ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪ |

EN

সানস্ক্রিন ব্যবহারের আগে যেসব বিষয় জানা জরুরি

স্বাস্থ্য ডেস্ক | আপডেট: রবিবার, জানুয়ারী ২১, ২০২৪

সানস্ক্রিন ব্যবহারের আগে যেসব বিষয় জানা জরুরি
সানস্ক্রিন ত্বকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বককে সুরক্ষিত রাখতে সানস্ক্রিন ত্বকে একটি আবরণের মতো কাজ করে। তাই ‘সান-সূর্য’ ও ‘স্ক্রিন-পর্দা’ নামে পরিচিত। সানস্ক্রিন নিয়ে অনেকের মধ্যে অনেক ধরনের প্রশ্ন থাকে। 

সানস্ক্রিন কখন ব্যবহার করতে হবে, কীভাবে ব্যবহার করতে হবে, আগে কি ব্যবহার করতে হবে, পরে কি ব্যবহার করতে হবে, কতক্ষণ পরপর ব্যবহার করতে হবে, ইত্যাদি এ ধরনের বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন জেগে থাকে।

* কী ধরনের সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন

বাজারে বিভিন্ন ধরনের উপায়ে সানস্ক্রিন পাওয়া যায়। যেমন, ক্রিম, জেল, লোশন, স্প্রে ইত্যাদি। সানস্ক্রিন ব্যবহার করার গুরুত্ব অপরিসীম। সূর্যালোকের উপস্থিতিতে আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি হয়। কিন্তু সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ইউভিএ, ইউভিবি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। সানস্ক্রিন বা সানব্লক সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে মানুষের ত্বককে সুরক্ষিত রাখে। আলট্রা ভায়োলেট এ রশ্মি আমাদের ত্বকে এইজিং, পিগমেন্টেশন, কালচে দাগ, বয়সের ছাপ, বলি রেখা ইত্যাদির জন্য দায়ী। আল্ট্রা ভায়োলেট বি রশ্মির জন্য আমাদের ত্বকে বিভিন্ন ধরনের জ্বালাপোড়া হতে পারে। এমনকি ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। ত্বকের ধরন অনুযায়ী সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। স্বাভাবিক, মিশ্র, তৈলাক্ত, শুষ্ক, অতি সংবেদনশীল ত্বক, অর্থাৎ প্রত্যেক ধরনের ত্বকের ক্ষেত্রে ত্বকের ধরন অনুযায়ী সানস্ক্রিন নির্বাচন করা উচিত। এটি কেনার আগে অবশ্যই সঠিক সানস্ক্রিন কিনছেন কিনা এবং তার উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ঠিক আছে কিনা তা দেখে তারপরে ব্যবহার করুন।

* কখন ব্যবহার করবেন

যারা দীর্ঘ সময় ধরে চুলার কাজ করেন কিংবা সূর্যালোকে থাকেন, তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই অন্তত ২০ মিনিট আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করে তারপর চুলা বা সূর্যালোকের কাছে যাওয়া উচিত। দুই ঘণ্টা পরপর আবার সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত।

* কেন ব্যবহার করবেন

মানুষের ত্বকের স্তরে মেলানোসাইট নামে কোষ রয়েছে। সেই কোষ থেকে মূলত মেলানিন তৈরি হয়। অতিবেগুনি রশ্মির ফলে সেই মেলানিনের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং ত্বকে প্রথম দিকে কিছুটা লালচে এবং আস্তে আস্তে কালচে আবরণ তৈরি হয়। যারা সানস্ক্রিন ব্যবহার করেন না, তাদের ত্বকে একটা সান বার্ন হয়ে থাকে।

* ব্যবহারের আগে যা জানা জরুরি

সানস্ক্রিন ব্যবহারের আগে আরেকটি বিষয় খেয়াল করা জরুরি। এসপিএফ মানে সান প্রটেকটিভ ফ্যাক্টর অর্থাৎ ত্বক কতক্ষণের জন্য সূর্যালোকের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে নিরাপদে থাকবে, সেই সময়টা মূলত এসপিএফ দেখে বুঝা যায়। এসপিএফ যত বেশি হবে, সূর্যালোকের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বক ততবেশি সময় সুরক্ষিত রাখবে। আমাদের দেশের জন্য এসপিএফ অন্তত ৩০ থেকে ৫০ ব্যবহার করা উচিত। তবে যারা সরাসরি সূর্যালোক বা চুলার কাছে কাজ করে থাকেন তাদের জন্য এসপিএফ ৫০ সবচেয়ে ভালো। তাই, সানস্ক্রিন কেনার সময় খেয়াল করবেন যে, এসপিএফের পাশে প্লাস চিহ্ন আছে কিনা। প্লাস চিহ্ন যত বেশি হবে সুরক্ষা ততবেশি হবে।

* অন্য কিছু ব্যবহার করা যাবে কিনা

অনেকে জানতে চান, সানস্ক্রিনের পাশাপাশি ময়েশ্চারাইজার বা মেক-আপ প্রসাধনী ব্যবহার করা যাবে কিনা। অবশ্যই ব্যবহার করা যাবে। প্রথমে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। তারপর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। তারপর সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। আজকাল বাজারে এমন কিছু মেক-আপ প্রসাধনী পাওয়া যায় যেগুলোতে সানস্ক্রিন দেওয়া থাকে। সূর্যালোকের তীব্রতা না থাকলেও অর্থাৎ মেঘাচ্ছন্ন দিন হলেও অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।

লেখক :  ডা. নুসরাত জাহান দৃষ্টি , মেডিকেল অফিসার, চর্ম ও যৌন বিভাগ, প্রবীণ হাসপাতাল, ঢাকা।