'আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। আমার মেয়েকে এতিম করা হয়েছে। আমাকে স্বামী হারা করা হয়েছে। কুয়েট কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে মামলা না করলে আমি নিজে বাদী হয়ে মামলা করবো। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। যারা এই হত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের ফাঁসি চাই।’
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ডক্টর মো. সেলিম হোসেনের (৩৮) স্ত্রী সাবিনা খাতুন রিক্তা এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করে কথাগুলো বলছিলেন।
সাবিনা বলেন, গত ৩০ নভেম্বর হাসিমুখেই ক্যাম্পাসে যান ড. সেলিম। বিধ্বস্ত হয়ে বাসায় ফিরে এসে জানান, ছাত্ররা তাকে ধরে নিয়ে যায়। তখন তার চোখ-মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছিলো তার অবস্থা খুব খারাপ। সেই অবস্থায় এরপর তিনি গোসল করতে বাথরুমে ঢোকেন। কিন্তু অনেক সময় পরও বের হচ্ছিলেন না। এরপর চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। বাথরুমের দরজা ভেঙে তাকে বসা অবস্থায় দেখি। কিন্তু চোখ বন্ধ। মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছিল। মুখে পানি ছিটা দিলে চোখ খোলে। কিন্তু কথা বলতে পারেনি। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, ছয় বছরের প্রেম ছিল আমাদের। তারপর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। এরপর কেটে গেছে আরও ১০ বছর। সংসারের কোনো কাজই তাকে বলা লাগতো না। বাসায় রাতের মশারিও নিজে টানাতো। বাসায় থাকাকালে আমাকে কোনো কাজ করতে দিতো না। চাকরিতে চলে গেলেও বাসার খোঁজখবর রাখতো সবসময়। সেই মানুষটার এমন মৃত্যু আমি সইতে পারছি না। আট বছর আগে পিএইচডি করতে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে আমাকে সঙ্গে নিয়েই যায়। সেখানে চার বছর থাকার পর দেশে ফিরে এসে কুয়েটে যোগ দেয়। করোনার মধ্যে প্রফেসর হিসেবে পদোন্নতি পায়। একইসঙ্গে হলের প্রভোস্ট হয়।