ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪ |

EN

রাখাইনে আরাকান আর্মির হামলায় ৮০ জান্তা সেনা নিহত

বিশ্ব বাংলা ডেস্ক | আপডেট: বুধবার, ফেব্রুয়ারী ২৮, ২০২৪

রাখাইনে আরাকান আর্মির হামলায় ৮০ জান্তা সেনা নিহত

ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনে সামরিক বাহিনীর কমপক্ষে ৮০ জান্তা সেনাকে হত্যার দাবি করেছে স্থানীয় বিদ্রোহীগোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। 

রাখাইনের উপকূলীয় রামরি শহরে তিন দিনের সংঘর্ষে ওই জান্তা সেনাদের হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি।

মঙ্গলবার থাইল্যান্ডভিত্তিক মিয়ানমারের ইংরেজি দৈনিক দি ইরাবতির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরাকান আর্মির সেনাদের এগিয়ে আসা ঠেকাতে গত শনিবার সামরিক বাহিনীর চারটি হেলিকপ্টারে করে ১২০ সেনাকে রামরি শহরে মোতায়েন করা হয়। ওই সৈন্যদের আয়েইয়ার্দি অঞ্চলের কিয়নপ্যাউ শহর ও রাখাইনের অ্যান শহরে অবস্থিত ৩৬তম ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন ও ৩৭৩তম লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন থেকে উড়িয়ে নেওয়া হয়।

আরাকান আর্মির দাবি, জান্তা বাহিনীর ব্যাপক বিমান হামলা সত্ত্বেও শনিবার সংঘর্ষের সময় অন্তত ৬০ সেনাকে হত্যা করেছেন আরাকান আর্মির যোদ্ধারা। সংঘর্ষের পর ওই এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ সেনাদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

রাখাইনের জাতিগত এই সশস্ত্র গোষ্ঠী বলেছে, সোমবার উপকূলীয় শহরটি থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টার সময় আরও ২০ জান্তা সেনাকে হত্যা করা হয়েছে। জান্তা সেনাদের জন্য হারবিন ওয়াই-১২ নামে সামরিক পরিবহণ বিমান থেকে ফেলা গোলাবারুদ ও খাদ্যসামগ্রীও জব্দ করেছেন এএ যোদ্ধারা।

রামরি শহরে জান্তা সেনাদের সঙ্গে আরাকান আর্মির যোদ্ধাদের সংঘর্ষ শুরু হয় গত বছরের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে। ওই সময় রামরি শহরের দক্ষিণে অং চ্যান থার পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত জান্তা ঘাঁটিতে হামলা চালায় আরাকান আর্মি। তখন থেকেই শহরটিতে আকাশ, সমুদ্র ও স্থলপথে অবিরাম বোমাবর্ষণ করে আসছে জান্তা বাহিনী। জান্তার গোলা ও বোমার আঘাতে রামরি শহরের বিভিন্ন হাসপাতাল, বাজারসহ বাড়িঘর ও ভবন ধ্বংস হয়েছে।

এদিকে রাখাইনের মিনবিয়া শহরের কাছের কাননি গ্রামে জান্তা বাহিনীর নবম সেন্ট্রাল মিলিটারি ট্রেনিং স্কুলে সোমবার থেকে হামলা শুরু করেছে আরাকান আর্মি। তবে সামরিক বাহিনী সেখানকার ঘাঁটি রক্ষায় বিমান থেকে আরাকান আর্মির যোদ্ধাদের অবস্থান লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে।

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি আক্রমণ শুরু করার পর থেকে আরাকান আর্মির যোদ্ধারা জান্তা সেনাদের কয়েকটি ফাঁড়ির দখল নিয়েছে। সোমবারও পোন্নাগিউন, মংডু ও বুথিডং শহরেও জান্তা সৈন্যদের ঘাঁটি দখলে নিতে হামলা চালিয়েছে আরাকান আর্মি। 

এএ বলেছে, রাখাইনজুড়ে একের পর এক লজ্জাজনক পরাজয়ের প্রতিশোধে জান্তা সেনারা বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে নির্বিচার হামলা চালাচ্ছে। মঙ্গলবার রাত ১টা ৪৫ মিনিটের দিকে মিনবিয়া শহরের মিন ফু গ্রামের একটি হাসপাতালে জান্তা বাহিনী যুদ্ধবিমান থেকে বোমা হামলা চালিয়েছে। এতে হাসপাতালের অনেক রোগী ও কর্মচারী আহত হয়েছেন। হাসপাতালের কর্মীরা ওই সময় আটক জান্তা সেনা এবং তাদের পরিবারের সদস্যসহ রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছিলেন।

পরে মঙ্গলবার সকালের দিকে মিনবিয়ার থাই কান গ্রামে এবং এর পার্শ্ববর্তী একটি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত লোকজনকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে জান্তা বাহিনী। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, জান্তা সেনাদের এই হামলায় অন্তত ২৫ বেসামরিক আহত হয়েছেন। হামলায় স্কুল ভবন, বাড়িঘর ও যানবাহন ধ্বংস হয়েছে।

গত ১৩ নভেম্বর থেকে উত্তর রাখাইন ও প্রতিবেশী দক্ষিণ চিন রাজ্যের পালেতওয়া শহরজুড়েও জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে আসছে দেশটির এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী। আরাকান আর্মি বলেছে, রাখাইনের রাজধানী সিত্তের কাছের পাউকতাও শহর এবং পুরো পালেতওয়াসহ অন্যান্য এলাকায় মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর অন্তত ১৭০টি অবস্থান দখল করেছে তাদের যোদ্ধারা।