষেবার কাছে অনুরোধ জানাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কার্টজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (পূর্বের টুইটার)-এ একটি পোস্টে নিষেধাজ্ঞা গ্রহণের দিকে ইতিবাচক প্রবণতাকে স্বাগত জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মধ্যে আলাপের পর ক্রেমলিন বলেছে, ইরানের মিত্র রাশিয়াও তাদের সংযমের আহ্বান জানিয়েছে।

ক্রেমলিন বলছে, ভ্লাদিমির পুতিন আশা করছেন যে সমস্ত পক্ষ যুক্তিসঙ্গতভাবে সংযম দেখাবে এবং এই পুরো অঞ্চলের জন্য বিপর্যয়কর পরিণতি ডেকে আনে, এমন নতুন কোনো সংঘর্ষকে প্রতিরোধ করবে।

সূত্র: বিবিসি