ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪ |

EN

মেট্রোরেলে চলাচলের দিকনির্দেশনায় নারীকণ্ঠ, কার কণ্ঠস্বর এটি?

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | আপডেট: বুধবার, ফেব্রুয়ারী ২১, ২০২৪

মেট্রোরেলে চলাচলের দিকনির্দেশনায় নারীকণ্ঠ, কার কণ্ঠস্বর এটি?
বিশ্বের সবচেয়ে ধীরগতির শহর ঢাকায় উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল সেবা শুরু হয় গত বছরের ৫ নভেম্বর। ৪ নভেম্বর এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

এর আগে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু ছিল। প্রথমবারের মতো ফার্মগেট, বাংলাদেশ সচিবালয় ও মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলে যেতে পারা যাত্রীরা বলেন, স্থানভেদে যানজট ঠেলে গন্তব্যে পৌঁছতে এক ঘণ্টা থেকে আড়াই ঘণ্টা পর্যন্ত লাগত। এখন তারা সেসব গন্তব্যে যেতে পারছেন ১০ মিনিট থেকে আধা ঘণ্টার মধ্যে। পথে সময় নষ্ট না হওয়ার বিষয়টি তাদের এক ধরনের প্রশান্তি দেয়।

মেট্রোরেলে যাত্রার পাশাপাশি যাত্রীরা আরেকটি বিষয়ের ওপর দৃষ্টিপাত করেছেন। সেটি হলো একটি নারীকণ্ঠ। মেট্রোরেলে চলাচলের জন্য একটি নারীকণ্ঠে কিছুক্ষণ পরপর দিকনির্দেশনা শোনা যায়; যে বিষয়টি যাত্রীদের মধ্যে প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। তাকে চেনা বা জানার আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে তাদের মনে। 

তার নাম কিমিয়া অরিন। তার ভয়েস নির্বাচন করা হয়েছে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে। সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন কিমিয়া অরিন। সেখানেই মেট্রোরেলে কণ্ঠ দেওয়ার কথা জানান তিনি।

কিমিয়া জানান, তিনি বাংলাদেশে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করেছেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনে ইংরেজি সংবাদ পাঠিকা হিসেবে কাজ করেছেন। কাজ করেছেন বাংলাদেশ বেতারেও।

তিনি আরও জানান, দেশে ৯ বছর কাজ করার পর তিনি বর্তমানে মাস্টার্স করার জন্য কানাডা গিয়েছেন। আগামী বছর পড়াশোনা শেষ করবেন কিমিয়া। তার পরিবারে রয়েছেন তার স্বামী এবং ছোট ভাই। কিমিয়ার স্বামীর ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি রয়েছে।

মেট্রোরেলে কণ্ঠ দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, শুরুর দিকে সবাইকে বললে কেউ বিশ্বাস করত না এটা তার ভয়েস। সবাই ভাবত এটি মেশিন জেনারেটেড ভয়েস। কিন্তু আমি লিংক দিয়ে বলতাম, না আমি এই ভয়েস দিয়েছি। 

তিনি আরও বলেন, শুরুতে যখন আমি মেট্রোরেলে নিজের ভয়েস শুনি, খুবই এক্সাইটেড হয়ে গিয়েছিলাম। সবাই আমার দিকেনির্দেশনা শোনার জন্য অপেক্ষা করছেন, এটি দারুণ ব্যাপার মনে হয়েছে। ভীষণ ভরসার, ভালো লাগার।

কিমিয়া বলেন, প্রথমদিকে বিটিভির একজন রিপোর্টার আমাকে বললেন, আপনি মেট্রোরেলে ভয়েস দিতে চাইলে সিভি দিতে পারেন। আমি তার কথায় সিভি দেই। কাজের স্যাম্পল হিসেবে আমার ইউটিউব থেকে ভিডিওগুলোও দেওয়া হয়। শুরুতে হয়েছিল টিকিট ভেন্ডিং মেশিনের কাজ। তখন ছিল করোনাকালীন মাঝের দিক। অনেকবার ভয়েস দেওয়ার পর নানাভাবে বিশ্লেষণ করে সর্বশেষ কিমিয়া অরিনের ভয়েসটিই নির্বাচিত হয়। আর এখন তার ভয়েসটিই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

বর্তমানে মেট্রোরেল ১৭৮ বার যাতায়াত করছে। গড়ে প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার যাত্রী পরিবহণ করে। আর প্রতিদিন একটি ট্রেনে ১ হাজার ৭৫০ জন যাত্রী যাতায়াত করছেন। মেট্রোরেল চালু হওয়ার পরপরই তা রাজধানীবাসীর জন্য জনপ্রিয় বাহনে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ যাওয়া-আসা করছেন মেট্রোতে চেপে। ১০ মিনিট পরপর মেট্রোরেল ছাড়ছে। উত্তরা-মতিঝিল রুটে চালু হওয়ার পর থেকেই যাত্রীদের আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে ঢাকার প্রথম মেট্রোরেল (এমআরটি লাইন-৬)। এর প্রভাবে যাত্রীসংকটে পড়ছে মতিঝিল থেকে উত্তরা ও মিরপুরে যাতায়াতকারী বাসগুলো। মেট্রোরেলের কল্যাণে বাস এড়াতে পেরে যাত্রীরা স্বস্তির অনুভূতি জানালেও বাসমালিকরা বিপাকে পড়েছেন। তারা বলছেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে যাত্রীসেবার উন্নয়নে মনোযোগ দেবেন।

এশিয়ার মধ্যে ২২তম দেশ হিসেবে মেট্রোরেল সিস্টেম চালু হয়েছে বাংলাদেশে।