সংসদ অধিবেশন থাকায় বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে যাচ্ছেন না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তপন কান্তি ঘোষ বলেন, বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে আসার কথা থাকলেও সেটা বাতিল হয়েছে। সংসদ অধিবেশনসহ অন্যান্য কারণে তিনি এখন আসছেন না। পড়ে আসবেন। সেটা কবে তারিখ এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।
বাণিজ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর পরিদর্শন উপলক্ষে চলমান প্রকল্প, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন অগ্রগতি, গত দেড় দশকে মন্ত্রণালয়ের অর্জন, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাসহ সামগ্রিক বিষয় সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করতে তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সাজানো গোছানো হচ্ছে। দেখা গেছে, বাণিজ্য ভবনে নতুন করে রং করা হচ্ছে। যাওয়া আসার পথগুলোও পরিপাটি করা হচ্ছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে নির্দেশনাও জারি করা হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে সচিবালয়ে প্রবেশ করতে হবে। এছাড়াও মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবদের গাড়ি সচিবালয়ের ভেতরে পার্কিংয়ে থাকবে। আর সচিববালয়ে কর্মরত অন্যান্য কর্মকর্তাদের সচিবালয়ের ভেতরে নামিয়ে দিয়ে গাড়িগুলো জাতীয় ঈদগাহ মাঠে পার্কিংয়ে রাখতে হবে।
মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবদের গানম্যানরা অস্ত্র বহন করবেন না। ৮ ফেব্রুয়ারি সচিবালয়ের ভেতরে কোনো সভার আয়োজন করা যাবে না। সাত ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টা থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সচিবালয়ে দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ থাকবে।
জানা গেছে, টানা চতুর্থবারের মতো আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই দ্রব্যমূল্য নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে। সামনে রমজান মাস থাকায় সরকারের প্রধান চিন্তা নিত্যপণ্যের দাম। নানা উদ্যোগ নেওয়ার পরও দাম নিয়ন্ত্রণে তেমন কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কেই পরিদর্শনের শীর্ষে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরের ধাপেই রেখেছেন কৃষি মন্ত্রণালয় পরিদর্শন।
প্রসঙ্গ, ২০১৯ সালে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক পরিদর্শন শুরু করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার চতুর্থবার নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করতে যাচ্ছেন। গত আমলে সরকারপ্রধানের মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের কারণে সচিবালয়ের কাজে গতি এসেছিল। এবারও একই ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছেন তিনি।
জানা গেছে, নতুন সরকার গঠন হলে সেই সরকারের নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারের সঙ্গে মিলিয়ে কর্মসূচি গ্রহণ করে মন্ত্রণালয়গুলো। আওয়ামী লীগের এবারের নির্বাচনী ইশতেহারের স্লোগান ছিল ‘স্মার্ট বাংলাদেশ: উন্নয়ন দৃশ্যমান, বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’।
আওয়ামী লীগের ইশতেহারে দ্রব্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মতো ১১টি বিষয়ে বিশেষ অগ্রাধিকারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচনী ইশতেহারে এসব বিষয় লিখিতভাবে থাকলেও সরকারপ্রধান প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয়ে নিজে গিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উৎসাহ দিতে চান। যাতে তার সরকারের নেওয়া পরিকল্পনার বিষয়ে সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্তরিকভাবে কাজ করেন।