জ্বালানি খাতের উপকরণ আমদানির বড় ধরনের দেনা পরিশোধ করায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৫৪ কোটি ডলার কমেছে। ২১ মার্চ দেশের নিট রিজার্ভ ছিল এক হাজার ৯৯৯ কোটি ডলার।
বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে তা কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৯৪৫ কোটি ডলারে। এদিকে এক মাসের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে ১১২ কোটি ডলার। ২৯ ফেব্রুয়ারি নিট রিজার্ভ ছিল দুই হাজার ৫৭ কোটি ডলার। সাম্প্রতিক সময়ে এটিই সবচেয়ে বেশি রিজার্ভ কমে যাওয়ার ঘটনা। এর আগে গত বছরের জুলাই আগস্টে রিজার্ভ এত বেশি মাত্রায় কমেছিল। এরপর আর এত বেশি মাত্রায় কমেনি।
সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ধরে রাখতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর চাহিদার বিপরীতে ডলারের জোগান দিচ্ছিল কম। যে কারণে ডলার সংকটে পড়ে অনেক ব্যাংক আমদানির বকেয়া দায় পরিশোধ করতে পারেনি। সেগুলোর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। এখন মেয়াদ শেষ হওয়ায় ওইসব দেনা পরিশোধ করতে হচ্ছে। ফলে রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে যে ডলার ধার করে রিজার্ভ বাড়িয়েছে তার মধ্যে সাড়ে ছয় কোটি ডলার ইতোমধ্যে পরিশোধ করতে হয়েছে। এসব কারণে রিজার্ভ কমেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখন বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ডলার ধার করে রিজার্ভ বাড়াচ্ছিল তখনই বিশ্লেষকরা বলেছিলেন, এতে রিজার্ভে ওঠানামা বেড়ে যাবে। এখন সেটিই ঘটছে।
জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি এই দুমাসের এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দেনা পরিশোধের জন্য ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ডলার ধার করে রিজার্ভ বাড়িয়েছে। ফেব্রুয়ারির শেষ দিনে রিজার্ভ ছিল দুই হাজার ৫৭ কোটি ডলার। আকুর দেনা বাবদ ১২৯ কোটি ডলার শোধ করার পর রিজার্ভ আবার এক হাজার ৯৯৮ কোটি ডলারে নেমে আসে। এরপর রিজার্ভ বেড়ে আবার দুই হাজার কোটি ডলার অতিক্রম করে। গত সপ্তাহে তা আবার কমে এক হাজার ৯৯৯ কোটি ডলারে নেমে যায়। এ সপ্তাহে জ্বালানির বকেয়া পরিশোধ ও বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ধার করা ডলার ফেরত দেওয়ায় তা আরও কমে এক হাজার ৯৪৫ কোটি ডলারে নেমেছে।
ওই সময়ে গ্রস রিজার্ভও কমেছে। গ্রস রিজার্ভ ২৫ বিলিয়ন (১০০ কোটিতে এক বিলিয়ন) ডলার থেকে নেমে ২৪ বিলিয়ন হয়েছে। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি গ্রস রিজার্ভ ছিল দুই হাজার ৫৭৬ কোটি ডলার। বৃহস্পতিবার তা কমে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৪৮১ কোটি ডলার। এক মাসে গ্রস রিজার্ভ কমেছে ৯৫ কোটি ডলার। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে ৪৪ কোটি ডলার।